সাবেক পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন ও উপমন্ত্রী জ্যাকবের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
Published: 14th, January 2025 GMT
সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবসহ ছয়জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ মঙ্গলবার এসব আদেশ দেন।
শাহাব উদ্দিন ও তাঁর ছেলে জাকির হোসেনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক নাজমুল ইসলাম। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
অপর দিকে সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী ও ভোলা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল জ্যাকব, তাঁর স্ত্রী নীলিমা নিগার সুলতানা, মেয়ে জুল জালালে আল ইসলাম ও ছেলে আবরার তপন ইসলামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক এস এম রাশেদুর রাজা। আদালত শুনানি শেষে তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
সাবেক সংসদ সদস্য শরিফুলের সম্পদ ক্রোকের আদেশএদিকে বগুড়া-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ ও তাঁর স্ত্রী মোহসিনা আক্তারের নামে থাকা স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাঁদের নামে থাকা ৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের উপপরিচালক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
উদ্যোক্তার ঋণ তুলে আত্মসাৎ যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার
বগুড়া সদরের সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হকের বিরুদ্ধে অধিদপ্তরের আওতাধীন যুবক-যুবতীদের নামে বরাদ্দ ঋণের টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। একাধিকবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তদন্ত কমিটি সত্যতাও পায়। তবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বহাল রয়েছেন এনামুল।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এনামুল জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা দেওয়ান মো. রায়হানুল হকের কাছে ঋণ ছাড়ে একাধিকবার অনুরোধ করেন। এ জন্য তিনি পাঁচবিবির ঢাকারপাড়া গ্রামের মনিরা চৌধুরী মেমিকে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তাঁর নামে দুই বছর আগে দুই লাখ টাকা ঋণ নেন। টাকা নেওয়ার পর আর কিস্তি দেননি মেমি। এমনকি ঠিকানাতেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। রায়হানুল যোগাযোগ করলে এনামুল বলেন, মেমির সঙ্গে তাঁর বনিবনা নেই। ফলে ঋণ পরিশোধে তিনি কোনো সহায়তা করতে পারবেন না।
এ ঘটনায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি জয়পুরহাট জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতিয়ার রহমান সহায়তা চেয়ে বগুড়া জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালককে চিঠি দেন। চিঠিতে প্রতারণার জন্য এনামুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও ঋণের টাকা আদায়ে অনুরোধ জানানো হয়।
এনামুল কাহালুতে চাকরি করাকালে উপজেলার দুর্গাপুরের নূহুর আলী নামে এক ব্যবসায়ী ঋণের জন্য আবেদন করেন। তাঁকে ঋণ দেওয়ার জন্য মর্টগেজ হিসেবে একটি জমির মূল দলিল নেন তিনি। পরে এটি দিয়ে আব্দুল মজিদের নামে ২০ হাজার টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন এনামুল।
নূহুর আলী বলেন, ‘আমার দলিলে অন্যজনের নামে ঋণ নেওয়া হলো। অথচ আমি জানতেও পারলাম না। কয়েক বছর ঘুরেও দলিল ফেরত পাচ্ছি না।’
জানা যায়, নূহুর আলীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক এ এইচ এম এনামুল হকের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি হয়। কমিটি গত বছর ২৭ অক্টোবর প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এনামুল হক প্রতারণার মাধ্যমে একজনের দলিল দিয়ে আরেকজনের নামে ঋণের টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন।
ঋণ ছাড়ে ঘুষ, জালিয়াতি ছাড়াও এনামুলের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে বগুড়ার শাজাহানপুরে কর্মরত অবস্থায় ভাড়া বাসায় নারী নিয়ে ফুর্তি করার সময় ধরা পড়েন। পরে এনামুলকে সুনামগঞ্জের ছাতকে বদলি করা হয়। কিন্তু কিছুদিন পর রাজনৈতিক তদবিরে আবারও বগুড়া সদরে আসেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, এনামুল আগে আওয়ামী লীগের কয়েক নেতার ছত্রছায়ায় ছিলেন। এখন ভোল পাল্টে ভর করেছেন বিএনপির নেতাদের ঘাড়ে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না যুব অধিদপ্তর।
অভিযোগের বিষয়ে এনামুল হক বলেন, ‘আমি সব টাকা পরিশোধ করেছি। সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। রাজনীতির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বগুড়ার উপপরিচালক তোছাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘এনামুল হকের বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে উল্টো আমার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক অভিযোগ করা হয়। এরপরও এনামুলের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’