সম্মেলনবিরোধী সমাবেশ করার অভিযোগ এনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দুই নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে তাঁদের এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয়ে নোটিশের লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যাঁদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক। তাঁরা দুজনই জেলা বিএনপির ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। এ কমিটির নেতৃত্ব নিয়ে জেলা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত। একটি পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন হাফিজুর ও জহিরুল হক। অন্য অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন আহ্বায়ক আবদুল মান্নান ও সিরাজুল ইসলাম। দুই বছর ধরে উভয় পক্ষ দলীয় সব কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করে আসছে। সম্মেলন ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ আরও বেড়েছে।

নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৮ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন। কিন্তু নানা অভিযোগে এ সম্মেলনের বিরোধিতা করে আসছে হাফিজুর রহমান ও জহিরুল হকের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির একটি বড় অংশ। গত রোববার সমাবেশ করে তারা এ সম্মেলন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে। ১৬ জানুয়ারি সমাবেশের ডাক দিয়েছে তারা।

কারণ দর্শানোর নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, ৮ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উজান-ভাটি রেস্টুরেন্টে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা (বুলু), সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক খালেদ হোসেন মাহবুব ওরফে শ্যামল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো.

মোস্তাক মিয়া, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান, সদস্যসচিব সিরাজুল ইসলাম, সদস্য হাফিজুর রহমান মোল্লা ও জহিরুল হকের সমন্বয়ে একটি যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে হাফিজুর রহমান ও জহিরুল হকের পক্ষ থেকে কিছু দাবি উত্থাপিত হয়।

দাবিগুলো আলোচনার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের পূর্বে হাফিজুর ও জহিরুল সম্মেলনবিরোধী সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছেন, যা সম্পূর্ণরূপে সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপ। এ বিষয়ে কেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার যথাযথ কারণ দর্শিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে হাফিজুর রহমান মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছি। উত্তর প্রস্তুত করছি। তবে আগামী ১৬ জানুয়ারি বিএনপির আমরণ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকবে।’

ফেসবুকের মাধ্যমে কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন জহিরুল হক। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে কারণ দর্শানোর জবাব লেখা হয়ে গেছে। আমরা সংগঠন ও সম্মেলনবিরোধী কোনো সমাবেশ করিনি। রোববার আমরা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা দাবি বাস্তবায়নে সমাবেশ করেছি। ব্যানারে সেটিই লেখা ছিল। আমরা কোনো শর্ত ভঙ্গ করি নাই। আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি-সদস্যসচিব পাঁচটির মধ্যে তিনটি শর্ত ভঙ্গ করেছেন। তাই আমাদের কারণ দর্শানো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হচ্ছে।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষক ও সাংবাদিক জগদীশ চন্দ্র ঘোষের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

ফরিদপুরের প্রবীণ শিক্ষক ও সাংবাদিক জগদীশ চন্দ্র ঘোষ ওরফে তারাপদ- এর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার পালিত হয়েছে। দিনটি স্মরণে তাঁর ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলীর বাসভবনে গীতাপাঠসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

এ ছাড়া দুপুরে স্থানীয় রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম ও ফরিদপুরে শ্রীঅঙ্গনে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২০২১ সালের ২ এপ্রিল ৯৩ বছর বয়সে তিনি মারা যান।

১৯২৮ সালের ৬ আগস্ট মানিকগঞ্জের কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্ম হয় জগদীশ চন্দ্র ঘোষের। ১৯৭১ সালের ২ মে পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় তাঁর পরিবার। ওই দিন তাঁর বাবা যোগেশ চন্দ্র ঘোষ, ভাই গৌরগোপাল ঘোষ ও কাকাতো ভাই বাবলু ঘোষ গণহত্যার শিকার হন।

জগদীশ চন্দ্র ঘোষ শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংবাদিকতা করতেন। দীর্ঘ ৪০ বছর তিনি বাংলাদেশ অবজারভার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া নাটকসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন তিনি। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ