মাটির নিচ থেকে ভেসে আসছিল নবজাতকের কান্না
Published: 15th, January 2025 GMT
বাড়ির পাশে মাঠে খেলা করছিল শিশুরা। হঠাৎ মাটির নিচ থেকে ভেসে আসা এক নবজাতকের কান্নার শব্দ শুনতে পায় তারা। কিছুটা ভয় পায় শিশুরা। কান্নার শব্দ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকলে শিশুরা আশপাশের লোকজনকে ডেকে আনে। পরে তারা মাটির নিচে উবু করে চাপা দেওয়া অবস্থায় এক নবজাতককে দেখতে পায়। দ্রুত মাটি সরিয়ে নবজাতককে উদ্ধার করে স্থানীয়রা।
গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের শিরিরচালা এলাকার সামিট ক্যাডেট একাডেমির পেছনের মাঠের পাশে গত সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। মাটি চাপা দেওয়া অবস্থা থেকে শিশুটিকে জীবন্ত উদ্ধার করেন স্বপ্না বেগম নামে এক নারী। তবে নবজাতকটির বাবা-মায়ের সন্ধান মেলেনি। শেষ পর্যন্ত বাঁচানোও যায়নি শিশুটিকে।
স্বপ্না বেগমের ভাষ্য– তাঁর বাড়ির কাছে মাঠে ছোট শিশুরা খেলছিল। হঠাৎ তারা মাটির নিচ থেকে কান্নার শব্দ শুনতে পায়। তখন তারা সেখানে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় নবজাতককে মাটির নিচে উবু হয়ে পড়ে থাকতে দেখে। তখনও সে কান্না করছিল। তার নাড়িও কাটা হয়নি। দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধার করে তিনি বাড়িতে নিয়ে পরিষ্কার করেন, বুকের দুধ পান করান। পরে একটি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে জয়দেবপুর থানার ওসি আব্দুল হালিম বলেন, ওই নারী শিশুটিকে উদ্ধারের পর সেবা দিয়ে খানিকটা সুস্থ করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে তারা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান।
গাজীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোবারক হোসেন বলেন, তারা নবজাতককে গ্রহণ করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি। সোমবার রাতেই সে মারা যায়। লাশ মর্গে রয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি ছাড়া সব পদেই আ.লীগের জয়জয়কার
মাদারীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে আওয়ামীপন্থিরা ১৪টিতে জয় পেয়েছেন। সভাপতি পদ ছাড়া অন্য সব পদে তারা জয়ী হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর অনুসারী এমদাদুল হক খান। তিনি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়াকে ৭৭ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন।
এদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে ১৫৬ ভোটে পরাজিত করে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন সদর উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক মাহাবুব হোসেন (শাকিল)। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ১৩০ ভোট ও জালালুর রহমান পেয়েছেন ১৩০ ভোট। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিম মিয়া পেয়েছেন ২৯ ভোট (নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বী দুজন প্রার্থীর ভোট সমান হওয়ায় পুনরায় গণনা অথবা লটারি করে বিজয়ী প্রার্থী নির্বাচন করা হবে)। সহ-সভাপতি পদে মাহবুব হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ পদে শাকিলা পারভীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-২ পদে মশিউর রহমান পারভেজ, কোষাধ্যক্ষ পদে সুজন ভৌমিক, সম্পাদক (লাইব্রেরি) পদে মুনীর হাসান, সম্পাদক (মহরার) পদে এ কে এম আজিজুল হক মুকুল নির্বাচিত হয়েছেন।
কার্যনির্বাহী ৫টি পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিজয়ী ৫ জন হলেন সৈয়দা তাহমিনা খানম, এনামুল হক, আবদুস সালাম, ইকবাল হোসেন ও আবু সুফিয়ান। এ ছাড়া সম্পাদক (অ্যাপায়ন ও বিনোদন) পদে বদরুন নাহার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক গোলাম মাওলা আকন্দ মুঠোফোনে জানিয়েছেন, মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে সভাপতি ছাড়া ১৪টি পদেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী কিংবা সমর্থক বিজয়ী হয়েছেন। তবে এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে সরাসরি আওয়ামী লীগের পদে থাকা কোনো নেতা অংশগ্রহণ করেননি। আওয়ামী লীগের কোনো আইনজীবী নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তিনিও অন্য সবার মতন বিজয়ী হতেন বলে আমি মনে করি। যারা নির্বাচিত হয়েছেন সবাইকে অভিনন্দন।
তবে এমদাদুল হক খান সভাপতি পদে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের সমর্থন নিয়েই বিজয়ী হয়েছেন বলে দাবি করেছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ। তিনি বলেন, সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের কেউ প্রার্থী না হওয়ায় তাদের সমর্থক আইনজীবীরা নির্বাচনে মূলত এমদাদুল হক খানকেই ভোট দিয়েছেন। সেকারণেই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়া পরাজিত হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মোখলেছুর রহমান বলেন, এমদাদুল হক খানকে নির্বাচিত করায় সব আইনজীবীদের ধন্যবাদ। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তার বিজয়ে আমরা আনন্দিত।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য মাদারীপুর আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট ফরহাদ হোসেন জানান, সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুজন সমান ভোট পাওয়ায় তাদের ছয়মাস করে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।