মাটির নিচে চাপা পড়া শ্রমিককে জীবিত উদ্ধার
Published: 14th, January 2025 GMT
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করার সময় রুবেল হোসেন (২২) নামে এক শ্রমিক মাটির নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আধাঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে তাকে জীবিত উদ্ধার করেন।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে পৌর এলাকার শ্রীরামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত শ্রমিক রুবেল হোসেন ওই একই এলাকার মাখরুল শেখের ছেলে।
আলফাডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দলনেতা ওবায়দুর রহমান জানান, পৌরসদরের শ্রীরামপুর এলাকার বাসিন্দা মোশারফ মাস্টার কয়েকদিন আগে গভীরভাবে মাটি খনন করে একটি বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। মঙ্গলবার সকালে ঘটনার সময় ওই নির্মাণাধীন ভবনের বেইজ ঢালাই কাজ চলছিল। এসময় সেখানটাতে কাজ করতেছিলেন শ্রমিক রুবেল হোসেন। হঠাৎ উপর থেকে মাটি ধসে পড়ে তিনি মাটির নিচে চাপা পড়ে যান। পরে তাকে উদ্ধারের জন্য স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে চেষ্টা চালান একই সাথে ফায়ার সার্ভিসেও খবর দেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। প্রায় আধাঘণ্টা চেষ্টার পর তাকে জীবিত উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ভবন মালিক মোশারফ হোসেন বলেন, “মাহফুজার ভাই ও তার ছেলেকে আমার বিল্ডিংয়ের হাউজ খোঁড়ার কাজ কনট্রাক্ট দিয়েছি। কাজ শেষ পর্যায়ে। আজ সকালে কাজে আসার পর এই দুর্ঘটনা ঘটে। আমি ফায়ার সার্ভিসে ফোন করি তারাও এসেছিল। আমরা তাকে আলফাডাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করি। সে এখন সুস্থ আছে।”
আলফাডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দলনেতা ওবায়দুর রহমান বলেন, “আধাঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ওই শ্রমিককে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। অসাবধানতার ফলে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।”
আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.
ঢাকা/তামিম/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।
জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।
জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।
আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়।