তারুণ্যের উৎসবের সমাপনী দিনে কাবাডি খেলার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। খেলা শুরুর পর এক পক্ষের খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা রেফারির প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন। বিষয়টি নিয়ে একপর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি দলের খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা হাতাহাতি, মারামারি এবং চেয়ার ছোড়াছুড়িতে লিপ্ত হন। এতে পণ্ড হয়ে যায় খেলা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ীতে এ ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মারামারিতে কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাঁদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারুণ্যের উৎসবের সমাপনী দিনে উপজেলা কমপ্লেক্স চত্বরে কাবাডি খেলার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। খেলায় চাষিরহাট নুরুল হক উচ্চবিদ্যালয়ের সঙ্গে সোনাইমুড়ী মডেল উচ্চবিদ্যালয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সোনাইমুড়ী মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা অভিযোগ তোলেন রেফারি চাষিরহাট নুরুল হক উচ্চবিদ্যালয়ের পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করছেন। বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তা মারামারি ও চেয়ার ছোড়াছুড়িতে গড়ায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুরুতে আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। খবর পেয়ে সোনাইমুড়ী থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে দুই দিকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মারামারির কারণে খেলাটি পণ্ড হয়ে যায়। পুলিশি পাহারায় চাষিরহাট নুরুল হক উচ্চবিদ্যালয়ের খেলোয়াড়, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এলাকায় পাঠানো হয়। মারামারির সময় ক্রীড়া সংস্থার এক সদস্যের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য শহিদ উল্লা প্রথম আলোকে বলেন, খেলায় যাঁদের রেফারি হিসেবে রাখা হয়েছে, তাঁরা সবাই চাষিরহাট নুরুল হক উচ্চবিদ্যালয়ের পক্ষের। তাঁরা খেলায় ওই দলের পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করছিলেন। বিষয়টি নিয়ে প্রতিপক্ষ প্রতিবাদ করলে প্রথম দুই পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি এবং পরে মারামারি লাগে। এ সময় তিনি এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা পরিস্থিতির সামাল দেন, না হলে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল মারামারি লাগত।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম উপজেলা পরিষদ মাঠে কাবাডি খেলা নিয়ে দুই পক্ষের মারামারির ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, খেলায় রেফারির পক্ষপাতিত্বমূলক সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে চাষিরহাট নুরুল হক উচ্চবিদ্যালয় ও সোনাইমুড়ী মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের খেলোয়াড় ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারি বাধে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দুই পক্ষকে দুই দিকে সরিয়ে দেয়। ঘটনার বিষয়ে জানতে ইউএনও নাসরিন আকতারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের সংঘর্ষ, আহত ১৫ 

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার শোলাকুড়ায় সালিশি বৈঠকে পক্ষপাতিত্বের জেরে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন এবং শোলাকুড়া বাজারের ১৮-২০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। 

সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েক দফার সংঘর্ষ চলাকালে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বাংড়া ইউনিয়নের পীরবাড়িতে একই ইউনিয়নের মুলিয়া এবং সাকরাইল গ্রামের লোকজনদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। এ নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি মীমাংসা করতে সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে মুলিয়া গ্রামে একটি সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ বিরোধ মিটিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দেন। বৈঠক চলাকালে শুকুর মাহমুদের পক্ষপাতিত্বমূলক কথার জের ধরে পুনরায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে বিএনপি নেতা শুকুর মাহমুদ গুরুতর আহত হন। এ খবর তার নিজ গ্রাম সহদেবপুর পৌঁছালে তারাও এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এরপর ত্রিমুখী সংঘর্ষে সালিশি বৈঠকে আসা স্থানীয় বিএনপির অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হন। এছাড়াও কয়েক জন ব্যক্তি সামান্য আহত হন। এ সময় শোলাকুড়া বাজারে হামলা চালিয়ে ১৮-২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং দোকানগুলোতে লুটপাট চালানো হয়।

এদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের তিন দিকে তিন গ্রামের বাসিন্দারা অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এসময় ওই মহাসড়কে সকল প্রকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আনে।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে থানায় কেউ কোন অভিযোগ দাখিল করেনি।

ঢাকা/কাওছার/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের সংঘর্ষ, আহত ১৫ 
  • বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত
  • অস্কার: সেরা সিনেমা ‘আনোরা’
  • সেরা সিনেমা ‘আনোরা’
  • ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যু
  • বাগবিতণ্ডা-হাতাহাতির একপর্যায়ে যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
  • টিএসসিতে সংগীত উৎসব
  • রমজানে গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন প্রস্তাবে রাজি ইসরায়েল
  • মুনীর চৌধুরী জাতীয় নাট্য উৎসবের মঞ্চে ‘ইংগিত’
  • বগুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় মা–মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, অভিযোগ মেয়ের সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে