গ্যাসের রান্নায় দুর্ঘটনা রোধে ১৭টি নিরাপত্তা মান প্রণয়ন করছে বিএসটিআই
Published: 14th, January 2025 GMT
বাসাবাড়িতে রান্নার কাজে গ্যাসের চুলা ব্যবহারের সময় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়। এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে ১৭ ধরনের সেফটি স্ট্যান্ডার্ড বা নিরাপত্তা মান প্রণয়ন করতে যাচ্ছে পণ্যের জাতীয় মান প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘সেফটি স্ট্যান্ডার্ডস ফর ডোমেস্টিক গ্যাস কুকিং অ্যাপ্লায়েন্সেস’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তথ্য জানান বিএসটিআইর মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম।
বিএসটিআই, পেট্রোবাংলা ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) যৌথভাবে কর্মশালাটির আয়োজন করে। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিঅং ও পেট্রোবাংলার পরিচালক (পরিকল্পনা) আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিএসটিআইর পরিচালক (মান) মো.
বিদায়ী ২০২৪ সালের শেষ দিকে রাজধানীর মিরপুরে গ্যাসের চুলায় রান্নার সময় দুর্ঘটনায় খলিল–দম্পতির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ ধরনের আরও কয়েকটি দুর্ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরেন বিএসটিআইর মহাপরিচালক ফেরদৌস আলম। তিনি বলেন, গৃহস্থালিতে গ্যাসের চুলায় রান্নার সময় দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ হলো সেফটি কুকিং অ্যাপ্লায়েন্স সম্পর্কে সচেতনতা না থাকা। দেরিতে হলেও বিএসটিআই এ ধরনের সেফটি স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়ন করতে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সংগতি রেখে এসব স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান বিএসটিআইর মহাপরিচালক। তিনি বলেন, স্ট্যান্ডার্ডগুলো ইতিমধ্যে বিএসটিআইর টেকনিক্যাল কমিটির অনুমোদন পেয়েছে। এরপর উচ্চতর বিভাগীয় কমিটিতে অনুমোদিত পেলে তা বাস্তবায়ন শুরু করবে বিএসটিআই। এসব নিরাপত্তা মান বাস্তবায়ন হলে গ্যাসের চুলার রান্নায় দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব হবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসটিআইর উপপরিচালক (প্রকৌশল) মো. মুরসালিন মাহফুজ। এ ছাড়া আরও বক্তব্য দেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির সহকারী অধ্যাপক মাসরুর-উর-রহমান, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক আবদুর রহিম, জেএমআই এলপিজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী লিয়াকত আলী প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগে নীতিমালা কেন প্রণয়ন করা হবে না: হাইকোর্ট
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার সম্পর্কে বলা রয়েছে। উল্লেখিত ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালা (গাইডলাইন) কেন প্রণয়ন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল দেন। উল্লেখিত ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়নে নিষ্ক্রিয়তা সংবিধানের ৭, ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হিসেবে কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে, কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেওয়া যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির রয়েছে। এই ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই উল্লেখ করে এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে গত ২০ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যটার্নি জেনারেল মোহাম্মদ মহসিন কবির।
পরে আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিবসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
রিট আবেদনকারী আইনজীবীর ভাষ্য, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি সাজাপ্রাপ্ত কাউকে ক্ষমা করতে পারেন। এই ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে ইতিমধ্যে অনেক সাজাপ্রাপ্ত আসামি ক্ষমা পেয়েছেন, এর বেশির ভাগ হত্যা মামলার আসামি। ক্ষমা করার এই ক্ষমতা প্রয়োগে কোনো নীতিমালা নেই। অর্থাৎ কিসের ভিত্তিতে ও কোন কোন দিক বিবেচনায় ক্ষমা করা হয়—এ–সংক্রান্ত কোনো নীতিমালা নেই। এ ছাড়া বিভিন্ন ঘটনাদৃষ্টে সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অপব্যবহার হয়, যেখানে রাজনৈতিক আদর্শ বিবেচনায় দণ্ডিতকে ক্ষমা করতেও দেখা যায়। যা সংবিধানের ৭, ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সে জন্য ক্ষমা করার এই ক্ষমতা প্রয়োগে নীতিমালা প্রণয়ন আবশ্যক। তাই জনস্বার্থে রিট করা হয়।