গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, ‍“গণমাধ্যমগুলো যাতে যথাযথভাবে তার ভূমিকা পালনে সক্ষম হয় তার উপযোগী নীতিমালা প্রণয়নে কমিশন সুপারিশ করবে। আইন-কানুন ও নিয়ম-নীতি সঠিকভাবে অনুসরণ করে সাংবাদিকতার প্রতিযোগিতায় যারা টিকে থাকবে তারাই গ্রহণযোগ্য হবে। সুস্থ প্রতিযোগিতা না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাভাবিক বিকাশ হবে না।” 

তিনি বলেন, “দেশে ব্যক্তি-ব্যবসায়িক স্বার্থে বা রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর জন্য সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহারের প্রবণতা প্রবল। দেশের গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ন্যূনতম একটি বেতনের নিশ্চয়তা থাকা দরকার। সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা যদি না থাকে, তাহলে তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার মানসিকতা থাকবে না। ওয়েজবোর্ডের যে সুযোগ-সুবিধা তা ঢাকার বাইরের সাংবাদিকরা কার্যত প্রায় পান না। যারা পান তারা সৌভাগ্যবান।”

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

জাতীয় উন্নয়নে অন্তর্ভুক্তিমূলক সাংবাদিকতার প্রত্যয়ে ‘ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ফোরাম’ এর যাত্রা

টিউলিপের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা সাংবাদিককে হুমকির অভিযোগ

কামাল আহমেদ বলেন, “সংবাদপত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে আইন ও নীতিমালায় সম্পাদকের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতার বিষয়গুলোসহ অনেক ইতিবাচক বিষয়বস্তু রয়েছে। তবে, যারা অতীতে সরকার পরিচালনা করেছেন তারা নিজেরাই নীতিমালা অনুসরণ করেননি। যে কারণে এই সমস্যাগুলো হয়েছে। তারা তোষণকারীদের খুশি করার জন্য অনেক ক্ষেত্রে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে পত্রিকার সার্কুলেশনের সংখ্যা বিষয়ক ডিএফপির মিডিয়া তালিকা তৈরিতে প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে। গণমাধ্যমের মালিক, সম্পাদক, গণমাধ্যমকর্মী আমরা সবাই দুর্নীতি ও নিয়মভাঙ্গার অন্যায়ের অংশীদার। সেই কারণেই আজকে এরকম একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। টেলিভিশন-সংবাদপত্র মিডিয়ায় যাকে মফস্বলে রিপোর্টার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, তাকেই আবার বিজ্ঞাপন সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়।” 

তিনি আরো বলেন, “বিগত ১৫ বছরে অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে অন্যায়ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে যারা চাকরিচ্যুত হয়ে বেকারত্বের শিকার হয়েছিলেন তারা ক্ষতিপূরণের দাবিদার হওয়ার যোগ্য। একইসঙ্গে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করা প্রয়োজন।”

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা জানান, গণমাধ্যমগুলোয় কর্মরত রাজধানীকেন্দ্রিক সাংবাদিক ও মফস্বল এলাকার সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। সবার জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ দরকার। দলীয় প্রভাব বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গণমাধ্যম অথবা এর কর্মীদের ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করতে হবে।

মতবিনিময় সভায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য আখতার হোসেন খান, জিমি আমির, টিটু দত্ত গুপ্ত, আব্দুল্লাহ আল মামুন, বেগম কামরুন্নেসা হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময়সভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার প্রায় ১৫০ জন গণমাধ্যমকর্মী অংশ নেন।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ