চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন করেছেন পুলিশের অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশ উপপরিদর্শকরা (এসআই)। গত সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে শুরু করা আমরণ অনশন মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চলছিল। গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে সারাদিন তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। দিনভর কোনো আশ্বাস না পেয়ে তারা আমরণ অনশন শুরু করেন। দাবি আদায়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তারা।

অনশনরত অব্যাহতি পাওয়া এসআই নয়ন চন্দ্র দাস সমকালকে বলেন, ‘আমরা এক বছর প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর অব্যাহতি পেয়েছি। সবার পরিবার প্রচণ্ড হতাশায় দিন পার করছে। এরই মধ্যে আমরা আইজিপি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবর আবেদন দিয়েছি যেন আমাদের পুনর্বহাল করা হয়। ৫ জানুয়ারি যখন আমরা সচিবালয়ের সামনে এসেছিলাম স্বরাষ্ট্র সচিব আমাদের বলেছিলেন তিনি আমাদের জন্য কাজ করবেন। কিন্তু এরপর এক সপ্তাহেও কোনো পদক্ষেপ না পেয়ে আমরা আবার এসেছি।’

আক্ষেপ করে নয়ন চন্দ্র দাস বলছিলেন, ‘রাজশাহীর সারদায় পুলিশ প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আজ (মঙ্গলবার) এসআইরা র‍্যাংক ব্যাজ কাঁধে নিয়েছেন। এদিকে আমাদের অনেকে সচিবালয়ের সামনে কাফনের কাপড় পরে শুয়ে আমরণ অনশন করছেন। সারদায় বুধবার তাদের পাসিং প্যারেড নেওয়ার কথা রয়েছে।’

অনশনরত অব্যাহতি পাওয়া আরেক এসআই মো.

রকিবুল ইসলাম রকি সমকালকে বলেন, আমরা বাংলাদেশ পুলিশের ৪০তম ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর ব্যাচের চলমান ট্রেনিং থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদ ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আমরা ৩২১ জন সাব-ইন্সপেক্টর গত ৫ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করি। স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে। দাবির বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন। তবে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় সোমবার সকাল থেকে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান শুরু করি। পরে বিকেলে আমরণ অনশন শুরু করি।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভুয়া পুলিশ’ বলে এসআইকে মারধর, ওয়াকিটকি ছিনতাই

চট্টগ্রামে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে পরিকল্পিতভাবে মব তৈরি করে মারধর এবং মুঠোফোন ও ওয়াকিটকি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে তাফসীর ইমাম ও মো. সাইমন নামের দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের চরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ১১টার দিকে পতেঙ্গা থানার টহল টিমের দায়িত্বে থাকা এসআই ইউসুফ আলীর চোখে পড়ে চরপাড়াঘাট এলাকায় কিছু স্থানীয় যুবক মাদক (গাঁজা) সেবন করছেন। এসআই ইউসুফ আলী সেখানে গিয়ে যুবকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ওই যুবকেরা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান। এসআই ইউসুফ আলী তাঁদের সতর্ক করে ছেড়ে দেন।

আধা ঘণ্টা পর বেশ কিছু লোককে সঙ্গে নিয়ে পতেঙ্গা সৈকতে ফিরে আসেন ভুল স্বীকার করা দুই যুবক। এই সময় এসআই ইউসুফ আলী তাঁর সঙ্গে থাকা টহল গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। যুবকেরা এসে তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি তো ভুয়া পুলিশ। আপনার আইডি কার্ড কই?’ এরপর মুহূর্তের মধ্যেই এসআই ইউসুফ আলীর ওপর আক্রমণ শুরু করেন। এলোপাতাড়ি মারধর করা হয় তাঁকে। ইউসুফ আলীর কাছ থেকে ওয়াকিটকি সেট, মুঠোফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পতেঙ্গা থানার পুলিশ এসআই ইউসুফ আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাতে অভিযান চালিয়ে জড়িত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে পতেঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে।

পতেঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদুল আলম আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার দুজনের কাছ থেকে এসআই ইউসুফ আলীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ওয়াকিটকি, মুঠোফোন ও মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি চাকু ও মোটরসাইকেল পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার আসামিদের নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। তারা বখাটে প্রকৃতির।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
  • আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণঅবস্থানের ১৮ দিন
  • পুলিশ দেখে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
  • মব তৈরি করে এসআইকে হেনস্থা, গ্রেপ্তার আরও ১০
  • পতেঙ্গা সৈকতে পুলিশের এস আইয়ের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ১০ 
  • চট্টগ্রামে এসআইর ওপর হামলা, দুই ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার
  • ‘ভুয়া পুলিশ’ বলে এসআইকে মারধর, ওয়াকিটকি ছিনতাই