Samakal:
2025-04-23@12:41:29 GMT

চরিত্র হারাচ্ছে শীতকাল

Published: 14th, January 2025 GMT

চরিত্র হারাচ্ছে শীতকাল

সবচেয়ে বেশি শীত পড়ে জানুয়ারিতে। বছরের শুরুতে তেমনটাই অনুভূত হয়েছিল। শীতের সেই তীব্রতা ছিল সপ্তাহ খানেক। ধীরে ধীরে হিম কমে এখন একেবারে গা-সওয়া হয়ে গেছে। রোদও আছে বেশ। শীত কি তাহলে বিদায় বলছে? বাংলা ঋতুচক্রে পৌষ বিদায় নিয়েছে গতকাল। তবে এখনও দিনে গরম লাগছে। মাঝেমধ্যে ঘামও ঝরছে। আজ থেকে শুরু হয়েছে মাঘ। এখন দেখার বিষয়, ‘মাঘের শীতে বাঘ পালানোর দশা’ হয় কিনা। 

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, শীত এখনও শেষ হয়নি। জানুয়ারি অর্ধেক পড়ে আছে। এখন দেশের বিভিন্ন স্থানের আকাশে মেঘ আছে। মেঘ কেটে গেলে শীত বাড়ে। তাই শীতের তীব্রতা বাড়ারও সম্ভাবনা রয়ে গেছে।

গতকাল একমাত্র পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ছিল। এ জেলায় এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৯ ডিগ্রির ঘরে নেমেছে। কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েন নিম্নআয়ের মানুষ। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায়। সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল যশোরে, ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই অনুযায়ী গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমে গেছে। তবে দেশের অন্যত্র তাপমাত্রা মোটামুটি গতকালের মতোই আছে। কিছু স্থানে বেড়েছে। গতকাল শ্রীমঙ্গলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার তা ছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের আরেক শীতপ্রবণ এলাকা চুয়াডাঙ্গার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন এ তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নওগাঁর বদলগাছীতে গতকালের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এক দিন আগে ছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতেও তাপমাত্রা খানিকটা বেড়েছে। গতকাল এ নগরীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার তা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

গত ডিসেম্বরের একেবারে শেষ দিকে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। কয়েক দিন থাকার পর তা আবার কমে আসে। মাঝে দিনতিনেক ঘন কুয়াশাও ছিল। এরপর শীত কমেছে আবার বেড়েছে। তিন দিন মাঝারি থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর গত রোববার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। এ বছর এখন পর্যন্ত দেশের কোনো স্থানেই তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়নি। মাঝে এক দিন শুধু তেঁতুলিয়ায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ হয়েছে। 

এ বছর দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেশি থাকার জন্যই এমনটা হচ্ছে বলে জানান আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গতকাল রেকর্ড করা হয়েছিল ফেনীতে, ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় তা ২৯ দশমিক ১ ডিগ্রি। শীতের দিন অনুযায়ী সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আসলে কিছুটা বেশিই বলা যায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বলেন, আজ থেকে তাপমাত্রা কমতে পারে। তবে দু’দিন পর তাপমাত্রা আবার বাড়তে পারে। আবার শনিবার থেকে তাপমাত্রা কমে যেতে পারে। তখন তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হওয়ার সম্ভাবনা কম। ২০ জানুয়ারির পর আবার একটি শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এবার শীতের তীব্রতা কমে গেছে। দেশের অভ্যন্তরে শিল্পায়ন বেড়েছে। এসব কারণে আবহাওয়ায় অস্বাভাবিকতা দেখা যাচ্ছে।
শীতকাল, অথচ শীতের তীব্রতা নেই– এমন প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট কারণ বললেন আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ। তিনি বলেন, সাধারণত জানুয়ারি আমাদের দেশের সবচেয়ে শীতলতম মাস। এই সময়ে এক থেকে তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়, এবার ব্যতিক্রম। এবার মাত্র একটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। ডিসেম্বরে তাপমাত্রা গতবারের থেকে অনেক বেশি ছিল। সাধারণত নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড় হয়। ডিসেম্বরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় না। এ বছর ব্যতিক্রম দেখা গেছে। 

এদিকে দিন দিন শীতহীন নগরীতে পরিণত হচ্ছে ঢাকা। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গত ৯ বছরে ঢাকায় শৈত্যপ্রবাহ হয়েছে মাত্র একবার। আর আশপাশের এলাকা থেকে মূল ঢাকায় তাপমাত্রা থাকছে ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। অর্থাৎ সাভার বা টাঙ্গাইলের চেয়ে ঢাকায় শীত পড়ছে কম। আমাদের গবেষণায় দেখেছি, দিনে ঢাকায় শৈত্যপ্রবাহের তাপমাত্রা আর হচ্ছে না। রাতে যে শীত নামে, তা শৈত্যপ্রবাহের পর্যায়ে নামছে না। গত দুই যুগে ঢাকার সবুজ এলাকা ও জলাভূমি কমে গিয়ে বেশির ভাগ এলাকা কংক্রিটে ঢেকে গেছে। ফলে সেখানে দিনের বেলা সূর্যের তাপ আসার পর তা রাতেও জমে থাকছে। ফলে রাতেও তাপমাত্রা খুব বেশি কমছে না। গত ৩০ বছরে ঢাকার আবহাওয়ার গড় তাপমাত্রার রেকর্ড বলছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকার গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়ার কথা। তবে গত ৯ বছরে ঢাকার গড় তাপমাত্রা নিলে তা কোনোভাবেই ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামেনি। ব্যতিক্রম ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি। ওই দিন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

৯০ দিনের মধ্যে গণহত্যার বিচার ও অবিলম্বে আ.লীগের নিবন্ধন বাতিল দাবি

আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই গণহত্যার বিচার, ফ্যাসিবাদী অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অবিলম্বে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধকরণের দাবি জানিয়েছে কয়েকটি সংগঠন। 

গতকাল সোমবার সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বরাবর এক স্মারকলিপিতে তারা এ দাবি জানান। জুলাই রেভ্যুলেশনারি অ্যালায়েন্স, অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, স্টুডেন্ট এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি নামের সংগঠনগুলোর পাঁচ প্রতিনিধিরা এ দাবি তুলে ধরেন।

আইন উপদেষ্টার কাছে ওই স্মারকলিপিতে তারা লিখেছেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সংঘটিত ভয়াবহ গণহত্যা আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায়। রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের যৌথ নির্দেশনায় এদেশের সাধারণ নাগরিকদের ওপর চালানো হয়েছে পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ, যার ফলে দুই সহস্রাধিক মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং বহু মানুষ এখনও পঙ্গু ও নিখোঁজ। এই গণহত্যার বিচার এখনও শুরু হয়নি। বিচার প্রক্রিয়া হচ্ছে চরম ধীরগতির, নানাভাবে প্রতিহত করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় কাঠামো ব্যবহার করে। বিচারহীনতার এই ধারাবাহিকতা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১৩২ ধারার অপব্যবহারের মাধ্যমে, যা সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি গ্রহণের বিধান দেয়। এই ধারা বর্তমানে রাষ্ট্রীয় খুনিদের বিচার এড়ানোর আইনি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বহু প্রশাসনিক কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে। হাজার হাজার ভুক্তভোগী এখনও মামলা ও হয়রানির মুখোমুখি, অনেক নিরীহ নাগরিককে গুম-খুনের শিকার হতে হয়েছে, যাদের অধিকাংশের নামই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে করা মামলা ও মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত।

স্মারকলিপিতে দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ফৌজদারি কার্যবিধি ১৩২ ধারা অবিলম্বে বাতিল বা সংস্কার করতে হবে, যাতে সরকারি কর্মকর্তারা দায়মুক্তি না পান। আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানে সংগঠিত গণহত্যার বিচার, শাপলায় সংঘটিত গণহত্যা, পিলখানা, ২৮ ফেব্রুয়ারি এবং ২৬ মার্চসহ সকল হত্যাকাণ্ডের দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত ও দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম শুরু করতে হবে। আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গসংগঠন এবং ১৪ দলের যেসব নেতা গত তিন নির্বাচনে ক্ষমতায় ছিলেন-তাদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। বিগত ১৫ বছরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে অবৈধ অর্থ উপার্জনকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। গণহত্যা তদন্তে অসহযোগিতাকারী সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এখনও গুম থাকা ব্যক্তিদের সন্ধান দিতে হবে এবং আয়নাঘর এবং গুমে জড়িতদের শাস্তির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। বিগত জুলাই আন্দোলনে দায়েরকৃত ষড়যন্ত্রমূলক মামলাগুলোসহ গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে দায়ের করা ষড়যন্ত্র, প্রহসন এবং রাজনৈতিক হয়রানিমূলক সকল মামলা বাতিল করতে হবে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে, অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গসংগঠনসমূহকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ নামক দলটি বারবার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, রাষ্ট্রকে ব্যবহার করেছে নিজস্ব স্বার্থে এবং জনগণের ওপর চালিয়েছে ফ্যাসিবাদী নিপীড়ন। এই মুহূর্তে এ দলটিকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল করা না হলে ভবিষ্যতে দেশকে আরও ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। আমরা আশাবাদী, আপনি এই সংকটময় সময়ে সাহসী ও ন্যায়নিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন। ইতিহাসের আদালতে আপনি ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেবেন-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নবীনগরে হেফাজতের কমিটি নিয়ে মুখোমুখি দু’পক্ষ
  • ফেসবুক লাইভে এসে নিরাপত্তা চাইলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা
  • ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে জখম, থানায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগ পরিবারের
  • বাংলাদেশকে হারানোর সুবর্ণ সুযোগ দেখছে জিম্বাবুয়ে
  • লেনিন কেন এখনও জরুরি
  • মিয়ানমার জান্তার মরিয়া চেষ্টা
  • হাওরে হাওরে ধান কাটার ধুম
  • ৯০ দিনের মধ্যে গণহত্যার বিচার ও অবিলম্বে আ.লীগের নিবন্ধন বাতিল দাবি
  • বিশ্ব সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবন দিবস আজ
  • সুপেয় পানি সংকটের স্থায়ী সমাধানের পথ