হঠাৎ করেই ক্ষোভ-অসন্তোষ ঢাকার ক্লাবপাড়ায়। কারণ, বিসিবির গঠনতন্ত্রের সম্ভাব্য সংশোধনী।

বলা হচ্ছে, প্রস্তাবিত সংশোধনী বাস্তবায়িত হলে বিসিবির সাধারণ পরিষদ ও পরিচালনা পর্ষদে ক্লাবগুলোর প্রতিনিধিত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে।

আজ সিসিডিএমের আওতাধীন ঢাকার বিভিন্ন লিগের ৭৬টি ক্লাবের ৬৭ জন প্রতিনিধি রাজধানীর একটি হোটেলে সভায় বসেছিলেন এটা নিয়ে। পরে তাঁরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গঠনতন্ত্রে প্রস্তাবিত সংশোধনী আনা হলে তাঁরা লিগ বর্জন করবেন। ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়ে ক্লাব প্রতিনিধিরা বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে দেখা করার কথাও বলেছেন।

এর আগে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্দেশনায় পরিচালক নাজমূল আবেদীনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের গঠনতন্ত্র সংশোধনী কমিটি করেছে বিসিবি। কমিটিতে নাজমূলের সঙ্গে সদস্যসচিব হিসেবে আছেন এনএসসির চেয়ারম্যানের পিএস সাইফুল ইসলাম। অন্য তিন সদস্য বিসিবির আইনি উপদেষ্টা কামরুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মাহদি ও এ কে এম আজাদ হোসেন।

সিসিডিএমের আওতাধীন ক্লাবগুলোর ৬৭ জন প্রতিনিধি আজ রাজধানীর একটি হোটেলে মতবিনিময় সভা হয়েছে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কেন্দ্রীয় দুই নেতার জেলা কমিটিতে প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক

ঝালকাঠি জেলা বিএনপির আসন্ন কাউন্সিল ঘিরে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। কারণ, কেন্দ্রীয় কমিটির দুই নেতা জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বিষয়টি দলীয় গঠনতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন জেলার নেতাকর্মীরা।
আগামী ২৮ এপ্রিল ঝালকাঠি জেলা বিএনপির কাউন্সিল হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ প্রস্তাব করা হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাউন্সিলে ভার্চুয়ালি উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করার পরই চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হবে। আসন্ন কাউন্সিলে জেলা বিএনপির সভাপতি পদে আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহাদাত হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে। গত সোমবার সভাপতি পদে দলের কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম জামাল এবং সাধারণ সম্পাদক পদে মাহাবুবুল হক নান্নুর নাম ঘোষণায় দলের মধ্যে মতবিরোধ শুরু হয়েছে।

বিএনপির দলীয় গঠনতন্ত্রের ১৫ (খ) ধারায় উল্লেখ আছে, জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোনো কর্মকর্তা এবং দলীয় অঙ্গদল বা সংগঠনের কোনো সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক অন্য কোনো পর্যায়ের কমিটিতে কর্মকর্তা নির্বাচিত হতে পারবেন না।
এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় পদে থেকে আসন্ন কাউন্সিলে দুই নেতার প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা গঠনতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে সভাপতি প্রার্থী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর বলেন, ‘বিষয়টি রীতিমতো ভাবিয়ে তুলেছে। এটা তারা কীভাবে কী মনে করে ঘোষণা করেছেন তা আমার বোধগম্য নয়। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, দলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক পদে থেকে বরিশাল বিভাগীয় কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির সদস্য নিযুক্ত হন মাহাবুবুল হক নান্নু। তিনি আবার কীভাবে কাউন্সিলের সম্পাদক প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন।’
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেনের ভাষ্য, সহসাংগঠনিক সম্পাদককে ৫ আগস্টের আগে দু-একটি ছাড়া দলীয় কর্মসূচিতে পাওয়া যায়নি। তাঁকে দাওয়াত দিলে বলতেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে, আসা যাবে না। আবার একই সময়ে এলাকার বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখা যেত তাঁকে। এখন তাদের এ ধরনের সিদ্ধান্তে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন বলে দাবি করেন তিনি। কারণ দলীয় গঠনতন্ত্রে এ বিষয়ে পরিষ্কার উল্লেখ আছে। তাছাড়া তারা যাদের নিয়ে সভা করে এ ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের কাউন্সিলে ভোটাধিকার নেই। তারা বিগত দিনে কোনো আন্দোলন সংগ্রামে থাকার ছবি দেখাতে পারবেন না। ৫ আগস্টের আগে কোথায় ছিলেন তারা?

বিষয়টি নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল বলেন, ‘আজ (২১ এপ্রিল) বিএনপির নেতাকর্মীকে নিয়ে সভার আয়োজন করি। এতে সর্বসম্মতিক্রমে জেলা কাউন্সিলে আমাকে সভাপতি এবং সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নুকে সম্পাদক প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।’ সভায় যারা উপস্থিত ছিলেন তারা তো কাউন্সিলের ভোটার না। তাদের সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় পদে থেকে প্রার্থী হতে পারেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের জেলা কমিটিতে প্রার্থী হতে বাধা নেই। গঠনতন্ত্রে এ রকম কোনো বাধা আছে বলে মনে হয় না।
বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নু জানান, বিগত পকেট কমিটি নিয়ে দ্বিমত আছে। অনেকেই বঞ্চিত। তাই সবার মতামতের ভিত্তিতে ভোটের মাধ্যমে কাউন্সিল হবে। বিগত কমিটি একতরফা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারণে যারা বাদ পড়েছেন, তাদের নিয়েই কমিটি করতে কাজ করছেন ঝালকাঠির সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক হায়দার আলী লেলিন ভাই।’ কেন্দ্রীয় কমিটি এবং বিভাগীয় কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির সদস্য হয়ে আপনি জেলা কাউন্সিলের প্রার্থী হতে পারেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে নান্নু বলেন, ‘একাধিক প্রার্থী, বহুত্ববাদ থাকবেই। এটাই গণতন্ত্র। দল কোনো ব্যক্তি ইচ্ছায় চলে না। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।’
বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করা হয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হায়দার আলী লেলিনের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, বিগত কমিটিতে কিছু ত্রুটি ছিল। তাই নিয়ে কিছু দ্বন্দ্ব মতবিরোধ সৃষ্টি হতেই পারে। এসব সমাধান করেই এগিয়ে যেতে হচ্ছে। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম জামাল ও মাহাবুবুল হক নান্নুর কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার কোনো সংবাদ জানা নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেন্দ্রীয় দুই নেতার জেলা কমিটিতে প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক