উত্তর কোরিয়ার আত্মঘাতী সেনারা ইউক্রেনের নতুন আতঙ্ক
Published: 14th, January 2025 GMT
সোমবার ইউক্রেনের স্পেশাল অপারেশন ফোর্সেস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুদ্ধক্ষেত্রের একটি ঘটনা পোস্ট করেছে। তাতে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে রাশিয়ার তুষারাবৃত পশ্চিমাঞ্চলীয় কুরস্কে এক যুদ্ধের পর ইউক্রেনীয় বিশেষ বাহিনী এক ডজনেরও বেশি নিহত উত্তর কোরিয়ার সেনার মৃতদেহ তল্লাশি করে। এদের বাইরে একজন সেনাকে গুরুতর আহত অবস্থায় পড়েছিল। কিন্তু ইউক্রেনের সেনারা যখন তার কাছে গেলো, তখন সে একটি গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটায় এবং নিজেকে উড়িয়ে দেয়। সৌভাগ্যক্রমে ইউক্রেনের সেনারা প্রাণে বেঁচে গেছে।
কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্র, গোয়েন্দা প্রতিবেদন এবং দেশত্যাগী উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের সাক্ষ্য থেকে প্রাপ্ত ক্রমবর্ধমান প্রমাণের মাধ্যমে জানা গেছে, কিছু উত্তর কোরিয়ার সেনা যুদ্ধক্ষেত্রে চরম পদক্ষেপ নিচ্ছে।
২০২২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে যাওয়া উত্তরের সাবেক এক সেনা সদস্য রয়টার্সকে বলেছেন, “আত্মঘাতী বিস্ফোরণ এবং আত্মহত্যা: এটাই উত্তর কোরিয়ার বাস্তবতা। যেসব সেনা যুদ্ধের জন্য বাড়ি ছেড়েছিল তাদের মগজ ধোলাই করা হয়েছে এবং তারা কিম জং উনের জন্য আত্মত্যাগ করতে সত্যিই প্রস্তুত।”
ইউক্রেন এবং পশ্চিমা মূল্যায়ন বলছে, পিয়ংইয়ং রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কুরস্ক অঞ্চলে মস্কোর বাহিনীকে সমর্থন করার জন্য প্রায় ১১ হাজার সেনা পাঠিয়েছে। এদের মধ্যে তিন হাজার সেনা নিহত বা আহত হয়েছে।
জেনেভায় জাতিসংঘে উত্তর কোরিয়ার মিশন তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।
সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার একজন আইনপ্রণেতাকে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রে আহত ও নিহত উত্তর কোরিয়ার সেনাদের সংখ্যা ইঙ্গিত দেয় যে তারা ড্রোন হামলার মতো আধুনিক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয় এবং তারা সম্ভবত ‘কামানের ঢাল’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আরোউদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, এই সেনাদের আত্মহত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে লক্ষণ পাওয়া গেছে।
ক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টের গোয়েন্দা কমিটির সদস্য লি সিওং কুয়েউন বলেন, “সম্প্রতি, এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, একজন উত্তর কোরিয়ার সেনা ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার ঝুঁকিতে ছিল, তাই সে জেনারেল কিম জং উনের জন্য চিৎকার করেছিল এবং নিজেকে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য একটি গ্রেনেড বের করেছিল, কিন্তু সে নিহত হয়েছিল।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, বিএনপি-আ.লীগ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ২
নাটোরের লালপুর উপজেলায় ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার জেরে বিএনপির নেতাকর্মীর ওপরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা ও গুলিবর্ষণ করে। এতে সুজাত আলী ও সাব্বির নামে দুইজিন গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে একজন বিএনপিকর্মী বলে জানা গেছে। গুলিবিদ্ধ দু’জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৯ জনকে আটক করে করেছে পুলিশ।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, ঈদের নামাজ শেষে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বিএনপি ও স্থানীয়দের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেনে তারা। এতে সুজাত আলী ও সাব্বির (২৪) নামের দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। লুকমান হোসেন নামের আরও একজন আহত হন। আহত সাব্বির হোসেনকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ দুজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদে লালপুর ইউনিয়ন বিএনপি এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে বক্তব্য দেন সাবেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম লুলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি, বিএনপি নেতা এটিএম জাহিদুল আলম ডলার ও জিয়া। তারা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি পরিকল্পিতভাবে ঈদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে এবং প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে, যা জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি নেতারা হুঁশিয়ারি দেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) আমজাদ হোসাইন বলেন, দুই যুবক ঈদ মাঠে জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছে এ রকমটা জানতে পেরেছি। মারামারিতে সম্পৃক্ত ছিল এরকম ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা বলছে। তবে এতে যিনি ভুক্তভোগী হয়েছেন, তাকে এখনো আমরা পাইনি। এটা নিয়েও যাচাই-বাছাই করছি।
এসপি আমজাদ হোসাইন আরও বলেন, ঘটনাস্থলে ডিবি টিম, পুলিশ, যৌথবাহিনীর সদস্যরা রয়েছে সেখান থেকে রিপোর্ট আসলে পুরো ঘটনাটি জানতে পারব। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।