গড়াই নদীর ওপর নির্মিত কুষ্টিয়ার কুমারখালী শহর-যদুবয়রা সড়কের ৬৫০ মিটার পিসি গার্ডার সেতুতে ২৭টি নতুন বৈদ্যুতিক বাতি বসিয়েছে জেলা এলজিইডি। বাকি রয়েছে আরও ৯টি বাতি। তবে নতুন বসানো সাদা রঙের বাতি থেকে পর্যাপ্ত আলো পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আলো থাকলেও সবকিছু স্পষ্ট দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন তারা। আলোকস্বল্পতার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্বীকারও করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, আগে সেতুতে সোনালি রঙের বাতি জ্বলত। সেগুলোয় ভালো আলো পাওয়া যেত। সেতুটিও তখন দৃষ্টিনন্দন ছিল। এখন সাদা বাতি জ্বললেও আলো কম। সে জন্য সবকিছু ঠিকমতো দেখা যায় না। কিছু অংশ থাকে অন্ধকারাচ্ছন্ন। ফলে সন্ধ্যার পর চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ছোটখাটো দুর্ঘটনা ও পথচারীদের ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
গত ২৭ ডিসেম্বর সমকালে ‘বাতি জ্বলে না ৯০ কোটি টাকার সেতুতে’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাতি বসানোর উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। এর পরও সেতুতে আলোস্বল্পতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে বলে জানান কুমারখালী জাতীয় নাগরিক কমিটির ২ নম্বর সদস্য কে এম আর শাহিন। তিনি বলেন, অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে সরকারের অর্থ ব্যয় ও জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে। যথাস্থানে যথা কাজ বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।
গত সোমবার রাতে সরেজমিন দেখা যায়, সেতুতে ২৭টি সাদা আলোর বাতি জ্বলছে। ৯টি বাতিতে আলো নেই। আলো-আঁধারের মধ্যে চলাচল করছে যানবাহন ও মানুষ। অনেকে
দোকান বসিয়েছেন। আবার কেউ এসেছেন বিনোদনের জন্য। সেতু এলাকার চটপটি
বিক্রেতা ফজল শেখের ভাষ্য, অনেক দিন পর সেতুতে বাতি জ্বলছে। তবে আগের মতো আলো নেই, সৌন্দর্যও নেই।
পান্টি এলাকার ভ্যানচালক সিরাজ আলী বলেন, দূর থেকে বোঝা যাচ্ছে সেতুতে খুঁটির মাথায় সাদা আলো। তবে নিচে সবকিছু স্পষ্ট নয়, পর্যাপ্ত আলো নেই। বেশি পাওয়ারের বাতি লাগানোর দাবি জানান তিনি।
জেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে জানা গেছে, গড়াই নদীর ওপর প্রায় ৮৯ কোটি ৯১ লাখ ব্যয়ে ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের পিসি গার্ডার সেতুটি নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিল নেশনটেক ও রানা বিল্ডার্স লিমিটেড। ২০২৩ সালে কাজ শেষে হস্তান্তর করে তারা। গত ২৮ জুন সেতুটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এতে ৩৬টি বাতি জ্বালাতে প্রতি মাসে প্রায় ২৫ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল গুনতে হয় সরকারকে।
বিল বকেয়া থাকায় কয়েক মাস বন্ধ ছিল বাতি। বিল পরিশোধের পর বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হলেও ৩৫টি বাতি ছিল অকেজো। সম্প্রতি নিজস্ব অর্থায়নে বাতি স্থাপন করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সেগুলোর পাওয়ার কম থাকায় আলো কম।
আলোকস্বল্পতা এবং ৯টি বাতি অকেজো থাকার কথা স্বীকার করেছেন কুষ্টিয়া এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, বরাদ্দ না থাকায় নিজস্ব অর্থায়নে বাতি স্থাপন করা হয়েছে। এতে ১০০ ভাগ না হলেও চলাচলের মতো আলো হয়েছে। সরকারিভাবে বরাদ্দ পেলে পরিকল্পিত ও উন্নত বাতির ব্যবস্থা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সম্মেলন বাতিল চেয়ে বিএনপির একাংশের বিক্ষোভ মিছিল
হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন বাতিল চেয়ে দলের একাংশ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। শুক্রবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে গোবিন্দপুর বাজারে সমাবেশ হয়।
সমাবেশে বক্তৃতা করেন ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি সিরাজ উদ্দিন, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব এবিএম জহির উদ্দিন সোহেল, ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য আব্দুস সাত্তার, নূরে আলম এরশাদ প্রমুখ। রোববার গোবিন্দপুর বাজারে সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে।
বক্তারা বলেন, গোবিন্দপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম হিমেল ও তাঁর সহযোগীরা নিজেদের লোক নিয়ে সাজানো সম্মেলন করতে চাচ্ছেন। এটা দলের নেতাকর্মীরা মানে না। আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়ে করা কাউন্সিলের চিন্তা বাদ দিয়ে নির্যাতিত ত্যাগী নেতাকর্মীকে স্থান দিতে হবে।
এ বিষয়ে শফিকুল ইসলাম হিমেল বলেন, সম্মেলনের আয়োজন করেছে বিএনপি। মিছিল করেছে যুবদল। তাদের কোনো সাংগঠনিক এখতিয়ার নেই সম্মেলনের বিরুদ্ধে মিছিল করার।
এ প্রসঙ্গে সিরাজ উদ্দিনের ভাষ্য, কথাটা ঠিক নয়। ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব শহীদুল ইসলামসহ একাধিক বিএনপি নেতা মিছিলে অংশ নিয়েছেন। তারা বক্তব্যও দিয়েছেন বলে দাবি তাঁর।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম ও হোসেনপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম মবিনকে একাধিকবার ফোন করা হয়। তাদের ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।