চবিতে ক্যাবের খাবারের মূল্য তালিকা প্রদর্শন
Published: 14th, January 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) যুব গ্রুপে সদস্যরা খাবার মূল্য তালিকা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দোকানে প্রদর্শন করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ব্যবসায়ী সমিতি অনুমোদিত ন্যায্য মূল্যের তালিকাটি সব হোটেলে টানিয়ে দেন তারা।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) খাবারের মূল্য তালিকা নিয়ে শিক্ষার্থী ও দোকানিদের বিভ্রান্ত দূর করতে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
জানা গেছে, ক্যাব যুব গ্রুপ চবির সাংগঠনিক সম্পাদক রোজাইন আল রাফির নেতৃত্বে একটি দল ক্যাম্পাসের লেডিস ঝুপড়ি, কলা ঝুপড়িসহ আশপাশের দোকানে নির্ধারিত মূল্য তালিকা প্রদর্শন করেন।
অন্যদিকে, ক্যাব যুব গ্রুপ চবির দপ্তর সম্পাদক তানজিম আশরাফের নেতৃত্বে আরেকটি দল ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট, স্টেশন ও সোহরাওয়ার্দী মোড় সংলগ্ন দোকানপাটে এ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এ সময় দোকান-মালিকেরা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
দপ্তর সম্পাদক তানজিম আশরাফ বলেন, “নির্ধারিত মূল্য তালিকা থাকার পরেও সঠিক তথ্য না জানার কারণে বিভিন্ন দোকানে শিক্ষার্থী ও দোকানিদের মাঝে বাকবিতণ্ডা লক্ষ্য করা যায়। দোকানিদের অনেকেই এই মূল্য তালিকা সম্পর্কে জানেন না বলেও দাবি করেন। এ সমস্যা দূরীকরণে ক্যাব যুব গ্রুপ চবির পক্ষ থেকে উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়েছে।”
সাংগঠনিক সম্পাদক রোজাইন রাফি বলেন, “ক্যাব সবসময়ই ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে সুলভ মূল্যে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে প্রশাসনের নেওয়া উদ্যোগকে সবার কাছে পৌঁছে দিতেই আমাদের এ কার্যক্রম। যা ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।