হাতের মুঠোয় থাকা স্মার্টফোন এখন দৈনন্দিন জীবনের অতিপ্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। আর তাই তো কোনো কারণে ফোনে সমস্যা দেখা দিলে দৈনন্দিন কাজ করতে বেশ সমস্যা হয় অনেকের। ফোন বিকল বা নষ্ট হলে সবার পক্ষে নতুন ফোন কেনা সম্ভব হয় না, ফলে তাঁরা ছোটেন সার্ভিস সেন্টারে। ফোন নষ্ট হলেও সেখানে আমাদের ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন তথ্য জমা থাকে। আর তাই ফোন মেরামত করতে দেওয়ার আগে বেশ কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

১.

বিক্রয়োত্তর সেবা যাচাই

যেকোনো ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনেই সাধারণত এক বছরের বিক্রয়োত্তর সেবা পাওয়া যাবে। এর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানভেদে বিভিন্ন সুরক্ষা–সুবিধাও পাওয়া যায়। আর তাই ফোনে কোনো সমস্যা হলে প্রথমেই বিক্রয়োত্তর সেবার মেয়াদ জানার পাশাপাশি সুরক্ষা নীতিমালার আওতাভুক্ত কি না, তা জানতে হবে। বিক্রয়োত্তর সেবা ও সুরক্ষা নীতিমালার আওতাভুক্ত হলে স্বল্প বা বিনা খরচে ফোন মেরামত করা যাবে। তবে সাধারণত দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতি—যেমন হাত থেকে পড়ে যাওয়া বা আঘাতের কারণে ফোনের ক্ষতি হলে বিক্রয়োত্তর সেবা পাওয়া যায় না।

আরও পড়ুনস্মার্টফোনের মাইক্রোফোন কি গোপনে আপনার কথা শুনছে? পরীক্ষা করবেন যেভাবে২২ নভেম্বর ২০২৪২. ফোনের চারপাশের ছবি তুলে রাখা

মেরামত করতে দেওয়ার আগে ফোনের সর্বশেষ অবস্থার প্রমাণ নিজের কাছে রাখার জন্য ছবি তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনুমোদিত সার্ভিস সেন্টারে ফোন জমা দেওয়ার আগে ফোনের চারপাশের ছবি ভালোভাবে তুলতে হবে। এর ফলে মেরামতের সময় নতুন দাগ বা ক্ষতি হলে সহজেই ক্ষতিপূরণ দাবি করা যাবে।

৩. গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ

ফোন মেরামতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। আর তাই দৈনন্দিন বিভিন্ন যোগাযোগের জন্য ফোনে সংরক্ষণ করা ফোন নম্বগুলো আলাদাভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। এ ছাড়া ফোনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ফাইল, ছবি বা ভিডিওগুলো সংরক্ষণ করে মুছে ফেলতে হবে।

আরও পড়ুনস্মার্টফোন চুরি হলেও ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ রাখবেন যেভাবে২৪ ডিসেম্বর ২০২৪৪. ফ্যাক্টরি রিসেট

ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ফোন মেরামতের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই সার্ভিস সেন্টারে দেওয়ার আগে ফোন অবশ্যই ফ্যাক্টরি রিসেট করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, ফ্যাক্টরি রিসেটের ফলে ফোনের সব ডেটা মুছে যাবে। আগে থেকে ব্যাকআপ না নিলে হারানো তথ্য পুনরুদ্ধার করা যাবে না। তাই ডেটার ব্যাকআপ নিয়ে এরপর ফ্যাক্টরি রিসেট করতে হবে। মেরামতের পর ব্যাকআপ থেকে আগের ডেটা পুনরুদ্ধার করে ব্যবহার শুরু করা যাবে।

৫. সহায়ক যন্ত্রাংশ খুলে রাখা

ফোন কেস, স্ক্রিন প্রটেক্টর বা অন্যান্য একসেসরিজ মেরামতের জন্য প্রয়োজন হয় না। যদিও বেশির ভাগ মেরামতকারী সেগুলো খুলে ব্যবহারকারীর কাছে ফেরত দেন, তবে নিজে থেকেই এগুলো খুলে রাখা যেতে পারে। শুধু তা–ই নয়, মাইক্রোএসডি এবং সিম কার্ডও খুলে রাখতে হবে।

আরও পড়ুনস্মার্টফোন ব্যবহারের সময় চোখ নিরাপদে রাখার ৬ কৌশল০৪ মে ২০২৪

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৭০ জনের আয়কর নথি চেয়ে এনবিআরে চিঠি দুদকের

অর্থ পাচার করে দুবাইয়ে সম্পত্তি করা ৭০ প্রবাসীর আয়কর নথিসহ অন্যান্য তথ্য চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১৬ এপ্রিল দুদকের উপপরিচালক রামপ্রসাদ মণ্ডলের সই করা চিঠিটি পাঠানো হয়। তবে চিঠির তথ্য জানাজানি হয় গতকাল বুধবার। 

দুদকের চিঠিতে বলা হয়, মোট ৪৫৯ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ সুইস ব্যাংকসহ বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে পাচার করে পরে তা দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা সুবিধায় ৯৭২টি প্রপার্টি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এসব সম্পদের মূল্য প্রায় ৩১৫ মিলিয়ন ডলার।
এসব ব্যক্তির মধ্যে ৭০ জনের তথ্য ২৯ এপ্রিলের মধ্যে এনবিআরকে পাঠাতে বলেছে দুদক। চিঠিতে নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট নম্বর ও জন্মতারিখ দিয়ে এসব ব্যক্তির টিআইএন সনদের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তাদের ‘সকল তথ্য সংক্রান্ত সব রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন’।

এর আগে ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি জানিয়েছিল, ৪৫৯ বাংলাদেশি নাগরিক বাংলাদেশে তাদের তথ্য গোপন করে দুবাইয়ে সম্পত্তি কিনেছেন। ২০২০ সাল পর্যন্ত তাদের মালিকানায় সেখানে মোট ৯৭২টি সম্পত্তি কেনার তথ্য পাওয়া গেছে। এগুলোর মূল্য সাড়ে ৩১ কোটি ডলার।

দুদকের কর্মকর্তারা জানান, ২০২৩ সালে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় অনুসন্ধানে নেমেছে কমিশন। এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করতে তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে সংস্থাটি।

যাদের তথ্য চেয়েছে দুদক

সংস্থাটি ৭০ জনের তালিকা দিলেও, তাতে মোট ৭৪ জনের নাম রয়েছে। তারা হলেন– আহসানুল করীম, আনজুমান আরা শহীদ, হেফজুল বারী মোহাম্মদ ইকবাল, হুমায়রা সেলিম, জুরান চন্দ্র ভৌমিক, মো. রাব্বী খান, মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, মোহাম্মদ অলিউর রহমান, এস এ খান ইখতেখারুজ্জামান, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সৈয়দ ফাহিম আহমেদ, সৈয়দ হাসনাইন, সৈয়দ মাহমুদুল হক, সৈয়দ রুহুল হক, গোলাম মোহাম্মদ ভূঁইয়া, হাজি মোস্তফা ভূঁইয়া, মনোজ কান্তি পাল, মো. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, মো. মাহবুবুল হক সরকার, মো. সেলিম রেজা, মোহাম্মদ ইলিয়াস বজলুর রহমান, এস ইউ আহমেদ, শেহতাজ মুন্সী খান, এ কে এম ফজলুর রহমান, আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহ, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, গুলজার আলম চৌধুরী, হাসান আশিক তাইমুর ইসলাম, হাসান রেজা মহিদুল ইসলাম, খালেদ মাহমুদ, এম সাজ্জাদ আলম, মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী, মোস্তফা আমির ফয়সাল, রিফাত আলী ভূঁইয়া, সালিমুল হক ঈসা/হাকিম মোহাম্মদ ঈসা, সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান/সৈয়দ কামরুজ্জামান, সৈয়দ সালমান মাসুদ, সৈয়দ সাইমুল হক, আবদুল হাই সরকার, আহমেদ সামীর পাশা, ফাহমিদা শবনম চৈতী, মো. আবুল কালাম, ফাতেমা বেগম কামাল, মোহাম্মদ আল রুমান খান, মায়নুল হক সিদ্দিকী, মুনিয়া আওয়ান, সাদিক হোসেন মো. শাকিল, আবদুল্লাহ মামুন মারুফ, মোহাম্মদ আরমান হোসেন, মোহাম্মদ শওকত হোসেন সিদ্দিকী, মোস্তফা জামাল নাসের, আহমেদ ইমরান চৌধুরী, বিল্লাল হোসেন, এম এ হাশেম, মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন চৌধুরী, নাতাশা নূর মুমু, সৈয়দ মিজান মোহাম্মদ আবু হানিফ সিদ্দিকী, সায়েদা দুররাক সিনদা জারা, আহমেদ ইফজাল চৌধুরী, ফারহানা মোনেম, ফারজানা আনজুম খান, কে এইচ মশিউর রহমান, এম এ সালাম, মো. আলী হোসেন, মোহাম্মদ ইমদাদুল হক ভরসা, মোহাম্মদ ইমরান, মোহাম্মদ রোহেন কবীর, মনজিলা মোর্শেদ, মোহাম্মদ সানাউল্যাহ চৌধুরী, মোহাম্মদ সরফুল ইসলাম, সৈয়দ রফিকুল আলম ও আনিসুজ্জামান চৌধুরী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ