অন্তবর্তী সরকারের প্রধানের কাছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তারিখ চাইলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘আপনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তারিখ ঘোষণা করুন। আপনি বলুন যে এত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। আমরা আশা করি, সরকার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং সত্যিকার অর্থে একটা শক্তিশালী গণতন্ত্র আসবে, যেখানে প্রত্যেকটি মানুষ স্বাধীন থাকবে।’

রাজশাহী নগরের ছোট বনগ্রাম এলাকায় শহীদ জিয়া শিশুপার্কের সামনে আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহানগর যুবদল আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে রুহুল কবির এসব কথা বলেন।

এ বছরের মাঝামাঝিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি তুলবে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে ঘোষণা এসেছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্ষদ জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

আজ শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির বলেন, ‘জাতীয়–আন্তর্জাতিক নানা চক্রান্তের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পথে হাঁটছি। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের প্রয়োজনীয় সংস্কার, জাতীয় সংসদ, সংবিধান, পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, সবকিছুর মধ্যে সংস্কার দরকার। কিন্তু এই সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করে শুধু এটা নিয়ে বাদানুবাদ, এটা নিয়ে তর্ক–বির্তক করলে আমাদের যে প্রধান অবজেক্টিভ .

. .। বাংলাদেশের মানুষ ১৭ বছর ভোট দিতে পারেনি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে দূর আকাশের তারা করে দেওয়া হয়েছে। মানুষ শুধু শোনে, জানে কিন্তু আসলেই কোনো অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এগুলো তো নিশ্চিত করতে হবে।’

রুহুল কবির বলেন, ‘মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সমর্থন করেছে। উনি একজন গুণী মানুষ নিঃসন্দেহে। তিনি বাংলাদেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন। কিন্তু তাঁকে কোনো ধরনের বিভ্রান্তির মধ্যে যদি কেউ ফেলে, এটা তখন মানুষের মধ্যে বড় প্রশ্ন হবে। আপনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তারিখ ঘোষণা করুন। আপনি বলুন যে এত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। যদিও সেই বিষয়ে তিনি বারবার বলছেন। সুতরাং এ বিষয়ে আমরা আর কোনো কথা বলতে চাই না। আমরা আশা করি, সরকার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং সত্যিকার অর্থে একটি শক্তিশালী গণতন্ত্র আসবে, প্রতিটি মানুষ স্বাধীন থাকবে।’

আওয়ামী লীগ শাসনের সমালোচনা করে রুহুল কবির বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে আমরা কথা বলতে ভয় পেতাম। আমরা ডান–বাম দিকে তাকাতে ভয় পেতাম। কখন গোয়েন্দা পুলিশ আমাদের গ্রেপ্তার করে; সমাবেশ করতে পারব কি না। এর কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। আজ অন্তত সেই নিশ্চয়তা হয়েছে। নির্ভয়ে আমরা এসে কথা বলতে পারছি। আমাদের দাবিগুলো রাখি। সুতরাং এগুলো আরও নিশ্চিত করার জন্য সত্যিকারের যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ, যে পরিবেশ মানুষকে আস্থাশীল করে তুলবে। এই দেশের ভালো মন্দ নির্ধারণের দায়িত্ব একমাত্র জনগণের। কোনো দেশের নয়। এ দেশ কীভাবে চলবে তার নীতিমালা নির্ধারণ করবে এদেশের জনগণ। অন্য কোনো দেশ করবে না।’

অনুষ্ঠানে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী, সদস্যসচিব মামুন অর রশিদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা (মামুন), রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান (রিটন), সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম (রবি) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্য দেওয়ার পর রুহুল কবির শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন। এরপর তিনি দুপুরে নগরের গোলজারবাগ ঈদগাহ ময়দান ও গুড়িপাড়ায় শীতবস্ত্র বিতরণ করন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চা-মুড়ি ঐক্য পরিষদ

বাংলার এক নামকরা কলেজ। সেখানে আছেন আমাদের ‘মাস্টারমশাই’। নাম মফিজ স্যার। পড়ান রাষ্ট্রবিজ্ঞান। ক্লাসে ঢুকে ছাত্রদের রাজনীতি শেখান। ক্লাসের শুরুতেই বলেন, এই যে তোরা, বই না, আগে বুঝতে হবে ভোটের খেলা। এই দেশে ভোট মানে মাছ-ভাত, চায়ের কাপ আর বগল বাজানো স্লোগান।
ছাত্র– স্যার, বইটা খুলব নাকি?
স্যার– বই খুললে হবে না রে! আগে মানুষের মন খুলতে হয়।
এরপর শুরু হয় স্যারের গল্প। দেখো, ১৯৮২ সালে আমি ইউনিয়ন নেতা ছিলাম। স্লোগান দিতাম– ‘ভাত দে, কাপড় দে, ভোট দে’। তখনকার প্রেমও ছিল রাজনৈতিক। প্রেমিকার নাম ছিল গণতন্ত্রা।
ছাত্র শামীম– স্যার, ও তো সিনেমার নাম।
স্যার– আরে পাগলা, সব সিনেমা কি বাস্তব থেকে আসে? 
একদিন কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচন হবে। ছাত্র সংসদ। দুইটা দল। একদিকে ‘চা-চক্র সংঘ’, আরেকদিকে ‘ঝালমুড়ি মঞ্চ’। সবাই হইচই।
রাব্বি দাঁড়ায় নির্বাচন করতে। স্লোগান দেয়– চা-মুড়ি হোক বিনামূল্যে, ভোট দাও রাব্বিকে।
স্যার ডাকে ও রাব্বি, তুই কি সত্যিই নেতাগিরি পারবি? নেতার তো ভাষণ দিতে হয়।
রাব্বি বলে– স্যার, আমি তো ভাইরাল লাইন জানি। যেমন– নেতা হতে হলে নাটক শিখো, মাইক ছাড়া মুখ খুলো না আর মানুষকে ভাবতে শেখাও যে তুমি ছাড়া এ দেশ শেষ!
স্যার খুশি। বলেন– ব্যাটা, তুই তো আমার থেকে বড় লিডার।
ভোটের দিন। চা-চক্র সংঘের ছেলেরা সবাই চায়ের কাপ হাতে। ঝালমুড়ি মঞ্চ ঝালমুড়ি বিলি করে।
মফিজ স্যার প্রিসাইডিং অফিসার। ঘোষণা দিলেন– এই ভোটে কেউ হারবে না। সবাই জিতবে। কারণ একটাই– গণতন্ত্র বাঁচাও।
শামীম চেঁচিয়ে বলল– স্যার, গণতন্ত্র কোথায়? আপনি তো চা-মুড়ি খেয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন।
স্যার হেসে বললেন– গণতন্ত্র মানেই তো আপস। যেই আপস করে, সেই জেতে।
এরপর ঘোষণা: নতুন কমিটি ‘চা-মুড়ি ঐক্য পরিষদ’। সভাপতি রাব্বি, সম্পাদক শামীম।
সবার স্লোগান– ‘চা-মুড়ির ঐক্য হোক, গণতন্ত্রের জয় হোক।’
স্যার মাইক্রোফোনে ঘোষণা দিলেন– এই হলো বাস্তব রাজনীতি। যত মিছিল, তত চা, তত মুড়ি আর কথায় কথায় ‘আমি তো ভালা না, ভালা লইয়া থাইকো।’
শেষে ছাত্রদের চিৎকার– বাহ্ স্যার বাহ্‌! আপনি না থাকলে রাজনীতি শিখতাম কীভাবে।
স্যার হেসে বললেন– বুঝলে বুঝপাতা, না বুঝলে তেজপাতা!
শেষে ক্যাম্পাসজুড়ে স্লোগান: ‘মুড়ি-চা খাই, নেতা স্যার ভাই!’
শামীম চেঁচিয়ে বলল– স্যার, গণতন্ত্র কোথায়? আপনি তো চা-মুড়ি খেয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন।
স্যার হেসে বললেন– গণতন্ত্র মানেই তো আপস। 
সুহৃদ ঢাকা 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার টালবাহানা করছে: রুহুল কবির রিজভী
  • পতিত সরকারের প্রধানের নির্দেশে ভাস্কর মানবেন্দ্রের বাড়িতে আগুন: রিজভী
  • বিশ্বশক্তির দাবা খেলায় কি ভারত কিস্তিমাত হয়ে যাচ্ছে
  • চা-মুড়ি ঐক্য পরিষদ
  • পররাষ্ট্র দপ্তরে ব্যাপক পরিবর্তন, থাকবে না গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ব্যুরো