অ্যাটলি কুমারের ‘বেবি জন’-এর পর আর এক দক্ষিণি ছবির হাল ক্রমে খারাপের দিকে। জনপ্রিয় নির্মাতা এস শংকর পরিচালিত এবং দক্ষিণি সুপারস্টার রামচরণ অভিনীত ‘গেম চেঞ্জার’ ছবিটি বক্স অফিসে সেভাবে সফলতা পাচ্ছে না। বলা যায়, এই প্যান ইন্ডিয়া ছবিটি ধীরে ধীরে ফ্লপের দিকে এগোচ্ছে।

‘গেম চেঞ্জার’ ছবিটি রামচরণের ক্যারিয়ারে অনেক বড়সড় ‘চেঞ্জ’ আনবে বলে অনেকেই ভেবেছিলেন। এর আগে তাঁর অভিনীত প্যান ইন্ডিয়া ছবি ‘আরআরআর’ বক্স অফিসে সুনামি এনেছিল। কিন্তু এস এস রাজামৌলি পরিচালিত এই ছবির আরেক নায়ক ছিলেন জুনিয়র এনটিআর। তাই সবাই অপেক্ষায় ছিলেন যে রামচরণ একার কাঁধে ‘গেম চেঞ্জার’কে কত দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু ‘গেম চেঞ্জার’-এর সাম্প্রতিক হাল দেখে মনে হচ্ছে, রামচরণ ছবিটিকে বেশি দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন না।

১০ জানুয়ারি মুক্তি পেয়েছে দিল রাজু প্রযোজিত ছবিটি। সিনেমাটি মুক্তির চার দিন পার হয়ে গেছে। কিন্তু প্রতিদিনই ‘গেম চেঞ্জার’-এর বক্স অফিস আয় পড়তির দিকে দেখা যাচ্ছে। গতকাল সোমবার এই ছবির আয় ছিল মাত্র ৮ কোটি রুপির কাছাকাছি। আগের দিন রোববার ‘গেম চেঞ্জার’ ব্যবসা করেছিল প্রায় ১৬ কোটি মতো। রোববারের তুলনায় সোমবার এই ছবির অবস্থা যে খুবই খারাপ, তা বক্স অফিসের দিকে তাকালেই বোঝা যাচ্ছে। ছবিটি মুক্তির চার দিন পরও ১০০ কোটি ক্লাবের সদস্য হতে পারেনি। ‘গেম চেঞ্জার’ মুক্তির চার দিনে মোট আয় করেছে ৯৬ দশমিক ১৫ কোটি রুপি।

‘গেম চেঞ্জার’–এ কিয়ারা ও রাম চরণ। আইএমডিবি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে। 

আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
 
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
 
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
 
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
 
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
 
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
 
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ