নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে যৌথবাহিনীর হাতে আটকের পর নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক এক ছাত্রদল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। 

নিহত আবদুর রহমান (৩২) জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের হীরাপুর গ্রামের হাওলাদার বাড়ির মাওলানা ছাইদুল হকের ছেলে। তিনি সোনাইমুড়ি উপজেলার আমিশাপাড়ার ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি ছিলেন। তিনি স্থানীয় রাজনীতিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবি সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের অনুসারী।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট নিহত আবদুর রহমানের ভাতিজা হাবিবুর রহমানকে (২৬) মুমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।  

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার সন্ধ্যার দিকে পুলিশ আবদুর রহমান ও হাবিবুর রহমানকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে এলে তাৎক্ষণিক তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুর রহমান মারা যান। অপরজনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। তাদের দুইজনেরই শরীরে  জখমের দাগ ছিল।

নিহত আবদুর রহমানের জেঠাতো ভাই মো.

হানিফ অভিযোগ করে বলেন, “সোমবার ভোর রাতের দিকে যৌথবাহিনী হাওলাদার বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে ঘর থেকে কোনোর ধরনের কিছু পাওয়ার যায়নি। এক পর্যায়ে আমার ভাতিজা আব্দুর রহমান ও চাচাতো ভাই হাবিবুর রহমানকে তাদের ঘর থেকে আটক করে যৌথবাহিনী। আটকের পর তাদের পরিবারের সদস্যদের সামনে মারধর করা হয়। এরপর স্থানীয় পশ্চিম পাড়া বাবুলের দোকানের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন তাদের কাছ থেকে কার্তুজ ও কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় যৌথবাহিনী। তারপর তাদের উপর নির্মম নির্যাতন করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের সোনাইমুড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়।”

তিনি আরও বলেন, “থানায় সোপর্দ করার পর থানায় গিয়ে তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় দেখতে পাই। তখন তাঁরা পুলিশকে অনুরোধ করেন চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। পুলিশ জানায়, আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে পাঠানোর পর আদালতে আবেদন করলে সেখান থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। বারবার অনুরোধ করা সত্বেও পুলিশ শোনেনি। থানা থেকে তাদরেকে আদালতে পাঠানো হয় বিকেল পাঁচটার পর। আদালতে তাদেরকে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার অদেশ দেন। পুলিশ তাদেরকে সন্ধ্যার পর নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর চিকিৎসাধীন অবন্থায় আবদুর রহমান মারা যায়। হাবিবুর রহমানকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ নেই।”

তিনি দাবি করেন, “এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।”

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, “যখন তাদের পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়, তখন তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাদের কাছ থেকে রাইফেলের দুইটি গুলি ও তিনটি রাম দা উদ্ধার করা হয়েছে।”

ওসি আরো বলেন, “নিহতের লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। লাশের ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।”

ঢাকা/সুজন/এস

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ