বড় ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ শুনে মারা গেলেন ছোট ভাই
Published: 14th, January 2025 GMT
পটুয়াখালীতে দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। বার্ধক্যের কারণে প্রথমে বড় ভাই মারা যান। তখন আত্মীয়স্বজনের কান্নাকাটির শব্দে ঘুম ভাঙে আরেক ভাইয়ের। ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ শুনে কান্নাকাটির একপর্যায়ে তিনিও মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। আজ মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের বল্লভ গ্রামে নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া দুই ভাইয়ের নাম নারায়ণ চন্দ্র পানুয়া (৯৬) ও সোনাতন চন্দ্র পানুয়া (৮৬)। তাঁরা পটুয়াখালী সদরের বল্লভ গ্রামের বাসিন্দা। সোনাতন পানুয়ার বড় ছেলে সাংবাদিক সুনীল সরকার তাঁদের মৃত্যুর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
স্বজনেরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন নারায়ণ চন্দ্র পানুয়া। আজ ভোর পাঁচটার দিকে তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে স্বজনেরা কান্নাকাটি শুরু করেন। ভোরে কান্নার শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে যায় আরেক ভাই সোনাতন পানুয়ার (৮৬)। তিনি ভাইয়ের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। একপর্যায়ে কান্না করতে করতে সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে তিনিও মারা যান। দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা সেখানে ভিড় করেন।
সাংবাদিক সুনীল সরকার বলেন, তাঁর বাবা–কাকারা ছয় ভাই। তাঁদের মধ্যে বড় যিনি, তিনি দুই যুগ আগে মারা গেছেন। বাকি পাঁচ ভাই একই বাড়িতে থাকেন। পাঁচ পরিবারের রান্না হয় একই হাঁড়িতে। তাঁর বাবা একসময় কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। আগে জেলা শহরের একতা সড়কে বসবাস করতেন। যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হলে ৩১ বছর আগে জেলা শহর ছেড়ে নিজ বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। তিনি বলেন, দূরদুরান্ত থেকে পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়িতে পৌঁছালে আজ বিকেলে বাড়ির আঙিনায় দুজনের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের সংঘর্ষ, আহত ১৫
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার শোলাকুড়ায় সালিশি বৈঠকে পক্ষপাতিত্বের জেরে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন এবং শোলাকুড়া বাজারের ১৮-২০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েক দফার সংঘর্ষ চলাকালে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বাংড়া ইউনিয়নের পীরবাড়িতে একই ইউনিয়নের মুলিয়া এবং সাকরাইল গ্রামের লোকজনদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। এ নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি মীমাংসা করতে সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে মুলিয়া গ্রামে একটি সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ বিরোধ মিটিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দেন। বৈঠক চলাকালে শুকুর মাহমুদের পক্ষপাতিত্বমূলক কথার জের ধরে পুনরায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে বিএনপি নেতা শুকুর মাহমুদ গুরুতর আহত হন। এ খবর তার নিজ গ্রাম সহদেবপুর পৌঁছালে তারাও এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এরপর ত্রিমুখী সংঘর্ষে সালিশি বৈঠকে আসা স্থানীয় বিএনপির অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হন। এছাড়াও কয়েক জন ব্যক্তি সামান্য আহত হন। এ সময় শোলাকুড়া বাজারে হামলা চালিয়ে ১৮-২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং দোকানগুলোতে লুটপাট চালানো হয়।
এদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের তিন দিকে তিন গ্রামের বাসিন্দারা অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এসময় ওই মহাসড়কে সকল প্রকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আনে।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে থানায় কেউ কোন অভিযোগ দাখিল করেনি।
ঢাকা/কাওছার/রফিক