২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস জুলাই-ডিসেম্বরে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে। এ সময়ে এডিপির মাত্র ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়। শুধু বাস্তবায়নের হারই নয়, টাকা খরচের দিক থেকেও জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম অর্থ খরচ হয়েছে। সব মিলিয়ে ৫০ হাজার ২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা কম।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। আজ মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ক্ষমতার পটপরিবর্তন, ঠিকাদার ও প্রকল্প পরিচালকদের খুঁজে না পাওয়া ও সরকারের অর্থ ছাড়ে কড়াকড়ি—এসব কারণে উন্নয়ন প্রকল্পে কম টাকা খরচ হয়েছে। এ ছাড়া নতুন প্রকল্প পাসের ক্ষেত্রে কঠোর যাচাই-বাছাই করার উদ্যোগ নিয়েছেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

আইএমইডি সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই-ডিসেম্বর ছয় মাসে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো মোট ৫০ হাজার ২ কোটি টাকা কম খরচ করতে পেরেছে। এই খরচ এর আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা কম। আগের অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে খরচ হয়েছিল ৬১ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। তারও আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে জুলাই-ডিসেম্বরে ৬০ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫৬ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা ও ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫১ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল।

চলতি অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে মোট ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকার এডিপি নেওয়া হয়েছে। তবে তা বাস্তবায়নের হার খুবই কম। সে জন্য আগের অর্থবছরের মতো এবারও এডিপির আকার কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, এবার সংশোধিত এডিপির আকার ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা কমতে পারে। আগামী মাসে সংশোধিত এডিপি চূড়ান্ত করা হবে।

১৯ মন্ত্রণালয় ১০ শতাংশ অর্থও খরচ করতে পারেনি

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও ১৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের জন্য বরাদ্দ করা অর্থের ১০ শতাংশও খরচ করতে পারেনি। এ সময়ে সব মিলিয়ে ১০ শতাংশের কম অর্থ খরচ করেছে, এমন মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, সেতু বিভাগ, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় (থোক বরাদ্দসহ), স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়।

সবচেয়ে বেশি এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকল্পগুলোয়। এ বিভাগের অনুকূলে ২৩১টি প্রকল্পে ৩৭ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। জুলাই-ডিসেম্বরে তারা খরচ করেছে ৯ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত থেকে চাল, সিঙ্গাপুর-যুক্তরাজ্য থেকে আসছে এলএনজি

ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির করছে সরকার। এতে ব্যয় হবে দুই কোটি ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৫৯ কোটি ১০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।

বৈঠকে এর পাশাপাশি সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাজ্য থেকে দুই কার্গো এলএনজিসহ মোট ১১টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে কমিটির এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তা পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে। ভারতের মেসার্স বগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এই চাল আনা হবে। প্রতি মেট্রিক টন চালের দাম ধরা হয়েছে ৪২৪.৭৭ মার্কিন ডলার। সে হিসাবে ৫০ হাজার টন চালের দাম পড়বে দুই কোটি ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৫৯ কোটি ১০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৬ লাখ টন চাল আমদানির সম্প্রতি অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এর আওতায় ইতোমধ্যে ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনাম থেকে কয়েক টন চাল আমদানি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। দেশের বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও চাল আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

এছাড়া দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোটেশনের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে সিঙ্গাপুর থেকে এক কার্গো এবং যুক্তরাজ্য থেকে এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৬৬ কোটি ৮৭ লাখ ৮২ হাজার ৪০০ টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মদ বিক্রিতে আয় ৫ হাজার কোটি, দুধ বিক্রিতে মাত্র ২১০ কোটি রুপি আয়
  • শুল্কমুক্ত সুবিধার সুফল কম, চীনে রপ্তানি হয় আমদানির ৩১ ভাগের ১ ভাগ
  • বাড়ছে আমদানিনির্ভর কৃষিপণ্যের উৎপাদন
  • ঈদের আগে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড, আগস্টের পর থেকেই বাড়ছে
  • সুন্দরবনে নৌকায় ৫০ কেজি হরিণের মাংস ফেলে পালালেন শিকারিরা
  • ২৬ দিনে রেমিট্যান্স ৩শ’ কোটি ডলারের  কাছাকাছি 
  • রেমিট্যান্সের নতুন রেকর্ড
  • প্রবাসী আয় ৩ বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই, ঈদের আগেই রেকর্ড
  • ভারত থেকে চাল, সিঙ্গাপুর-যুক্তরাজ্য থেকে আসছে এলএনজি
  • ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের লোকসান বেড়েছে ৮২ শতাংশ