দ্বিতীয় দিনের মতো ‘শাটডাউন’, স্থবির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
Published: 14th, January 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যম্পাসের নির্মাণকাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে আজ মঙ্গলবার। এতে সব বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধে স্থবির হয়ে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। আগের মতো ক্যাম্পাসে কর্মচঞ্চলতাও দেখা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নেই শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের আনাগোনা।
আজ সকাল থেকে সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে ক্যাম্পাসে। তবে লাইব্রেরিতে পড়েন এমন শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আসতে দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের উন্মুক্ত লাইব্রেরিতেও শিক্ষার্থী উপস্থিতি ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (ভিসি) ভবন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ও মেডিকেল সেন্টার শাটডাউন কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকায় এসব জায়গায় স্বল্প পরিসরে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
শাটডাউনের আওতামুক্ত বলা হলেও আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা আজ সকালে ভিসি ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। ভবনের দ্বিতীয় ফটক দিয়ে যাতায়াত করতে দেখা যায় কর্মকর্তা–কর্মচারীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ভবনের মূল ফটকেও তালা ঝুলতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় কার্যক্রম চললেও তা ছিল ঢিলেঢালা।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে; পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড.
তিন দফা দাবিতে গত রোববার সকালে অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা। এরপর গতকাল সোমবার সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। সবশেষ সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবির মধ্যে প্রথম দুটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে ৩৫ ঘণ্টা পর অনশন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। তবে তাঁরা শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা–৫ শাখা থেকে পাঠানো নোটিশে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতাধীন ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভা হবে আগামীকাল বুধবার সকালে। এ বিভাগের সভাকক্ষে বৈঠকটি হবে। বৈঠকে থাকবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব সিদ্দিক জোবায়ের।
সভার আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা; প্রকল্পের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর; বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হল স্টিল স্ট্রাকচারের (ইস্পাতের কাঠামো) মাধ্যমে নির্মাণ; আবাসন সমস্যা নিরসন বিষয়ে আলোচনা ও বিবিধ প্রসঙ্গ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরাউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে সড়ক অবরোধ
সরকারি তিতুমীর কলেজকে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ সাত দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর আগে আমরণ অনশন শুরু করে কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তারা।
ঢাকার বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সারোয়ার বলেন, তিতুমীর কলেজের সামনে রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে অবরোধ করছে কলেজের শিক্ষার্থীরা। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবিলায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এর আগে গতকাল বুধবার বিকেল ৫টার পর থেকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ ব্যানারে তারা আমরণ অনশন শুরু করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ৭ দফা দাবি জানান।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্য’ এর সাত দফা দাবিগুলো হলো- তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা। শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন ও ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুটি বিষয় ল এবং জার্নালিজম সাবজেক্ট সংযোজন।
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে বিগত ২৮ বছর ধরে আন্দোলন করছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের সরকারের পটপরিবর্তনের পর শিক্ষার্থীরা আবারও নতুন করে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টাসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন করেন তারা।