Samakal:
2025-01-31@11:54:10 GMT

মিউজিক ইকো রিসোর্ট

Published: 14th, January 2025 GMT

মিউজিক ইকো রিসোর্ট

‘মিউজিক ইকো রিসোর্ট’ সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম কর্নারে ছেঁড়াদ্বীপ-সংলগ্ন শেষ রিসোর্ট। পরিবেশবান্ধব এ রিসোর্ট সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে অক্ষত রেখেছে। একেবারেই নিরিবিলি। অবারিত ঢেউ আর উত্তাল সমুদ্রে যাদের ভয় নেই, যাদের স্মার্টফোন আর গেজেটে আসক্তি নেই, যারা অবারিত উন্মুক্ত স্থানে বসবাস করতে আগ্রহী এবং যারা অ্যাডভেঞ্চারাস তাদের জন্য এ রিসোর্টটি উপযুক্ত। মোট কথা, এ রিসোর্টে প্রকৃতির আসল রূপ দেখার অফুরন্ত সুযোগ পাওয়া যায়। অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা পেতে জীবনে একবার হলেও যেতে পারেন মিউজিক ইকো রিসোর্টে। ততটা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা না থাকা সত্ত্বেও প্রকৃতি উপভোগ করার জন্য সত্যিকারের প্রকৃতিপ্রেমীরাই সেখানে যান। 
ছেঁড়াদ্বীপ-সংলগ্ন এ রিসোর্টের দু’দিকেই সমুদ্র। চারদিকে রয়েছে ম্যানগ্রোভ আর কেয়া গাছের বাউন্ডারি। রিসোর্টের ভেতরে আছে অসংখ্য বৃক্ষরাজি। মনে হবে একটা অরণ্যে ঢুকেছেন। রিসোর্টের মূল ফটক থেকে বেরিয়েই স্যান্ডি বিচ। এর পূর্বদিকে রয়েছে নয়নাভিরাম ম্যানগ্রোভ। স্থানীয়রা তাই এ কর্নারকে ‘সুন্দরবন’ বলে ডাকেন। 
জোয়ার-ভাটায় এর দৃশ্যপট একেবারেই আলাদা। পশ্চিমে অর্থাৎ পেছনের ফটক দিয়ে বের হলে মনকাড়া রক বিচ। যেন সিক্রেট বিচ; যেখানে বসে সান্ধ্যকালীন চা-নাশতা খেতে খেতে সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায় অনায়াসে।
এখান থেকে ১০ মিনিটে হেঁটে ছেঁড়াদ্বীপ যাওয়া যায়। পরিবেশবান্ধব কনটেইনার হাউস ও তাঁবু ঘরে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। মেনু দেখে খাবার অর্ডার করা ছাড়াও রয়েছে দৈনন্দিন খাবারের প্যাকেজ। অভিজ্ঞ রাঁধুনির কাঠের চুলায় সামুদ্রিক মাছের স্বাস্থ্যকর রেসিপি এবং সুস্বাদু বারবিকিউয়ের আসল স্বাদ পাওয়া যাবে এখানে। নারিকেলবীথির তলায় বসে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। মনে হবে যেন প্রকৃতির সবুজ ছাতার নিচে বসে খাচ্ছেন, নিজের বাড়িতেই আড্ডা দিচ্ছেন।
এখানে ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন খেলা ছাড়াও লোকাল বোটে চড়ে অর্থের বিনিময়ে মাছ শিকারের ব্যবস্থা রয়েছে। চাইলে ছেঁড়াদ্বীপে ঘুরতে আসা পর্যটক আগে থেকে অর্ডার করে সকাল, দুপুর বা রাতের খাবারও খেতে পারবেন। 
এ পয়েন্ট থেকেই সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়। এখানে সমুদ্রের শো শো গর্জন, কেয়া আর নারিকেল পাতার মর্মর ধ্বনি, পাখির ঐকতান সৃষ্টি করে মায়াবী সুর। সুরের অবাধ সাগরে কাটান দিন-রাত। 
খুব বেশি মানুষের আনাগোনা নেই এখানে। যারা নিরিবিলি ও নির্জন পরিবেশে সময় কাটাতে চান, এ রিসোর্ট তাদের জন্য আদর্শ। চাইলে (সম্পূর্ণ প্রাইভেসি নিয়ে) ছোট-বড় গ্রুপ, যে কোনো ফ্যামিলি, করপোরেট পার্টির ক্ষেত্রে পুরো রিসোর্ট ভাড়া নেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে অগ্রিম বুকিং কনফার্ম করে যেতে হবে। রুম ভাড়া (২ জনের জন্য) ৪ হাজার টাকা এবং তাঁবু ঘর ভাড়া ৩ হাজার টাকা। 
লোকেশনটি খুঁজে পাওয়াও খুব সহজ। সেন্টমার্টিন দ্বীপে জাহাজ ঘাটে নেমে যে কাউকে বললেই হবে ‘সুন্দরবন যাব’। তাহলে আর কোনো লোকেশন জানার দরকার নেই। স্থানীয় বাহনে আধা ঘণ্টার যাত্রায় দ্বীপের অনেকটাই সৌন্দর্য দেখতে দেখতে আপনি পৌঁছে যাবেন দ্বীপের শেষ রিসোর্ট দক্ষিণ-পশ্চিম কর্নার ‘মিউজিক ইকো রিসোর্টে’। v

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দুই হরিণ উদ্ধার, বনরক্ষীদের ওপর হামলার চেষ্টা

শ্যামনগরে শিকারি চক্রের ফাঁদ থেকে জবাই করা একটি হরিণ উদ্ধারের পর বনরক্ষীদের ওপর হামলার চেষ্টা চালিয়েছে এক দল দুর্বৃত্ত। বন বিভাগের পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের মীরগাং টহল ফাঁড়ির সদস্যদের লক্ষ্য করে এ হামলার চেষ্টা হয়। সোমবার রাতে উপজেলার হরিনগর বাজারসংলগ্ন পাউবো বাঁধের ওপর এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী বনরক্ষীদের অভিযোগ, মীরগাং টহল ফাঁড়ির সদস্যরা শিকারি চক্রের ফাঁদ থেকে একটি জবাই করা হরিণ উদ্ধারের পর রাতে ফাঁড়িতে ফেরার পথে তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করে ক্ষুব্ধ শিকারি চক্রের সদস্যরা। পরে তারা পালিয়ে জীবন রক্ষা করেন। হরিণ উদ্ধারের ঘটনায় তাদের হুমকি দিচ্ছে শিকারি চক্রের সদস্যরা। 
সোমবার সকালে সুন্দরবনের ভেতর শিকারি চক্রের ফাঁদ থেকে একটি জবাই করা হরিণ উদ্ধার করেন বন বিভাগের মীরগাং টহল ফাঁড়ির সদস্যরা। পরদিন মঙ্গলবার সকালে পার্শ্ববর্তী চুনকুড়ি টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীরা শিকারি চক্রের ফাঁদে আটক আরও একটি হরিণ জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন। সুন্দরবনের সিংহড়তলী এলাকা থেকে হরিণকে উদ্ধারের পর বনের মধ্যে অবমুক্ত করেন বনরক্ষীরা। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে সাতটি হরিণ শিকারের ফাঁদ জব্দ করেন তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুনকুড়ি টহল ফাঁড়ির ওসি সজল মজুমদার। 
মীরগাং টহল ফাঁড়ির ওসি গোলাম কিবরিয়ার ভাষ্য, সোমবার সকালে ফাঁদে আটকে পড়া একটি হরিণ জবাই করে শিকারি চক্রের সদস্যরা। পরে তারা জবাই করা হরিণটি উদ্ধার করেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে উদ্ধার করা হরিণ জমা দিতে দুপুরের দিকে তারা সাতক্ষীরা আদালতে যান। রাত ৯টার দিকে অফিসে ফেরার পথে ১৬-১৭ জন যুবক হরিনগরের সিংহড়তলী এলাকায় তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। এ সময় তারা পার্শ্ববর্তী চুনকুড়ি টহল ফাঁড়ির ওসির সহায়তায় ভিন্ন পথে পালিয়ে রক্ষা পান। 
গোলাম কিবরিয়ার অভিযোগ, উদ্ধার করা হরিণ নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা আদালতের পথে রওনা হওয়ার পর চুনকুড়ি গ্রামের আনিছুর, আবিয়ার, আব্দুর রহিম ও সাহেব আলী লোকজন নিয়ে বনকর্মীদের সহায়ক সংগঠন সিপিজি সদস্য পরিমল মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়। হরিণ শিকারের মামলায় তাদের নাম জড়ানো হলে এলাকায় কোনো বনকর্মীকে অক্ষত থাকতে দেওয়া হবে না বলেও ভীতি দেখানো হয়। এ ছাড়া প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে উপঢৌকন হিসেবে পাঠানোর জন্য হরিণের ১০ কেজি মাংসও দাবি করে চক্রের প্রধান আনিছুর। 
আনিছুর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তাঁর সঙ্গী আব্দুর রহিম, আবিয়ার, সাহেব আলীসহ অন্যরাও যুবদলের সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আনিছুর মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু জাবের মোড়লের ভাগনে হওয়ায় মামার প্রভাব খাটিয়ে হরিণ শিকার, ঘের দখলসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। 
অভিযোগ অস্বীকার করে আনিছুর রহমান বলেন, তিনি সুন্দরবনে যাতায়াত করেন না। হরিণ শিকারেও জড়িত নন। সোমবার জবাই করা একটি হরিণ উদ্ধারের মামলায় তাঁর নাম জড়ানোর খবর পেয়ে তিনি বনরক্ষীদের ফোন করেছিলেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘটনার রাতে কিছু গ্রামবাসী বনকর্মীদের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন না তিনি। 
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জার হাবিবুল ইসলাম বলেন, পশ্চিম সুন্দরবনের চুনকুড়ি এবং মীরগাং এলাকা থেকে পরপর দু’দিন দুটি হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় চুনকুড়ি এলাকার চিহ্নিত হরিণ শিকারি আনিছুর ও তাঁর লোকজন বনরক্ষীসহ সিপিজি সদস্য এবং ফাঁড়িগুলোতে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই হরিণ উদ্ধার, বনরক্ষীদের ওপর হামলার চেষ্টা