সেই নারীসহ তিনজন গ্রেপ্তার, উদ্ধার হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র
Published: 14th, January 2025 GMT
কক্সবাজারে গুলি করে খুলনার সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী হত্যার ঘটনায় মৌলভীবাজারে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের আগে গোলাম রব্বানীর সঙ্গে হোটেল অবস্থান করা নারীও রয়েছেন। অভিযানে উদ্ধার হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রও। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
গ্রেপ্তার তিনজনেরই বাড়ি খুলনায়। তাঁদের নাম–পরিচয় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনকে মৌলভীবাজার থেকে কক্সবাজার নিয়ে আসা হচ্ছে। আগামীকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ বলেন, ঘটনার পর থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন তথ্যে পুলিশ জানতে পারে ঘটনায় জড়িত নারীসহ কয়েকজন আসামি মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থান করছেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে গত শনিবার থেকে জেলা পুলিশের একটি দল মৌলভীবাজারে অবস্থান করে অভিযান শুরু করেন। একপর্যায়ে গতকাল দিবাগত রাতে মৌলভীবাজার থেকে সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানীর সঙ্গে কক্সবাজার ঘুরতে আসা নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সক্ষম হয়। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটিও।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘গ্রেপ্তার তিনজনই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত। তাঁদের মধ্যে ওই নারী কক্সবাজার ঘুরতে এসে কাউন্সিলর রব্বানীর সঙ্গে হোটেলে উঠেছিলেন। গ্রেপ্তার অপর দুজন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সিগাল হোটেলের সামনে ঝাউবাগানের ভেতরে তৈরি করা কাঠের সেতুর মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় রব্বানীকে। তাঁর বাড়ি খুলনা সিটির দৌলতপুরে। তিনি খুলনা সিটির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর এবং খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের সঙ্গে তাঁকেও অপসারণ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এর আগে খুলনা সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার এবং কক্সবাজার শহরের বাসিন্দা মেজবাউল হককে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গত শনিবার দুজনকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘনায় ‘বালুখোকো’ কানা জহির-মিজি গ্রুপের গোলাগুলি, নিহত দুই
চাঁদপুর-মুন্সীগঞ্জ সীমান্ত এলাকার মেঘনা নদীতে বালু মহাল ও বালু উত্তোলনের দ্বন্দ্বের জের ধরে বালুখেকো কানা জহির ও কিবরিয়া মিজি গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ বলছে, চাঁদপুরের মতলবের উত্তর থানার মোহনপুর চরে মেঘনা নদীর মুখে ড্রেজার ও বাল্কহেড নোঙর করা ছিল। ওই ড্রেজার ও বাল্কহেডে বালুখেকো কানা জহিরের লোকজন অবস্থান নেয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্পিডবোটে আরেক বালুখেকো কিবরিয়া মিজির লোকজন এসে তাদের লক্ষ্য করে আকস্মিক গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় কানা জহিরের লোকজন ড্রেজার ও বাল্কহেড থেকে পাল্টা গুলি ছুড়লে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন।
আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক গুলিবিদ্ধ রিফাত খান (২৮) ও রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার খবর শুনে হাসপাতালে ভিড় করেন তাদের স্বজনরা।
গুলিবিদ্ধ আইয়ুব আলীর অবস্থা গুরুতর, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রিফাতের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উপজেলায় এবং রাসেলের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ সদরের ভাষানচর এলাকায়।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বিল্লাল হোসেন বলেন, ঘটনাটি চাঁদপুর-মোহনপুর এলাকার মেঘনা নদীতে ঘটেছে। বালু মহালের দ্বন্দ্বের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে এনে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে সংবাদ পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে এসে মৃতদেহ হেফাজতে নেয়।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মাসুদুর রহমান রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে দুজন হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা যান। নিহত দুজনের মধ্যে একজনের বুকের ডান পাশে ও অন্যজনের বুকের বাঁ পাশে গুলির চিহ্ন রয়েছে। আহত একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/রতন/রাসেল