পঞ্চগড়ে রেলপথে পড়ে ছিল নারীর খণ্ডিত মরদেহ, পুলিশের ধারণা ধর্ষণের পর হত্যা
Published: 14th, January 2025 GMT
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় রেলপথের ওপর থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ট্রেনে কাটা পড়লেও ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে দুর্ঘটনা হিসেবে দেখাতে রেলপথে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের কিসমত রেলওয়ে স্টেশনের পাশে মালিগাঁও রেলঘুমটি এলাকায় রেলপথের ওপরে খণ্ডবিখণ্ড লাশ দেখে আটোয়ারী থানা-পুলিশে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। দুপুর পর্যন্ত দিনাজপুর রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। নিহত নারীর পরিচয় শনাক্ত ও ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা কাজ করছেন।
আজ ভোরে রাজশাহী থেকে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে ছেড়ে আসা ‘বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস’ ট্রেনে কাটা পড়ে ওই নারী খণ্ডবিখণ্ড হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। লাশ পড়ে থাকার স্থান থেকে প্রায় ৩০ গজ পূর্বে একটি গাছের নিচে জমাট বাঁধা রক্ত দেখা যায়। এ সময় সেখান থেকে নারীদের ব্যবহৃত একটি পায়জামা ও একটি ছোট ছুরি জব্দ করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু জাহেদ বলেন, সকালে মালিগাঁও রেলঘুমটি এলাকায় রেলপথে এক নারীর খণ্ডিত লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেন এলাকাবাসী। পরে ঘটনাস্থলে আটোয়ারী থানা-পুলিশ এসে রেলওয়ে পুলিশের দিনাজপুর থানায় খবর দেয়। তিনি বলেন, ওই নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। এমনকি দুপুর পর্যন্ত তাঁর খোঁজে কেউ আসেননি। আশপাশের এলাকার কোনো নারী নিখোঁজ হওয়ারও খবর পাওয়া যায়নি।
রেলওয়ে দিনাজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আটোয়ারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারী মারা যাওয়ার খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। খণ্ডবিখণ্ড হয়ে যাওয়া লাশটি উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
দুপুরে পঞ্চগড়ের সহকারী পুলিশ সুপার (দেবীগঞ্জ সার্কেল) রুনা লায়লা প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা যান। ট্রেনে কাটা পড়ে লাশটি টুকরা টুকরা হয়ে যাওয়ায় সহজে কেউ চিনতে পারছেন না। অজ্ঞাতপরিচয় ওই নারীর লাশ পাওয়ার স্থান থেকে কিছুটা দূরে রক্ত দেখা গেছে। সেখান থেকে একটি পায়জামা ও একটি ছোট ছুরি জব্দ করা হয়েছে। ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে ঘটনাটি দুর্ঘটনা হিসেবে দেখাতে ট্রেনের নিচে ফেলে নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। লাশের পরিচয় শনাক্তে সিআইডি ও পিবিআইয়ের সদস্যরা কাজ করছেন। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কাঁদতে কাঁদতে গাজার বাসিন্দা বললেন, ‘আমরা তো সব হারিয়েছি, ঈদটা কষ্টের’
ফিলিস্তিনের গাজায় রোববার পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তবে ইসরায়েলের নৃশংস হামলায় বিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে এ দিন ছিল না উৎসবের আমেজ। ঈদের দিনও সেখানে নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। মুসলিমদের কাছে খুশির এ দিনটিতেও গাজায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৫ ফিলিস্তিনি।
দীর্ঘ ১৭ মাস ধরে চলা হামলায় গাজায় আর কোনো মসজিদ অবশিষ্ট নেই বললেই চলে। রোববার তাই উপত্যকাটির বাসিন্দাদের ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়েছে ধ্বংস হয়ে যাওয়া মসজিদের বাইরে। আগের দিনে গাজার যেসব শিশু নতুন পোশাক পরে আনন্দ করত, তারা এখন ক্ষুধায়-আতঙ্কে কাতর। ঈদ উপলক্ষে নেই তেমন রান্নার আয়োজন।
ইসরায়েলের হামলা শুরুর আগে গাজার ফিলিস্তিনিরা ঈদের সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উদ্যাপন করতেন। তবে এখনকার চিত্র ভিন্ন। বহু গাজাবাসী তাঁদের পরিবারের সদস্যকে হারিয়েছেন। রোববার অনেককে দেখা যায় প্রিয়জনের কবরের পাশে। অনেকে হাজির হন হাসপাতালের মর্গে—শেষবারের মতো কাছের মানুষের মরদেহটি দেখতে।
ইসরায়েলের হামলায় গাজার বাসিন্দা আদেল আল-শায়ের তাঁর পরিবারের ২০ সদস্যকে হারিয়েছেন। মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় ঈদের নামাজ শেষে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বলেন, ‘এই ঈদটা কষ্টের। আমরা আমাদের ভালোবাসার মানুষগুলোকে হারিয়েছি। আমাদের সন্তান, আমাদের জীবন, আমাদের ভবিষ্যৎ—সবকিছু... আমরা তো সব হারিয়েছি।’
ঈদের দিন স্বজনের কবরের পাশে গাজা নগরীর এক নারী