ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেছেন, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন কবে হবে, সেটা সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো ঠিক করবে। নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে চান না।

আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন গোয়েন লুইস। তিনি এদিন বাংলাদেশ সফরে আসা জাতিসংঘের একটি বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলকে নিয়ে পররাষ্ট্রসচিব এম জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কারিগরি সহযোগিতা দিতে আগ্রহী জাতিসংঘ। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও বৈঠক করেছি। কমিশনের চাহিদা অনুয়ায়ী আমরা সহযোগিতা দেব। এ লক্ষ্যে আমাদের প্রয়োজনীয়তা সমীক্ষা প্রতিনিধিদল কাজ করবে।’

গোয়েন লুইস জানান, নির্বাচনে সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয়তা সমীক্ষা প্রতিনিধিদল আগামীকাল চট্টগ্রাম যাবে। সেখানে বিভিন্ন অংশীজন, যেমন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করবে। প্রতিনিধিদল ফিরে এসে প্রতিবেদন দেবে।

এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি বলেন, ‘নির্বাচন কখন হবে, সেটা সরকার ও  রাজনৈতিক দলগুলো ঠিক করবে। আমরা সময়সীমা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আমরা নির্বাচনে শুধু কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দিতে চাই।’

জাতিসংঘের এই সহযোগিতা স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচন উভয় ক্ষেত্রে চাওয়া হয়েছে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে গোয়েন লুইস বলেন, তাঁদের কাছে শুধু বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে চলতি বছরের শেষের দিকে অথবা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় নির্বাচন করা যেতে পারে।

তবে তার আগেই নির্বাচন চাইছে বিএনপি। চলতি বছরের জুলাই-আগস্টের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব বলে মনে করছে দলটি। এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

এ ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই। এটা গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা মনে করি, এ বছরের মাঝামাঝি অর্থাৎ জুলাই-আগস্টের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব। এ কারণে আমরা সরকার, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এই বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবস্থা নিতে পারি।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যাতায়াতে সময় বাড়ছে ৯ আন্তনগর ট্রেনের

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যেতে চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের এখন সময় লাগে ৬ ঘণ্টা ১০ মিনিট। এই আন্তনগর ট্রেন সকাল ছয়টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। পৌঁছায় দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে। তবে রেলের নতুন সময়সূচিতে এই ট্রেনের গন্তব্যে পৌঁছার সময় বাড়তে যাচ্ছে। তখন পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে। অর্থাৎ আগের চেয়ে বাড়তি ৩০ মিনিট সময় লাগবে যাত্রীদের।

শুধু চট্টলা এক্সপ্রেস নয়, রেলওয়ের নতুন সময়সূচি অনুযায়ী গন্তব্যে যাতায়াতে আরও আট জোড়া (১৬টি) আন্তনগর ট্রেনের সময় বাড়ছে। অবশ্য আগের চেয়ে সময় কমবে ৯ জোড়া ট্রেনের। আর গন্তব্যে পৌঁছার ক্ষেত্রে সময়ের পরিবর্তন হবে না ১১ জোড়া ট্রেনের।

সম্প্রতি রেলওয়ে নতুন সময়সূচি চূড়ান্ত করেছে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল। রেলের ভাষায় এই সময়সূচিকে ‘ওয়ার্কিং টাইম টেবিল’ বলা হয়। এই সময়সূচি মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান রেলওয়ের কর্মকর্তারা। বর্তমানে ট্রেন চলাচল করছে ওয়ার্কিং টাইম টেবিল-৫৩ অনুযায়ী। যা ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।

ট্রেন পরিচালনার সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে দুটি অঞ্চলে বিভক্ত। একটি অঞ্চল যমুনা নদীর পূর্ব পাশে, যা পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে (ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট-ময়মনসিংহ বিভাগ) হিসেবে পরিচিত। আর যমুনা নদীর পশ্চিম পাশ নিয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে গঠিত (রাজশাহী-রংপুর-খুলনা বিভাগ)। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের অধীন ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন রুটে বর্তমানে ২৯ জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে।

নতুন সময়সূচিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট রুটে এক জোড়া করে বিরতিহীন আন্তনগর, ঢাকা-নোয়াখালী রুটে এক জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচলের সময় রাখা হয়েছে। তবে ইঞ্জিন ও কোচ-সংকটের কারণে শুরুতে তা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। তবে কোচ ও ইঞ্জিন পেলে তা চালু করা হবে।

সময় বেশি লাগবে ৫ থেকে ৪০ মিনিট

নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, আগের চেয়ে সবচেয়ে বেশি বাড়তি সময় লাগবে জামালপুর এক্সপ্রেসের। ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে চলাচলরত জামালপুর এক্সপ্রেস বর্তমানে সকাল ১০টায় ঢাকা স্টেশন ছাড়ে। ভূঞাপুরে পৌঁছায় বিকেল চারটায়। অর্থাৎ সময় লাগে ছয় ঘণ্টা। তবে নতুন সময়সূচি অনুযায়ী লাগবে ৬ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। এদিকে ভূঞাপুর থেকে আগে বিকেল সাড়ে চারটায় ছাড়লেও এখন ছাড়বে বিকেল সোয়া পাঁচটায়।

ঢাকা থেকে তারাকান্দির উদ্দেশে যমুনা এক্সপ্রেস এখন ছেড়ে যায় বিকেল পৌনে পাঁচটায়। পৌঁছায় রাত ১০টা ৫০ মিনিটে। সময় লাগে ছয় ঘণ্টা পাঁচ মিনিট। সামনে লাগবে ৬ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। ঢাকা-তারাকান্দি রুটে চলাচলরত আরেক আন্তনগর ট্রেন অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসের বাড়তি সময় লাগবে ১০ মিনিট। এখন ঢাকা থেকে ছাড়ে বেলা সাড়ে ১১টায়, পৌঁছায় বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে। আর নতুন সময়ে ছাড়বে বেলা সাড়ে ১১টায়, পৌঁছাবে বিকেল ৫টায়।

চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরগামী মেঘনা এক্সপ্রেস এখন ছাড়বে বিকেল সোয়া পাঁচটায়। পৌঁছাবে ৯টা ২৫ মিনিটে। অর্থাৎ সময় লাগবে ৪ ঘণ্টা ১০ মিনিট। অবশ্য বর্তমানে সময় লাগে চার ঘণ্টা। ঢাকা থেকে দেওয়ানগঞ্জগামী তিস্তা এক্সপ্রেসের এখন সময় লাগে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা। নতুন সময়সূচিতে লাগবে ৫ ঘণ্টা ৫০ মিনিট। এখনকার মতো সকাল সাড়ে ৭টায় ট্রেন ছাড়বে, তবে পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে।

ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের এখন সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা পাঁচ মিনিট। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী এই ট্রেন ছাড়বে বেলা সোয়া ১টায়, পৌঁছাবে ৬টা ৪০ মিনিটে। অর্থাৎ সময় লাগবে ৫ ঘণ্টা ২৫ মিনিট। ঢাকা-মোহনগঞ্জ রুটের আরেক আন্তনগর ট্রেন হাওর এক্সপ্রেসের বাড়তি সময় লাগবে ১০ মিনিট করে।

ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে চলাচলরত কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের গন্তব্যে পৌঁছার সময় বাড়ানো হয়েছে পাঁচ মিনিট। আগের মতো কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়বে বিকেল চারটায়। তবে ঢাকায় পৌঁছাবে পাঁচ মিনিট দেরিতে রাত আটটায়।

কম সময়ে পৌঁছাবে যেসব ট্রেন

নতুন সময়সূচি অনুযায়ী ৯ জোড়া ট্রেনের গন্তব্যে পৌঁছার সময় কমবে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী গোধূলী এক্সপ্রেস বেলা ৩টায় ছেড়ে রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে পৌঁছায়। ভবিষ্যতে ১০ মিনিট কমে পৌঁছাবে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে।

চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেসের গন্তব্যে পৌঁছাতে ৩৫ মিনিট কম সময় লাগবে। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে পৌঁছাবে বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটে। এখন পৌঁছায় বিকেল সাড়ে চারটায়।

মহানগর এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম স্টেশন ছাড়বে দুপুর সাড়ে ১২টায়, ঢাকায় পৌঁছাবে ৬টা ৪০ মিনিটে। আগের চেয়ে পাঁচ মিনিট কম সময় লাগবে গন্তব্যে পৌঁছাতে। একইভাবে তূর্ণা এক্সপ্রেস বেলা দেড়টায় ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছাবে বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে। এখন পৌঁছায় ৫টা ১৫ মিনিটে। চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বিজয় এক্সপ্রেস জামালপুরে পৌঁছাবে ১০ মিনিট কম সময়ে, সন্ধ্যা ৬টায়। এই ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে ছাড়বে সকাল সোয়া নয়টায়।

সিলেট থেকে ঢাকাগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস আগের মতোই দুপুর ১২টায় ছাড়বে। তবে আগের চেয়ে ১০ মিনিট কমে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় পৌঁছাবে। আরেক আন্তনগর ট্রেন কালনী এক্সপ্রেস ও উপবন এক্সপ্রেস সিলেট থেকে ঢাকায় পৌঁছাবে আগের চেয়ে পাঁচ মিনিট কম সময়ে। সিলেট থেকে ট্রেন দুটি ছাড়বে যথাক্রমে সকাল সোয়া ৬টায় এবং রাত সাড়ে ১১টায়। কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী এগারসিন্ধুর প্রভাতী ছাড়বে সকাল সাড়ে ৬টায়, ঢাকায় পৌঁছাবে সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে। সময় কমবে পাঁচ মিনিট।

এদিকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস এখন সকাল সাড়ে সাতটায় ছাড়লেও পরে ছাড়বে সকাল সাতটায়। আর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ছাড়বে বিকেল পাঁচটা থেকে। এখন ছাড়ে বিকেল পৌনে পাঁচটায়। চাঁদপুরগামী মেঘনা এক্সপ্রেসের যাত্রার সময় ৪৫ মিনিটে এগিয়ে এনে বিকেল সোয়া ৫টা করা হয়েছে। কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেসের যাত্রার সময় ১০ মিনিট এগিয়ে আনা হয়েছে। এখন দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ছাড়ে, নতুন সময়ে ছাড়বে দুপুর সাড়ে ১২টায়।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওপিএস) মোহাম্মদ শহিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন রুটে যাতায়াতের সময় কমানো হয়েছে। তবে ময়মনসিংহ অঞ্চল রেললাইন ও সেতুর সংস্কারকাজ চলছে। এ কারণে ওই অঞ্চলের কয়েকটি ট্রেনের গন্তব্যে পৌঁছতে আগের চেয়ে বেশি সময় লাগবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণ নেওয়ার আগে যা ভাববেন
  • রমজানে পুঁজিবাজারে নতুন সময়সূচিতে লেনদেন শুরু
  • আজ থেকে ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেন নতুন সময়সূচিতে
  • আজ থেকে নতুন সময়সূচিতে চলবে অফিস-ব্যাংক
  • নতুন ডেবিট কার্ড পেতে যা করবেন
  • রোজায় মেট্রোরেলে ২৫০ মিলি পানি নেয়া যাবে
  • রোজায় মেট্রোরেলে নেওয়া যাবে পানির বোতল
  • যাতায়াতে সময় বাড়ছে ৯ আন্তনগর ট্রেনের
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু আজ, জেনে নিন শাটলের সূচি