পটুয়াখালীতে দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। বার্ধক্যের কারণে প্রথমে বড় ভাই মারা যান। তখন আত্মীয়স্বজনের কান্নাকাটির শব্দে ঘুম ভাঙে আরেক ভাইয়ের। ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ শুনে কান্নাকাটির একপর্যায়ে তিনিও মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। আজ মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের বল্লভ গ্রামে নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া দুই ভাইয়ের নাম নারায়ণ চন্দ্র পানুয়া (৯৬) ও সোনাতন চন্দ্র পানুয়া (৮৬)। তাঁরা পটুয়াখালী সদরের বল্লভ গ্রামের বাসিন্দা। সোনাতন পানুয়ার বড় ছেলে সাংবাদিক সুনীল সরকার তাঁদের মৃত্যুর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।

স্বজনেরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন নারায়ণ চন্দ্র পানুয়া। আজ ভোর পাঁচটার দিকে তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে স্বজনেরা কান্নাকাটি শুরু করেন। ভোরে কান্নার শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে যায় আরেক ভাই সোনাতন পানুয়ার (৮৬)। তিনি ভাইয়ের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। একপর্যায়ে কান্না করতে করতে সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে তিনিও মারা যান। দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা সেখানে ভিড় করেন।

সাংবাদিক সুনীল সরকার বলেন, তাঁর বাবা–কাকারা ছয় ভাই। তাঁদের মধ্যে বড় যিনি, তিনি দুই যুগ আগে মারা গেছেন। বাকি পাঁচ ভাই একই বাড়িতে থাকেন। পাঁচ পরিবারের রান্না হয় একই হাঁড়িতে। তাঁর বাবা একসময় কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। আগে জেলা শহরের একতা সড়কে বসবাস করতেন। যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হলে ৩১ বছর আগে জেলা শহর ছেড়ে নিজ বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। তিনি বলেন, দূরদুরান্ত থেকে পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়িতে পৌঁছালে আজ বিকেলে বাড়ির আঙিনায় দুজনের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে দুইজনকে গুলি করে হত্যা

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে ফরিদপুরের দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হত্যার পর পরিবারের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপে তাদের ছবি পাঠানো হয়। 

নিহত দুই যুবক হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৪) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (২৬)। 
 
হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার বলেন, দু’মাস আগে স্থানীয় আবু তারা মাতুব্বর, আলমাছ ও আনোয়ারের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠাই। ছেলেকে প্রথমে দুবাই সেখান থেকে সৌদি আরব তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে।

হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান বলেন, ৪/৫ দিন ধরে হৃদয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। দালালরা শুক্রবার দুপুরে আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরও টাকা দাবি করছিল পাচারচক্র। টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে। 

একই গ্রামের ফয়সাল হোসেন বলেন, রাসেল নামের আরও একজনকেও লিবিয়াতে হত্যা করা হয়েছে। ওরা একই গ্রামের বাসিন্দা। ওই মানবপাচার চক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকা না দিলেই তাদের সাথে খারাপ কিছু ঘটানো হয়। কখনও নির্যাতন করে আবার কখনও হত্যা করে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে  আলোচনা করে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ