বণিক বাজারের মহাসমারোহে গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত
Published: 14th, January 2025 GMT
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উদ্যোক্তা উন্নয়ন ফোরামের আয়োজনে এবং ডাকটাইমের সৌজন্যে বণিক বাজার প্রতিযোগিতার মহাসমারোহে গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনব্যাপী এই আয়োজন ছিল নবীন উদ্যোক্তাদের সৃজনশীলতা এবং ব্যবসায়িক দক্ষতার প্রদর্শনী। জমকালো এই আয়োজনে গিফট পার্টনার ছিল ইউআইএইচপি।
শীর্ষ ১৫টি দল তাদের চূড়ান্ত উপস্থাপনা প্রদর্শন করে অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে। প্রতিযোগীদের বিচার করেন বিশিষ্ট তিন বিচারক— অধ্যাপক খন্দকার আবদুল্লাহ আল মামুন, ফাহাদ হোসেন এবং এমরাজিনা ইসলাম। বিচারকরা দলগুলোর ব্যবসায়িক ধারণা, কর্মক্ষমতা, উদ্ভাবনী চিন্তা এবং স্থায়িত্বের ওপর ভিত্তি করে তাদের মূল্যায়ন সম্পন্ন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক আবুল কাশেম মিয়া, বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক নাহিদ হোসাইন, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সহকারি অধ্যাপক মি.
২ দিনব্যাপী এ মেলায় এবং ৩য় দিন জমকালো গ্রান্ড ফিনালের মূল আয়োজক ছিল প্রেসিডেন্ট ইয়াসিন আশরাফ ফাহিম এবং তার কোর কমিটি সহ ৫০ সদস্যর দল ।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। ইউআইইউ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ অংশে বিচারকগণ তাদের মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন এবং আয়োজনের প্রশংসা করেন। তাদের সম্মানে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে ‘কাচন্তী’ দল, যারা ১৫ হাজার টাকা পুরস্কার জিতেছে। প্রথম রানার-আপ ‘টিফিন লাগবে’ দল ১০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় রানার-আপ ‘ওশান অ্যাবিস’ দল ৫ হাজার টাকা পুরস্কার জিতেছে। বিজয়ী দলগুলো তাদের ব্যবসায়িক মেধা ও উদ্ভাবনী ধারণা দিয়ে সবার মন জয় করেছে।
সব শেষে এই তিন বিজয়ীর পুরো বিজনেসে ইনভেস্ট করার কথা ঘোষণা দেন অধ্যাপক মামুন এবং ফাহাদ হোসেন।
বণিক বাজার প্রতিযোগিতার এই সফল সমাপ্তি উদ্যোক্তা তৈরির ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করবে বলে আয়োজক কমিটি আশা প্রকাশ করেছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।