বহুল আলোচিত চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় করা অস্ত্র আইনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ পাঁচজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ পাঁচজনের সাজা কমানো হয়েছে।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ রায় দেন। রায়ে বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া পরেশ বড়ুয়াকে ১৪ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ফলে বাবরের কারামুক্তিতে আইনগত আর কোনো বাধা থাকছে না।
রায়ে লুৎফুজ্জামান বাবর ছাড়া খালাস পাওয়া অপর চারজন হলেন– রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার, তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.
আদালতে লুৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির। তিনি জানান, হাইকোর্ট থেকে সংক্ষিপ্ত রায় প্রকাশ করা হবে। এটি প্রকাশ হলে দ্রুততম সময়ে বাবর জেল থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি কেরানীগঞ্জ কারাগারে আছেন।
হাইকোর্টের রায়ে পরেশ বড়ুয়াসহ পাঁচজনের সাজা কমানো হয়েছে। বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন পাওয়া পরেশ বড়ুয়ার সাজা ১৪ বছর করা হয়েছে। আর অপর চার আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। তারা হলেন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার তৎকালীন মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, এনএসআইর সাবেক উপপরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, তৎকালীন পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ ও হাফিজুর রহমান।
এ ছাড়া মারা যাওয়ার কারণে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে করা চারজনের আপিল বাদ দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী, এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রহিম, শ্রমিক সরবরাহকারী দ্বীন মোহাম্মদ ও ট্রলার মালিক হাজি সোবহান।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাট থেকে ১০ ট্রাকভর্তি অস্ত্রের চালান আটক করা হয়। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা করে পুলিশ। দুটি মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় মতিউর রহমান নিজামী (অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর), লুৎফুজ্জামান বাবর, পরেশ বড়ুয়া, দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় একই আসামিদের।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রায়সহ মামলার নথি হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছায়, যা হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে রাষ্ট্রপক্ষে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন। অস্ত্র আইনের মামলায় উভয় পক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল রায় দেন হাইকোর্ট।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: তৎক ল ন
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে দায়িত্ব পালনকালে বিসিবির নিরাপত্তা কর্মকর্তার মৃত্যু
বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা চলছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। মাঠে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ ইকরাম চৌধুরী। প্রতিদিনের মধ্যে আজও নিজের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করছিলেন ইকরাম। কিন্তু দায়িত্ব পালনকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি।
পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় খারাপ অনুভব করেন ইকরাম। দ্রুত তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সিসিইউ ও আইসিইউতে রাখা হয়। রাখা হয় লাইফ সাপোর্টেও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে আর বাঁচানো যায়নি।
২০১৪ সাল থেকে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিরাপত্তার দায়িত্বে পালন করছিলেন ইকরাম। বিভিন্ন সিরিজ, আইসিসি, এশিয়ার ইভেন্ট, বিপিএলে নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাৎক্ষণিকভাবে শোক প্রকাশ করেছে 'সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা সমন্বয়ক ইকরাম চৌধুরী ইকরামের মৃত্যুতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) গভীর শোকাহত। সিলেটের একজন সুপরিচিত ক্রীড়া সংগঠক ইকরাম চৌধুরী ২০১৪ সাল থেকে বিসিবি'র নিরাপত্তা কমিটির সাথে কাজ করছিলেন। আজ দায়িত্ব পালনকালে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং আল হারামাইন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স ৫০ বছর ছিল। বিসিবি ইকরাম চৌধুরীর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহানুভূতি জানাচ্ছে।'
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে দুদকের অভিযান
আগস্টে বাংলাদেশে আসছে ভারত ক্রিকেট দল
সিলেট/ইয়াসিন/নাভিদ