‘নির্বাচিত না হলে ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হতেন’
Published: 14th, January 2025 GMT
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি ২০২৪ সালে সফলভাবে পুনর্নির্বাচিত না হতেন, তাহলে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল পাল্টানোর চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হতেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের চেষ্টার অভিযোগ তদন্তের নেতৃত্বদানকারী বিশেষ কাউন্সেল জ্যাক স্মিথ এ তথ্য জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার আংশিকভাবে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে স্মিথ লিখেছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রমাণ ‘বিচার অব্যাহত রাখার এবং তাকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট ছিল।’
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০২০ সালের ফলাফল বাতিল করার জন্য কর্মকর্তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করেছিলেন, জেনেশুনে নির্বাচনী জালিয়াতির বিষয়ে মিথ্যা প্রচার করেছিলেন এবং ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি মার্কিন ক্যাপিটলে দাঙ্গাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে ট্রাম্প এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
স্মিথ লিখেছেন, এটি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলাটিকে ন্যায্যতা দেয়, কারণ তিনি ‘তার ধারণাকৃত বিরোধীদের বিরুদ্ধে হুমকি এবং সহিংসতায় উৎসাহিত করার’ মতো বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে ‘বেআইনিভাবে ক্ষমতা ধরে রাখার নজিরবিহীন চেষ্টা’ চালিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “ট্রাম্পের সব অপরাধমূলক প্রচেষ্টার মূল কথা ছিল প্রতারণা - নির্বাচনী জালিয়াতির জেনেশুনে মিথ্যা দাবি।”
প্রতিবেদনে তদন্তকারীদের মুখোমুখি হওয়া ‘গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলোর’ বিবরণ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ট্রাম্পের ‘সাক্ষী, আদালত এবং (বিচার বিভাগের) কর্মচারীদের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তার প্রভাব ব্যবহার করার ক্ষমতা এবং ইচ্ছা।’
ট্রাম্প প্রতিবেদনের সমালোচনা করে বলেছেন, স্মিথ ‘বিকৃত’ এবং তার অনুসন্ধানগুলো ‘ভুয়া।’
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন, জবির রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার। অপরদিকে, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ।
এর আগে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করে। এতে তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
এ হামলার নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রদল কর্মী ও মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এতে আরো যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী, আয়ান, আরিফ, রাতুল, আসিফসহ আরো ১৫ জন।
এ হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোন দমন-পীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০ -২০২১ সেশনের তামান্না তাবাসসুম বলেন, “আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
একই বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, “গতকালের ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলেন, ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেননি। বরং আমাদের বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।”
আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, “গতকালের ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোন খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। গত ১ বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পাননি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হত, তাহলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
তিনি বলেন, “বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের নানা হুমকি দিয়ে ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে, তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “সবকিছুর জন্য সময় দরকার। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিচার চাচ্ছে, সেটা এত দ্রুত সম্ভব না। আগের একটা কমিটি আছে, সে কমিটির কাছেই আমি এটার তদন্ত হস্তান্তর করেছি।”
তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী