অনলাইনে পরিযায়ী পাখির মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যে ফেসবুকে লাইভ করা সেই দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মৌলভীবাজারের সদর বন কর্মকর্তা মো. গোলাম সারোয়ার বাদী হয়ে সোমবার সুনামগঞ্জ বন আদালতে এ মামলা করেন।
সুনামগঞ্জ বন আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নির্জন কুমার মিত্র মামলাটি গ্রহণ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের নাজির এনামুল হক জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ
বন আদালতে এটিই প্রথম অতিথি পাখি হত্যা মামলা। আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছেন। আগামীকাল (বুধবার) এ মামলার বিষয়ে আদালত নির্দেশনা দেবেন।
মামলার বাদী গোলাম সারোয়ার বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনের ২০১২-এর ৩৮ (২) ধারায় তিনি এ মামলা করেছেন। একজনের নাম উল্লেখ করে মামলা হলেও অন্যান্য পাখি শিকারি ও বিক্রয়কারীর তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন তারা। উপযুক্ত প্রমাণ পেলে অন্যদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাদী আদালতকে জানিয়েছেন, অবৈধভাবে অতিথি পাখি শিকার করে নিজের দখলে রেখেছেন তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে দেলোয়ার হোসেন। পরে অনলাইনে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ‘হাওরপাড়ের মানুষ’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট দেওয়া হয়েছে। এই ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও এ ঘটনা দেখে সরেজমিন যায় বন বিভাগের একটি দল। এলাকায় গিয়ে অপরাধীকে ধরার চেষ্টা করলে সে পালিয়ে যায়।
এদিকে সোমবার বিকেলে তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরপারের লামাগাঁও এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে ‘বন বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ’বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন ও বিভাগীয় বন অফিসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.
গত ৩০ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালে ‘অনলাইনে পরিযায়ী পাখির মাংসের রমরমা ব্যবসা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওইদিন সকালেই বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের একটি দল মৌলভীবাজারের অফিস থেকে হাওরে অভিযান পরিচালনার উদ্দেশে রওনা দেয়। দুপুরে দেখার হাওরপারের সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের শান্তিগঞ্জ এলাকা থেকে এক পাখি শিকারিকে আটক করে তারা। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওই পাখি শিকারিকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। অভিযানকালে তাহিরপুর বাজারে বিক্রির জন্য রাখা দুটি টিয়া, দুটি শালিক ও একটি ময়না পাখি উদ্ধার করে তারা। এ সময় অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে পাখি শিকারিরা পালিয়ে যায়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দেড় ঘণ্টায় শেষ সুলভ মূল্যের ডিম-দুধ, পাননি অনেকেই
নির্ধারিত এলাকায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের গাড়ি পৌঁছায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। এরপর শুরু হয় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও গরুর মাংস বিক্রি। দুপুর ১২টার কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল গাড়িতে ডিম ও দুধ নেই। কেবল ১৬ কেজি গরুর মাংস অবশিষ্ট রয়েছে। অর্থাৎ মাত্র দেড় ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে সুলভ মূল্যে বিক্রির জন্য আনা দুধ ও ডিম।
আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী ওয়্যারলেস এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র। এদিন নগরের ওয়্যারলেস ও টেক্সটাইল এলাকায় এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। এই কর্মসূচির আওতায় পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও ডিম প্রতি ডজন ১১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ প্রতিটি গাড়িতে ২০০ লিটার দুধ, ১ হাজার ৫০০ পিস ডিম ও ৭৫ কেজি করে মাংস ছিল। সে হিসেবে মাত্র দেড় ঘণ্টায় ২০০ লিটার দুধ ও ১২৫ ডজন ডিম বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। তবে দুপুর ১২টার দিকে তেমন ভিড় দেখা যায়নি সেখানে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, তাঁরা অনেকে আগে এসেও পণ্য পাননি।
এদিন অন্তত ১০ ক্রেতা দুধ-ডিম না পেয়ে ফেরত গেছেন। ডিম কিনতে আসা ক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি দুপুর ১২টার দিকে এসে ডিম পাই নাই। বাসা থেকে আসতে আসতেই দেখি সব শেষ। তাঁরা নাকি দেড় হাজার ডিম আনছে। তাহলে আমরা পাই নাই কেন?’
গাড়ি থেকে এসব পণ্য কেনার জন্য প্রথমে টাকা দিয়ে স্লিপ নিতে হয়। কর্মকর্তারা জানান, একজন সর্বোচ্চ এক ডজন ডিম, এক বা দুই লিটার দুধ ও এক কেজি মাংস কিনতে পারেন। কেউ চাইলে শুধু ডিম, দুধ অথবা মাংস কিনতে পারবেন। তবে মাংসের চাহিদা তুলনামূলক কম।
দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকায় ফ্রিজার ট্রাক রয়েছে। ফলে তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য পণ্য নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু চট্টগ্রামে সে সুযোগ নেই। তাই পরিমাণ কম। আবার দ্রুত ক্রেতাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে দায়িত্বে থাকা বোয়ালখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুমন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সবাইকে পণ্য দেওয়া হয়েছে। মাংসের চাহিদা কম থাকায় কিছু মাংস থেকে গেছে। ডিমের চাহিদা বেশি ছিল। দেড় থেকে দুই ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে।