জিমি কার্টার উত্তর কোরিয়া সফরে না গেলে কি পারমাণু যুদ্ধ বেধে যেত
Published: 14th, January 2025 GMT
তিন দশক আগে জিমি কার্টার উত্তর কোরিয়া সফর করেছিলেন। তিনি সে দেশ সফরে যাওয়ার আগপর্যন্ত বিশ্ব একটি পারমাণবিক সংঘাতের কিনারে চলে গিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ১৯৯৪ সালে উত্তর কোরিয়ার তৎকালীন নেতা কিম ইল-সুংয়ের সঙ্গে আলোচনা করতে দেশটির রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে যান। তাঁর এই সফর ছিল নজিরবিহীন। কারণ, এর আগে কোনো সাবেক বা ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়া সফরে যাননি।
তবে ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রেও এটি ছিল একটি অসাধারণ পদক্ষেপ। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে একটি সম্ভাব্য যুদ্ধ অল্পের জন্য এড়ানো সম্ভব হয়েছিল। এই যুদ্ধ বেধে গেলে লাখো মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। জিমি কার্টারের এই পদক্ষেপ উত্তর কোরিয়া ও পশ্চিমাদের মধ্যে আরও শক্তিশালী সম্পর্কের সূচনা করেছিল।
জিমি কার্টার কূটনৈতিক দাবার চাল না চাললে এসবের কিছুই ঘটত না। গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর এই রাজনীতিক ১০০ বছর বয়সে মারা যান।
উত্তর কোরিয়ার ইয়োনসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ জন ডেলুরি বিবিসিকে বলেন, ‘কিম ইল-সুং ও বিল ক্লিনটন সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। আর এই সংকট নিরসনে ঝাঁপিয়ে পড়েন জিমি কার্টার। আলোচনার মাধ্যমে অচলাবস্থা সমাধানের পথ সফলভাবে খুঁজে বের করেন।’
১৯৯৪ সালের গোড়ার দিকে যখন মার্কিন কর্মকর্তারা উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধের জন্য আলোচনার চেষ্টা করছিলেন, তখন ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছিল।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সন্দেহ ছিল, চলমান আলাপ-আলোচনা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে থাকতে পারে।
ওই সময় হঠাৎ এক ঘোষণায় উত্তর কোরিয়া জানিয়েছিল, পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের জন্য তারা ইয়ংবিয়ন পারমাণবিক চুল্লি থেকে কয়েক হাজার জ্বালানি রড সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা একটি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে দেশটি। ওই চুক্তির শর্তানুযায়ী, এই ধরনের পদক্ষেপ নিতে হলে পারমাণবিক পর্যবেক্ষক হিসেবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পর্যবেক্ষকদের উপস্থিত থাকতে হবে।
১৯৯৪ সালের জুনে উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়ে দেশটির তৎকালীন নেতা কিম ইল–সুনের সঙ্গে বৈঠক করেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১৯৯৪ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: আসামিদের আপিলের রায় ৫ ফেব্রুয়ারি
১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হাইকোর্টে শেষ হয়েছে। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে রায় দেওয়া হবে।
বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলাম ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রায়ের এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী মাকসুদ উল্লাহ।
তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। জনসভার উদ্দেশে যাওয়ার পথে ঈশ্বরদী স্টেশন এলাকায় ট্রেনে গুলি ও বোমাবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী জিআরপি থানার তৎকালীন ওসি নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই দিনই বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।
১৯৯৭ সালে ৩ এপ্রিল ৫২ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে ৩ জুলাই পিন্টুসহ ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। পাশাপাশি ২৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১৩ জনকে ১০ বছর মেয়াদ কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি খালাস চেয়ে আপিল করেন আসামিরা।