কুড়িগ্রামের উলিপুরে হাতিয়া ভবেশ মণ্ডলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের মাটি কেটে নতুন ভবনের ভিটি ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে। এতে মাঠে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। শিক্ষা অফিস থেকে মাঠের মাটি কাটা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হলেও কাজ হয়নি। 
জানা গেছে, এক কোটি চার লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের পাঁচ কক্ষের দ্বিতল ভবন নির্মাণের জন্য ২০২০ সালে দরপত্র আহ্বান করে স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি)। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পায় মেসার্স সিয়াম ট্রেডার্স। যথাসময়ে কার্যাদেশ দেওয়া হলেও ঠিকাদার কাজ শুরু করে ২০২৩ সালে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। 
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক ঠিকাদারের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে মাঠের মাটি কাটতে অনুমতি দিয়েছেন। বাধা দিলেও কর্ণপাত কো হয়নি। এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন মণ্ডল। তাঁর দাবি, টাকার বিনিময়ে নয়, বিদ্যালয়ের স্বার্থে মাঠের মাটি কাটতে দেওয়া হয়েছে। 
শিক্ষার্থী লিটন মিয়া ও আসমা বেগম জানায়, মাঠের মাটি কেটে গর্ত করায় খেলাধুলা বন্ধ। এ ছাড়া বিদ্যালয়টি বন্যাপ্রবণ এলাকায় হওয়ায় বন্যার সময় পানিতে ডুবে যায়। ওই সময় গর্তের পানিতে পড়ে মৃত্যুর ঝুঁকির আশঙ্কা প্রকাশ করছে তারা।
মেসার্স সিয়াম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মন্‌জুরুল ইসলাম মন্‌জু বলেন, ভবনের ভিটি ভরাটের জন্য কোথাও মাটি পাইনি। তাই প্রধান শিক্ষককে বলে বিদ্যালয় মাঠের মাটি কেটে ভবন ও সিঁড়ি করা হয়েছে। কাজ শেষে গর্ত ভরাট করে দেওয়া হবে। 
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নার্গিস ফাতিমা বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরে ওই ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  
উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গৃহকর নিয়ে প্রশাসকের সঙ্গে বাসিন্দাদের হট্টগোল

গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) ধার্যের বিষয়টি নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সঙ্গে হট্টগোল করেছেন অঞ্চল-৭-এর আওতাধীন বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরে উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত গণশুনানির শেষের দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গণশুনানি শেষ করে ওই অঞ্চলের চারটি ওয়ার্ডের প্রতিনিধিদের নিয়ে অঞ্চল-৭-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে আলোচনায় বসেন প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। সেখানে গৃহকর কীভাবে আদায় হবে, কী ছাড় পাওয়া যাবে—এসব বিষয়ে বাসিন্দাদের বুঝিয়ে বলা হয়। হট্টগোলকারীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য প্রশাসকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।

গণশুনানিতে দেখা যায়, নাগরিক সেবা নিয়ে চারটি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বিভিন্ন সংকট, সমস্যা ও অভিযোগ জানান। তাঁদের দাবি, তাঁরা ২০১৮ সাল থেকে নয়, ২০২৪ সাল থেকে গৃহকর পরিশোধ করবেন। প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে বাসিন্দাদের বলা অভিযোগগুলোর সমাধান, পদক্ষেপ ও করপোরেশনের উদ্যোগ নিয়ে কথা বলেন। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তিনি হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় নিয়ে বাসিন্দাদের দাবিদাওয়ার বিষয়ে কথা বলছিলেন।

প্রশাসকের বক্তব্য ছিল, আইন অনুযায়ী ২০১৮ সাল থেকেই গৃহকর পরিশোধ করতে হবে। তবে গৃহকরের সঙ্গে পরিচ্ছন্নতা ও সড়ক বাতি বাবদ যে কর আদায় করা হয়, সেই ৫ শতাংশ কর আপাতত আদায় বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া বিধিমালা অনুযায়ী গৃহকরে একজন গ্রাহক যেসব ছাড় পান, সেসব ছাড়ের ব্যবস্থাও করা হবে বলেও জানান। সেই হিসেবে ২০২৪-২৫ অর্থবছর থেকে যে টাকা কর আসবে, ২০১৮ থেকে একই পরিমাণ কর দিতে হবে।

কিন্তু প্রশাসকের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হননি শুনানিতে অংশ নেওয়া বাসিন্দারা। তাঁরা চিৎকার-চেঁচামেচি করে এর প্রতিবাদ করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে সামনের সারিতে বসা কিছু ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে মঞ্চে থাকা প্রশাসকের সামনে গিয়ে বলতে থাকেন, তাঁরা এই সিদ্ধান্ত মানেন না। তাঁরা ২০২৪ সাল থেকেই কর দেবেন।

মিনিট পাঁচেক এমন হট্টগোল আর চেঁচামেচি চলে। ঢাকা উত্তর সিটির ওই অঞ্চলের কর্মকর্তা ও স্থানীয় বিএনপির নেতারা উত্তেজিত হওয়া ব্যক্তিদের শান্ত করেন।

ঢাকা উত্তর সিটির ওই অঞ্চলের কর্মকর্তা ও স্থানীয় বিএনপির নেতারা উত্তেজিত ব্যক্তিদের শান্ত করার চেষ্টা করেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ