ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের গাছ বিক্রির টাকা আত্মসাতের মামলায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে আজ রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালত এ রায় ঘোষণা করবেন। 

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী বেলাল হোসেন এ তথ্য জানান।

এর আগে গত ১১ নভেম্বর দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ ২৮ নভেম্বর ধার্য করেন। তবে রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে ১৫ জানুয়ারি রাখা হয়। 

মামলার অপর আসামিরা হলেন- পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.

) হারুনুর রশিদ, প্রধান কার্যালয়ের চেয়ারম্যান মো. হোসেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ গোফরানুল হক, মো. সাইদ-উর রহমান, মেজবাহ উদ্দিন স্বপন, ইঞ্জিনিয়ার শেখ তৈয়েবুর রহমান ও গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস, পরিচালক সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আহমেদ সানী, মিসেস ফারহা দিবা ও জামসেদ আরা চৌধুরী, প্রফিট শেয়ারিং ডিস্ট্রিবিউটর মো. জসিম উদ্দীন ভূঁইয়া, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন ও সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ, ডায়মন্ড এক্সিকিউটিভ এস এম আহসানুল কবির বিপ্লব, জোবায়ের সোহেল ও আব্দুল মান্নান এবং ক্রাউন এক্সিকিউটিভ মোসাদ্দেক আলী খান। 

আসামিদের মধ্যে কারাগারে আছেন- ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল আমীন, ফারহা দিবা ও মোহাম্মদ হোসেন। জামিনে আছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুনুর রশিদ। ১৫ আসামি পলাতক রয়েছে। 

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাজধানীর কলাবাগান থানায় ২০১২ সালের ৩১ জুলাই মামলা দুটি করে। ২০১৪ সালের ৪ মে একটি মামলায় ১৯ জনের এবং অপর মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। 

২০২২ সালের ১২ মে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এবং বেআইনিভাবে অর্থ পাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনকে ১২ বছরের কারাদণ্ড হয়। এছাড়া সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল (অব.) হারুন অর রশীদসহ ৪৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

এদিকে আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের শীর্ষ কর্মকর্তারা গাছ বিক্রির নামে ২ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এর মধ্যে ঋণপত্র (এলসি) হিসাবে ৫৬ কোটি ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৪০ টাকা এবং সরাসরি পাচার করেছে আরো ২ লাখ ৬ হাজার মার্কিন ডলার।

ঢাকা/মামুন/ইমন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সাগরতলে তৈরি হচ্ছে গবেষণাগার

চীনের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের একটি বড় ক্ষেত্র দক্ষিণ চীন সাগর। এখানে চীন অন্য কারও উপস্থিতি সহ্য করতে পারে না। জলরাশিতে দাপিয়ে বেড়ায় দেশটির বিশেষ কমান্ডো বাহিনী। যতই দিন যাচ্ছে, এই সাগরকে কেন্দ্র করে ভূরাজনীতি ততই জটিল হচ্ছে। সামরিক শক্তিও বাড়াচ্ছে চীন। এবার দেশটি সমুদ্রতলে নির্মাণ করতে যাচ্ছে ‘ডিপ সি স্পেস স্টেশন’ অর্থাৎ, বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬ হাজার ৬৫০ ফুট নিচে হবে এর অবস্থান।

ওশানোগ্রাফিক ম্যাগাজিন বলছে, এই স্পেস স্টেশনের মাধ্যমে চীন সামুদ্রিক অনুসন্ধানকে ব্যাপক সম্ভাবনাময় করে তুলতে চায়। স্টেশনটি একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার অংশ, যার প্রাথমিক নকশা সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি নির্মাণ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ছয়জন বিজ্ঞানী একসঙ্গে মাসব্যাপী অবস্থান করতে পারবেন স্টেশনটিতে। 

চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের সাউথ চায়না সি ইনস্টিটিউট অব ওশেনোলজির গবেষকরা জানাচ্ছেন, গবেষণার প্রাথমিক লক্ষ্য হবে ঠান্ডা জলস্রোত কীভাবে বাস্তুতন্ত্রে ভূমিকা রাখছে, তা পর্যবেক্ষণ করা। বিশেষ করে প্রচণ্ড ঠান্ডায় জমে থাকা বরফ প্রাকৃতিক গ্যাসের (মিথেন হাইড্রেট) বড় উৎস, যা থেকে বিপুল জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব। 

স্টেশনটিতে জীবনযাপনের সব উপকরণ থাকবে, যা বিজ্ঞানীদের মিশন পরিচালনায় সহায়ক হবে। এখানে বসে বিজ্ঞানীরা সমুদ্রের পরিবেশগত পরিবর্তন ও পৃথিবীর গঠন-সংক্রান্ত কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করবেন। স্টেশনটির মাধ্যমে একটি চতুর্মাত্রিক গবেষণা নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। 

দক্ষিণ চীন সাগর ঘিরে ‘ভূরাজনৈতিক বিরোধ’ মোকাবিলা করা এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য। বিশেষ করে তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া ও ব্রুনাই এই সাগরে চীনের একক আধিপত্য অস্বীকার করে আসছে। এসব দেশ ও অঞ্চল দক্ষিণ চীন সাগরের কোনো না কোনো অংশে নিজেদের মালিকানা দাবি করে থাকে। মজার ব্যাপার হলো, চীন সম্প্রতি প্রকল্প-সংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে তাইওয়ানের আশপাশে ৬২টি চীনা সামরিক বিমান শনাক্ত হয়েছে। 

চীনা একাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক ইয়িন জিয়ানপিং বলছেন, সাগরটির অতি শীতল অঞ্চলের বরফে ৭০ বিলিয়ন টন মিথেন হাইড্রেড মজুত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যার পরিমাণ বর্তমানে চীনের মজুত জ্বালানির অর্ধেক। গবেষণা কেন্দ্রটি সাগরে চীনের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।  

দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র একই ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়। দেশটির ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অধীনে সমুদ্রের নিচে গবেষণা স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। যেখানে বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক, গবেষক, সাধারণ নাগরিক, আন্তর্জাতিক পর্যটক ও ব্যবসায়ীরা অবাধে যাতায়াত করতে পারবেন। চীনও চাচ্ছে সামুদ্রিক প্রাণ-প্রতিবেশ নিয়ে গবেষণা এগিয়ে নিতে। এ জন্যই সমুদ্রতলের গবেষণাগার তাদের চাই।  

চীনের এই প্রকল্পটি সমুদ্র গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সামুদ্রিক স্পেস স্টেশনটি ঘিরে একটি ‘স্মার্ট টেক প্ল্যাটফর্ম’ গড়ে তোলার পরিকল্পনাও রয়েছে। এর মাধ্যমে সামুদ্রিক প্রতিবেশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত প্রকল্পগুলো যৌথভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। এগুলোর লক্ষ্য থাকবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি কমানো, সমুদ্রের সঙ্গে মানুষের মিথস্ক্রিয়া বাড়ানো এবং টেকসই সামুদ্রিক ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোরদার করা।    

সম্পর্কিত নিবন্ধ