মুম্বাইয়ের অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন ভারতের টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়ক রোহিত শর্মা। গতকাল সকাল থেকে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে রঞ্জি ট্রফির ষষ্ঠ রাউন্ডের প্রস্তুতি শুরু করেছে মুম্বাই। সেখানে নেটে অনুশীলনের পর সেন্টার উইকেটে ম্যাচের আদলে ব্যাটিং করতে দেখা গেছে রোহিতকে। সেন্টার উইকেটে রোহিতের সঙ্গে জুটি বেঁধে ব্যাটিং করেন মুম্বাইয়ের অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানে।

রোহিত শর্মার পর ভারতীয় টেস্ট দলের তরুণ ওপেনার জশস্বী জয়সোয়ালকেও রঞ্জির ক্যাম্পে যোগ দিতে বলা হয়েছে। শুধু রোহিত-জয়সোয়াল নন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আছেন কিন্তু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজের দলে নেই এমন সকল ক্রিকেটারকে রঞ্জির ক্যাম্পে যোগ দিতে বলা হয়েছে।

আগামী ২৩ জানুয়ারি রঞ্জি ট্রফির ষষ্ঠ রাউন্ডে জম্মু ও কাশ্মীরের বিপক্ষে মুম্বাই খেলবে ঘরের মাঠ বান্দ্রা-কুর্লা কমপ্লেক্সে। দুই ঘণ্টার নেট সেশনে অংশ নিলেও ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচে রোহিত খেলবেন কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। মুম্বাইয়ের হেড কোচ ওমকার সালভির তত্ত্বাবধানে আগামী এক সপ্তাহ চলবে এই ক্যাম্প।

এখনও ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করেনি মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। অনুশীলনে সবকিছু ঠিক থাকলে রোহিত ওই ম্যাচ খেলতেও পারেন। জানা গেছে, রঞ্জিতে লিগ পর্বে এক-দুটি ম্যাচ খেলতে পারেন রোহিত। মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ জানিয়েছে, রোহিত ক্যাম্পে এসেছেন মূলত অনুশীলনের জন্য। তবে এখন ম্যাচ খেলার নানা ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে।’

অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে ফেরার পরই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) অনানুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় দলের তারকাদের চোট না থাকলে রঞ্জি খেলার পরামর্শ দিয়েছে। সিডনি টেস্ট শেষেই ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর রোহিত-কোহলিসহ জাতীয় দলের সবাইকে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার তাগাদা দেন।

ভারত অধিনায়ক রঞ্জি ক্যাম্পে যোগ দেওয়ায় সে পরামর্শের গুরুত্ব বোঝা গেছে। সদ্য সমাপ্ত অস্ট্রেলিয়া সফরে তিন টেস্টের পাঁচ ইনিংসে মাত্র ৩১ রান করেন রোহিত। ফর্মে না থাকায় তিনি সিরিজের শেষ টেস্ট থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। এর পর তাঁর অবসরের গুঞ্জনও উঠেছিল। তবে রঞ্জি ক্যাম্পে যোগ দিয়ে ৩৭ বছর বয়সী এ ব্যাটার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এত দ্রুত বিদায় নিচ্ছেন না তিনি।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামে অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জড়িত সবার ফাঁসির দাবিতে অনশন করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ অনশন শুরু করেন তারা। পরে প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। রাত সাড়ে ৮টা এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনশন চলছিল। এর আগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রাসেল আহমেদ বলেন, ‘বিপ্লবের ছয়মাস পূরণ হতে যাচ্ছে। আমরা এখনও এ সরকারের কাছে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আমাদের ভাইদের রক্ত এখনও রাজপথে লেগে আছে। আমি এখানে বসলাম, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেবে না আমরা এখান থেকে উঠব না। আমাদের লড়াই চলছে, চলবে। আমরা আমাদের আমরণ অনশন চালিয়ে যাব। আমরা বিচার চাই। বিচার ছাড়া কোনো কথা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সরকার আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় বসেছে। ইউনূস সরকার কি করে। খুনি বাইরের দেশে বসে আছে। তাদের ধরে এনে ফাঁসির দড়িতে ঝুলাতে হবে। এটাই আমাদের শেষ কথা।’ 

রাসেল আহমেদ বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে যেভাবে ফ্যাসিবাদী কাঠামো গড়ে উঠেছিল, সেটাকে ভেঙে দিয়ে খুনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা রাজপথে নেমে এসেছিলাম। এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে আমরা ন্যূনতম সংস্কার ও বিচার পাইনি। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আমাদের দুই হাজারের অধিক ভাই জীবন দিয়েছে। তারা রাজপথে সাহসিকতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।’

রাসেল আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এখনও আমাদের খুনি হাসিনা, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের বিচারের দাবিতে রাজপথে নামতে হয়। আমাদের এ মুক্ত বাতাসে এখনও লাশের গন্ধ ভেসে বেড়ায়। বারবার আমাদের তাদের বিচারের দাবিতে আওয়াজ তুলতে হচ্ছে। এ অন্তর্বর্তী সরকারকে সেসব খুনিদের বিচার করার জন্যই ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। আজও ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুণ্ডাবাহিনী বীর চট্টলার বুকে মিছিল করেছে। খুনি হাসিনাসহ আমাদের ভাইদের যারা খুন করেছে, তাদের বিচার ও ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে এখন থেকেই আমরণ অনশন পালন করব।’ 

আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাকিলা সোলতানা বলেন, ‘এখনো তারা সড়কে আছেন। তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।’ 

অনশনকারীদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- দ্রুত বিচার আইনে বিভাগীয় ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ও উস্কানিদাতাদের গ্রেপ্তার-বিচার করা, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে বিচার করা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করা, সব হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, অপরাধ ও নির্যাতনের বিচার করা, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, আওয়ামী লীগ নেতাদের অবৈধভাবে অর্জিত সব অর্থ ও সম্পদ রাষ্ট্রীয়ভাবে বাজেয়াপ্ত করা, বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জীবনের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে হবে ও নতুন সংবিধান প্রণয়ন করাসহ রাষ্ট্রের যাবতীয় গণতান্ত্রিক সংস্কারের রূপরেখা প্রদান করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক সপ্তাহেও তদন্তে নেই কোনো অগ্রগতি
  • এই চিঠি পোস্ট করা হয়নি
  • গাজা: যুদ্ধবিরতি এলো মানুষগুলো ফিরল না
  • শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামে অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা
  • পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেইনি: নাহিদ ইসলাম
  • কেরানীগঞ্জে বন্ধ হয়নি চাঁদাবাজি, শুধু হাত বদলেছে: সারজিস আলম