সাতক্ষীরায় নববধূকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামী আটক
Published: 14th, January 2025 GMT
সাতক্ষীরায় যৌতুকের দাবিতে নববধূকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে স্বামী।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে সদর উপজেলার ঝাড়ডাঙ্গা ইউনিয়নের মাধবকাটি গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। সকালে স্থানীয় জনতা অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
নিহত মোছা. খাদিজা খাতুন (১৯) সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নারায়নজোল গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ে। অভিযুক্ত আমিরুল ইসলাম (২৩) একই উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের মাধবকাটি গ্রামের এলাহী বক্সের ছেলে।
নিহতের আত্মীয় নারায়নজল গ্রামের মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মাত্র তিন মাস আগে আমিরুল ইসলামের সঙ্গে খাদিজা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে আমিরুল শ্বশুরের কাছ থেকে যৌতুকের ২ লাখ টাকা আনার জন্য খাদিজা খাতুনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। খাদিজা টাকা আনতে বাবার বাড়ি যেতে রাজি না হওয়ায় তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে আমিরুল। এ ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে আমিরুল লাঠি দিয়ে তার স্ত্রী খাদিজার মাথায় আঘাত করে। খাদিজা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মুখে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে আমিরুল।
তিনি জানান, এ ঘটনার পর আমিরুল উন্মাদের মতো হয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে বাড়ি আসবাবপত্র ভাঙচুর করতে থাকে সে। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয় জনতা আমিরুলকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সামিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ আমিরুল ইসলামকে আটক করেছে।
ঢাকা/শাহীন/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঠিকাদার বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ২ প্রকৌশলীকে হুমকির অভিযোগ
খুলনা নগরীর খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগের বিরুদ্ধে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দুই প্রকৌশলীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কুয়েটের একটি ভবনের ছাদের ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে লাভ আরও বেশি নির্ধারণের কথা বলেছিলেন ওই ঠিকাদার। এ নিয়ে প্রকৌশলীদের তিনি হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ প্রেক্ষাপটে কুয়েটের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) শেখ আবু হায়াত ও নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. গোলাম কিবরিয়া সোমবার কুয়েট উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করে নিরাপত্তা চেয়েছেন।
সূত্র জানায়, কুয়েটের ১৩ নম্বর ভবনের ছাদের ওপর ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজ নিয়েছেন মোল্লা সোহাগ। কাজটি কয়েকদিন আগে শুরু হয়। গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে ঠিকাদার সোহাগ প্রথমে নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী এ বি এম মামুনুর রশিদ এবং অন্য নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন। গালাগাল করতে নিষেধ করলে তিনি গোলাম কিবরিয়াকেও গালাগাল ও হুমকি দেন। পরে তিনি একই পরিচয় দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে ফোনে গালাগাল ও হুমকি দেন।
উপাচার্যের কাছে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী লিখিত অভিযোগে বলেন, ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজের দর প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ের প্রকৌশলীরা বাজারদরের সঙ্গে সরকারি নিয়মে ভ্যাট, আইটি ও ১০ শতাংশ প্রফিট বা লাভ (পূর্বনির্ধারিত) যুক্ত করে নির্ধারণ করেন। ঠিকাদার সোহাগ ১০ শতাংশ লাভ কেন যুক্ত করে দর নির্ধারণ করা হয়েছে, তাঁকে আরও বেশি লাভ দিতে হবে বলে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়াকে জানান। এ কথা বলার পর প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ও শেখ আবু হায়াতকে গালাগাল ও মারধরের হুমকি দেন সোহাগ। এ অবস্থায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াত বলেন, রোববার বিকেল ৩টার কিছু আগে খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বলে– ‘তুই চেয়ারের পরে বসে সবাইরে ১০ লাখ ২০ লাখ টাকার কাজ দিস। আমাকে দিছিস টেন পারসেন্ট লাভে।’ এই বলে আমাকে যাচ্ছেতাই বলে গালাগাল করেন। পাঁচ মিনিট পর ফোন দিয়ে আমাকে দেখে ছাড়বেন, আমার বাড়ি আক্রমণ করবেন, ফুলবাড়িগেটে গেলে আমাকে দেখে নেবেন– এসব বলে হিুমকি দেন।
নিজের সাংগঠনিক পরিচয় ও প্রকৌশলীকে ফোন দেওয়ার কথা স্বীকার করেন মোল্লা সোহাগ। তবে কোনো ধরনের ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন। মোল্লা সোহাগ বলেন, আমার নেতার অর্ডার আছে– আমি কোনো জায়গায় কোনো টেন্ডারেও যাই না, কোনো ঠিকাদারিতেও নেই। আমার কোনো কাজ কুয়েটে চলে না। আমার ট্রেড লাইসেন্সই নেই, কাজ পরের কথা। আমি তাদের (প্রকৌশলী) ফোন দিয়েছিলাম, কথা হয়েছে, তবে কোনো হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়নি।
কোনো কাজ চলছে না, তাহলে প্রকৌশলীদের কার হয়ে ফোন দিয়েছিলেন– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আবু হায়াত ও গোলাম কিবরিয়াকে ফোন দিলে ভালোভাবে জানতে পারবেন।’