বেসরকারি সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে পরবর্তী তিন বছরের জন্য পুনর্নিয়োগ পেয়েছেন মাসরুর আরেফিন।

সম্প্রতি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক তার এ নিয়োগ অনুমোদন করেছে।

সিটি ব্যাংক সোমবার (১৩ জানুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আমানত বেড়েছে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর

চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর কার কত মুনাফা

এতে বলা হয়, মাসরুর আরেফিন ২০১৯ সাল থেকে টানা দুই মেয়াদে এমডি ও সিইওর দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তৃতীয় মেয়াদে তিনি এ পদে নিয়োগ পেলেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ছয় বছরে মাসরুর আরেফিন সিটি ব্যাংককে ভিন্নতর উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। এ সময় ব্যাংকের বার্ষিক আয় ১ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকায় এবং পরিচালন মুনাফা ৬৬৮ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার ২৮৭ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। তার নেতৃত্বে সিটি ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার মুনাফার ক্লাবে প্রবেশ করেছে।

গত ছয় বছরে ব্যাংকের আয়-ব্যয়ের অনুপাত ৫৮ দশমিক ১ শতাংশ থেকে কমে ৪২ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে। ব্যাংকের বৈদেশিক বাণিজ্য বছরে ৩৬০ কোটি (৩.

৬ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ৭০২ কোটি (৭.০২ বিলিয়ন) ডলার হয়েছে বলে জানায় সিটি ব্যাংক। বলা হয়, গত ছয় বছরে ব্যাংকের মোট আমানত ২১ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৫২ হাজার কোটি টাকায় এবং ঋণ পোর্টফোলিও ২৩ হাজার কোটি টাকা থেকে ৪৫ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এ ছাড়া ২০২৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের মন্দ ঋণের অনুপাত ৫ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে, আর শ্রেণীকৃত ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের অনুপাত ৭২ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১২২ শতাংশে উঠেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাসরুর আরেফিনের নেতৃত্বে সিটি ব্যাংক আর্থিক অন্তর্ভুক্তির এজেন্ডা নিয়ে শহরভিত্তিক ব্যাংক থেকে দেশের আপামর মানুষের ব্যাংক হওয়ার পথে এগিয়েছে। তিনি ব্যাংকে ডিজিটাল ন্যানো লোন, এজেন্ট ব্যাংকিং এবং ক্ষুদ্র ও মাইক্রোফাইন্যান্স বিভাগ চালু করেছেন। পাশাপাশি সিটিটাচ ডিজিটাল ব্যাংকিংকে আরও জনপ্রিয় করার কাজ করেছেন। ২০২৪ সালে সিটিটাচে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে।

মাসরুর আরেফিন ১৯৯৫ সালে এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে যোগ দিয়ে ব্যাংকিং পেশা শুরু করেন। ৩০ বছরের কর্মজীবনে তিনি এএনজেড ব্যাংক মেলবোর্ন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক কাতার, সিটি ব্যাংক এনএ, আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।

অভিজ্ঞ এই ব্যাংকার বরিশাল ক্যাডেট কলেজের সাবেক ক্যাডেট। তিনি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর, মেলবোর্নের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ এবং পরে ফ্রান্সের ইনসিয়াড বিজনেস স্কুল থেকে উচ্চতর আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপরে কোর্স সম্পন্ন করেন।

মাসরুর আরেফিন একজন ঔপন্যাসিক, কবি এবং অনুবাদক হিসেবেও পরিচিত।

ঢাকা/সুমন/সাইফ

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

দেবীগঞ্জে দেয়ালে দেয়ালে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে লেখা হয়েছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে পৌরসভার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে এই লেখা সাধারণ মানুষের নজরে আসে। তবে, কারা এই স্লোগান লিখেছেন, তা কেউ দেখেননি।

পৌরসভার শহীদ আব্দুল মান্নান সড়ক সংলগ্ন উপজেলা পরিষদ চত্বর, নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের দেয়ালে লাল, কালো ও নীল রঙের কালি দিয়ে ‘জয় বাংলা’, ‘জয় শেখ হাসিনা’ এবং ‘শেখ হাসিনা তুমি আস্থা’- এমন স্লোগান লেখা হয়েছে।

এদিকে, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অফিসিয়াল পেজ থেকে আজ দুপুর ১টায় দেবীগঞ্জের বিভিন্ন দেয়ালে লেখা স্লোগানের ছবি ও ভিডিও শেয়ার করা হয়। এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

দেবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান সুমন বলেন, ‘নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রশাসনকে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রাতের আঁধারে দেয়ালে দেয়ালে ‘জয় বাংলা’ লিখছে তারা। উপজেলা ছাত্রদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সজাগ রয়েছে।"

প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড় জেলা সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী বলেন, ‍“গত ৫ আগস্টের পর শুধু দেবীগঞ্জ নয়, পুরো পঞ্চগড়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। দেবীগঞ্জ, বোদা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে এসব দেওয়াল লিখন লক্ষ্য করা গেলেও প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা নেই। এসব লেখা ’২৪ বিপ্লবের চেতনাকে ম্লান করার চেষ্টা করছে। যা রুখতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান- তাদের (ছাত্রলীগ নেতাকর্মী) দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। তাদের অপতৎপরতা রুখে দিতে পঞ্চগড় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।”

দেবীগঞ্জ থানার ওসি সোয়েল রানা মোবাইলে বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে আসছে। এখনি কোনো মন্তব্য করতে পারছি না। বিষয়টি দেখছি আমরা।”

ঢাকা/নাঈম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ