জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে মৌখিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষ হবে। এছাড়া প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই ক্যম্পাস পরিদর্শন করবেন।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ে ইউজিসি ও সেনা প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা শেষে নিজের সম্মেলন কক্ষে এ কথা জানান বলে উপাচার্য অধ্যাপক ড.

মো. রেজাউল করিম। । 

তিনি বলেন, “আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রথম ফেইজের কাজ চলমান। এ কাজটি কিভাবে নেবেন সেটা তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করবেন। সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে কাজের অগ্রগতি পর্যালচনা করে একটি রোডম্যাপ তৈরি করবেন। কোন কাজ কোন অবস্থায় আছে, তার তথ্য বিবেচনায় নিয়ে অসঙ্গতি চিহ্নিত করে রিভাইজড ডিপি প্রস্তুত করবেন।”

তিনি আর বলেন, “আমাদের বাণী ভবন ও শহীদ হাবিবুর রহমান হলের স্টিল স্ট্রাকচার ভবন নির্মানের কাজের বিষয়েও আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম। তারা এ কাজটি করারও প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছেন। তারা এ সাইটও ভিজিট করবেন। এটাও আমাদের জন্য অনেক বড় একটি সাফল্য।”

শিক্ষার্থীদের শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, “এ বিষয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের পুরো কৃতিত্ব দিতে চাই। পাশাপাশি সরকার যেভাবে আমাদের সমস্যা সমাধানে নজর দিয়ে সহযোগিতা করেছে, সে ব্যাপারেও আমরা কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের শাটডাউন তুলে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এটা তুলে নিলে সবাই উপকৃত হবে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর দ্বারাই হবে।”

মন্ত্রণালয়ের সভার সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে আসার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, “এ রকম বহুমুখী সভার রেজ্যুলিউশন দিতে সময় লাগে। তারা খুবই দ্রুত কাজটা করবে। এ ছাড়া সম্ভাব্য সময় রবিবার সেনা প্রতিনিধিরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাস পরিদর্শনে যেতে পারে।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে। 

আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
 
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
 
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
 
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
 
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
 
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
 
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ