ছেলেসহ সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
Published: 14th, January 2025 GMT
সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের ও তার ছেলে জাকির হোসেন জুমনের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
মামলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক নাজমুল ইসলাম তাদের
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
আবেদনে বলা হয়, শাহাব উদ্দিন ও তাতার ছেলে জাকির হোসেন জুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতপূর্বক অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে শাহাব উদ্দিন ও ও তার ছেলে জাকির হোসেনের বিদেশ যাওয়া রোধ করা প্রয়োজন। এতে কমিশনের অনুমোদন রয়েছে।
শুনানি শেষে আদালত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা ও জুড়ী) আসন থেকে পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন শাহাব উদ্দিন।
১৯৯৬ সালের জুনে অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মৌলভীবাজার-১ থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। সপ্তম জাতীয় সংসদে তিনি ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।
২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজতি হন। এরপর ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে নবম সংসদে ভূমি মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদে তিনি হুইপ হিসেবে এবং একইসাথে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিকার কমিটি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন্স অব পার্লামেন্টারিয়ান অন পপুলেশন এ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (বিএপিপিডি), নিরাপদ মাতৃত্ব ও মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়ন বিষয়ক সাব-কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে বিজয়ী হয়ে শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
ঢাকা/মামুন/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।