এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরা, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন জায়গায় থাকা জমি, ফ্ল্যাট, প্লট, ভবনসহ ২০০ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের ৬৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করারও আদেশ দিয়েছেন আদালত।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.

জাকির হোসেন আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রেজাউল করিম।

দুদক ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ১৬টি স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক (ডিডি) আবু সাঈদ। শুনানি নিয়ে আদালত এসব সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, ক্রোকের আদেশ পাওয়া ১৬টি স্থাবর সম্পদের দলিলমূল্য ২০০ কোটি টাকা। এসব সম্পদের মধ্যে রয়েছে এস আলমের নামে গুলশানে এক বিঘা জমি। জমির দলিলমূল্য ২০ কোটি টাকা। আরও রয়েছে মোহাম্মদপুরে এক বিঘা জমি, ধানমন্ডিতে চারতলা আবাসিক ভবন, গুলশানের ৫টি ফ্ল্যাট, উত্তরায় সাততলা ভবন, গুলশানে প্লট এবং বসুন্ধরায় কয়েক একর জমি।

আরও পড়ুনএস আলম ও পরিবারের ১২৫টি ব্যাংক হিসাবে আছে সাড়ে ২২ কোটি টাকা, অবরুদ্ধের আদেশ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

একই সঙ্গে যেই ৬৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোতে ২৫ কোটি টাকা রয়েছে। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ১২৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। 

দুদকের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে আদালতকে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস, সাইপ্রাস ও অন্যান্য দেশে ১ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুদক। এ সময় তাঁদের নামে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১২৫টি ব্যাংক হিসাবে ২২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৯ হাজার ১৯১ টাকা পাওয়া যায়।

গত ৭ অক্টোবর মোহাম্মদ সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী, সন্তান, ভাইসহ ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

আরও পড়ুনএস আলমের লাখ কোটি টাকা ঋণ, ব্যাংকে জমা ২৬ হাজার কোটি০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’

আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।

উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ