কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির বিভিন্ন চ্যাটবটের মাধ্যমে ভুয়া বা মিথ্যা তথ্যনির্ভর বিভিন্ন সংবাদ, প্রবন্ধ লেখার পাশাপাশি বিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণাপত্রও অনলাইনে প্রকাশ করছেন অনেকে। সম্প্রতি সুইডেনের ইউনিভার্সিটি অব বোরসের একদল বিজ্ঞানী এআই দিয়ে লেখা বানোয়াট গবেষণাপত্রের সন্ধান পেতে গুগল স্কলার সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে একটি সমীক্ষা চালিয়েছেন। সেখানে এআই চ্যাটবটের মাধ্যমে লেখা শতাধিক সন্দেহজনক গবেষণাপত্র ও নিবন্ধ শনাক্ত করেছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, বর্তমানে অনলাইনে এআই চ্যাটবট দিয়ে লেখা অনেক বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র ও নিবন্ধ দেখা যাচ্ছে, যেগুলোর বেশির ভাগই বানোয়াট। ফলে অনলাইনে অনেক ভুল ও ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে। আর তাই এআই চ্যাটবট দিয়ে লেখা গবেষণাপত্র নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। এ ধরনের গবেষণার পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই বলে বেশি জটিলতা তৈরি হয়ে থাকে। আবার কোনো বিষয়ে কৌশলগত প্রভাব তৈরির জন্য এসব গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। ফলে গবেষণাপত্রগুলোর তথ্য ব্যবহারে ঝুঁকি রয়েছে।

আরও পড়ুনচ্যাটবট ব্যবহারের সময় প্রতারণা এড়াতে মানতে হবে এই ৩ কৌশল০২ জুলাই ২০২৪

এ বিষয়ে বিজ্ঞানী বিজোরন একস্ট্রোম বলেন, এ ধরনের গবেষণাপত্র বিভিন্ন গবেষণার পক্ষে বা বিপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়েছে। এ ধরনের গবেষণাকে অ্যাভিডেন্স হ্যাকিং বলা হয়। এর বাস্তব পরিণতি কঠিন হতে পারে। অনেক গবেষণার ভুল ফলাফল সমাজে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক গবেষণার ক্ষেত্রে ভুয়া তথ্য প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

আরও পড়ুনচ্যাটজিপিটিসহ অন্য এআই চ্যাটবটকে যে ৭ তথ্য কখনোই জানানো উচিত নয়৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

এআই চ্যাটবট দিয়ে লেখা বানোয়াট গবেষণাপত্র এরই মধ্যে বিভিন্ন ওয়েবসাইট, অনলাইন আর্কাইভ থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সমালোচনার মুখে অনেক গবেষণাপত্র সরিয়ে ফেলা হলেও ঝুঁকি কমছে না। অনলাইননির্ভর বিভিন্ন কাজ বা গবেষণার জন্য এসব ভুয়া গবেষণাপত্রের তথ্য সহায়ক না হওয়ায় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেড়ে যায়।

সূত্র: ফিজিস ডট অর্গ

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ