Samakal:
2025-04-22@23:41:19 GMT

বন আদালতে পাখি হত্যার মামলা

Published: 14th, January 2025 GMT

বন আদালতে পাখি হত্যার মামলা

অনলাইনে পরিযায়ী পাখির মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যে ফেসবুকে লাইভ করা সেই দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মৌলভীবাজারের সদর বন কর্মকর্তা মো. গোলাম সারোয়ার বাদী হয়ে সোমবার সুনামগঞ্জ বন আদালতে এ মামলা করেন। 
সুনামগঞ্জ বন আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নির্জন কুমার মিত্র মামলাটি গ্রহণ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের নাজির এনামুল হক জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ 
বন আদালতে এটিই প্রথম অতিথি পাখি হত্যা মামলা। আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছেন। আগামীকাল (বুধবার) এ মামলার বিষয়ে আদালত নির্দেশনা দেবেন। 
মামলার বাদী গোলাম সারোয়ার বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনের ২০১২-এর ৩৮ (২) ধারায় তিনি এ মামলা করেছেন। একজনের নাম উল্লেখ করে মামলা হলেও অন্যান্য পাখি শিকারি ও বিক্রয়কারীর তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন তারা। উপযুক্ত প্রমাণ পেলে অন্যদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
বাদী আদালতকে জানিয়েছেন, অবৈধভাবে অতিথি পাখি শিকার করে নিজের দখলে রেখেছেন তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে দেলোয়ার হোসেন। পরে অনলাইনে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ‘হাওরপাড়ের মানুষ’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট দেওয়া হয়েছে। এই ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও এ ঘটনা দেখে সরেজমিন যায় বন বিভাগের একটি দল। এলাকায় গিয়ে অপরাধীকে ধরার চেষ্টা করলে সে পালিয়ে যায়।
এদিকে সোমবার বিকেলে তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরপারের লামাগাঁও এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে ‘বন বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ’বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন ও বিভাগীয় বন অফিসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.

আবুল হাসেম, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
গত ৩০ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালে ‘অনলাইনে পরিযায়ী পাখির মাংসের রমরমা ব্যবসা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওইদিন সকালেই বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের একটি দল মৌলভীবাজারের অফিস থেকে হাওরে অভিযান পরিচালনার উদ্দেশে রওনা দেয়। দুপুরে দেখার হাওরপারের সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের শান্তিগঞ্জ এলাকা থেকে এক পাখি শিকারিকে আটক করে তারা। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওই পাখি শিকারিকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। অভিযানকালে তাহিরপুর বাজারে বিক্রির জন্য রাখা দুটি টিয়া, দুটি শালিক ও একটি ময়না পাখি উদ্ধার করে তারা। এ সময় অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে পাখি শিকারিরা পালিয়ে যায়। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় ছয় লাখ শিশু স্থায়ী পঙ্গুত্বের ঝুঁকিতে

চারদিক ঘিরে মারণাস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত ইসরায়েলের সেনারা। তাদের রাইফেল, ট্যাঙ্ক ও মর্টার তাক করা গাজার বাসিন্দাদের দিকে। উপত্যকার ২০ থেকে ২২ লাখ বাসিন্দার বের হওয়ার নেই পথ। ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির মতো অতি প্রয়োজনীয় পণ্য। এর মধ্যেই থেকে থেকে চলছে বিমান হামলা। গাজার বাসিন্দারা মারা যাচ্ছেন। আর যারা আহত হচ্ছেন, হাসপাতালে কোনো চিকিৎসা ছাড়াই তাদের প্রাণ যাচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে শুরু করে হাসপাতাল, ধর্মালয়– কিছুই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না। 

গাজায় ইসরায়েলের অন্তহীন এ নৃশংসতায় সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে শিশুরা। অনাহারে তারা হাড্ডিসার। একসময় যে শিশুটি স্কুলে যেত, যার সুন্দর পরিবার ছিল, মা-বাবা, ভাইবোন ছিলেন; সেই শিশুটি এখন খাবারের খোঁজে রাস্তায় ফিরছে। পায়ে জুতা নেই। অনাদরে উশকোখুশকো চুল। ছেঁড়া জামা। ক্ষুধার তাড়নায় তার শোক প্রকাশের ভাষা নেই। 

অবরুদ্ধ গাজায় বাড়ছে রোগের প্রকোপ। ‍ওষুধ নেই। হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলের বোমা। গাজা সিটি থেকে আলজাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানান, আহতরা চিকিৎসার অভাবে হাসপাতালে ধুঁকে ধুঁকে মরছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সেখানে অন্তত ৬ লাখ শিশু পঙ্গুত্বের ঝুঁকিতে। ওষুধের সরবরাহ বন্ধের কারণে পোলিও টিকা প্রবেশ করতে পারছে না, যা উপত্যকার অর্ধেক শিশুকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, পুষ্টি ও বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে গাজার শিশুরা নজিরবিহীন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।

গত ২ মার্চ গাজায় ত্রাণের ট্রাক প্রবেশ আটকে দেয় ইসরায়েল। এরপর থেকে ক্রমেই পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে অব্যাহত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গতকাল মঙ্গলবার এক দিনে আরও ২৬ জন নিহত ও ৬০ জন আহত হন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫১ হাজার ২৬৬ জনে পৌঁছেছে। আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৯১। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮৯০ জন নিহত ও ৪ হাজার ৯৫০ জন আহত হয়েছেন। 

হামলার পাশাপাশি এখন উপত্যকার বাসিন্দাদের ধরে নিচ্ছে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের প্রিজনার্স সোসাইটি জানায়, গাজা থেকে আটক ৬০ ফিলিস্তিনির নাম প্রকাশ করেছে তারা। 

সন্তান জন্মকালে স্ত্রীর পাশে থাকতে পারলেন না খলিল

যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনের সমর্থনে আন্দোলন করে গ্রেপ্তার হওয়া মাহমুদ খলিল সদ্য বাবা হলেও সন্তানের মুখ এখনও দেখতে পারেননি। সন্তান জন্মদানের সময় তাঁকে জামিন দিতে অস্বীকৃতি জানায় মার্কিন কর্তৃপক্ষ। ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন করায় আদালতের রায়ে মাহমুদ খলিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়নের প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন। এ অবস্থায় আটক কয়েক ফিলিস্তিন সমর্থক শিক্ষার্থী মার্কিন সিনেটরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। 

যুদ্ধ বন্ধে নতুন প্রস্তাব মিসর ও কাতারের

গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার সঙ্গে যুক্ত এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে মঙ্গলবার বিবিসি জানায়, যুদ্ধ বন্ধ করতে নতুন প্রস্তাব পেশ করেছে কাতার এবং মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা। নতুন এ প্রস্তাবে পাঁচ থেকে সাত বছরের স্থায়ী যুদ্ধবিরতির উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া সেখানে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে সব ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তি, যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ও গাজা থেকে সম্পূর্ণরূপে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি ইসরায়েলের দেওয়া সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হামাস খারিজ করে দেওয়ার পর নতুন করে প্রস্তাব পেশ করল মিসর ও কাতার। এ প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা করতে হামাসের একজন ঊর্ধ্বতন নেতা কায়রোতে যাবেন বলে জানা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত নতুন প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইসরায়েল। 


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ