চলতি বছরের মাঝামাঝিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর এ বছরের জুলাই-আগস্টে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “নির্বাচন বিলম্বিত করা হলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটতম বৃদ্ধি পাবে, এই বছরের জুলাই-আগস্টে নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।”

জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে কোনো নির্বাচন দেওয়া ঠিক হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দেশকে সঠিক পথে নিতে হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছাড়া অন্য চিন্তা কীভাবে আসে এবং নির্বাচন পেছনোর চিন্তা কীভাবে হবে।”

বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে নির্বাচন ইস্যুতে বেশি একটা দ্বিমত নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ফ্যাসিবাদের চলমান বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।”

দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “একদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি অন্যদিকে ভ্যাট ও অন্যান্য করের হার বৃদ্ধি অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”

লন্ডনে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মানসিক ও শারীরিকভাবে আগের থেকে ভালো আছেন বলেও এসময় তিনি জানান।

সীমান্ত ইস্যুতে সরকারের শক্ত অবস্থানের প্রশংসা করে বিএনপি মহাসচিব দলের পক্ষ থেকে সরকারকে ধন্যবাদ জানান। 

ঢাকা/ইভা

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক আইনমন্ত্রীর সিটিজেনস ব্যাংককে ঢেলে সাজানো হচ্ছে

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মালিকানায় থাকা সিটিজেনস ব্যাংককে ঢেলে সাজানো শুরু করেছে নতুন পরিচালনা পর্ষদ। ইতিমধ্যে ব্যাংকটিতে দুজন নতুন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর আগে এই দুজন ব্যাংক এশিয়ার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

এ ছাড়া সিটিজেনস ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মাসুমেরও মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাঁর স্থলে ব্যাংক এশিয়ার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমগীর হোসেনকে এমডি পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের পর এই নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে।

জানা যায়, সিটিজেনস ব্যাংকের বর্তমান পর্ষদ এটিকে ব্যাংক এশিয়ার আদলে করপোরেট মডেলে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সেই কারণে শীর্ষ পর্যায়ে ব্যাংক এশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি লোক নিয়োগের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের পঞ্চম প্রজন্মের ব্যাংকটি ২০২০ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পায়। তখন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মা জাহানারা হক। তিনি মারা যাওয়ার পর আনিসুল হকের ঘনিষ্ঠ তৌফিকা আফতাবকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান করা হয়।

ব্যাংকটির নথিপত্র অনুযায়ী, সিটিজেনস ব্যাংকে আনিসুল হকের শেয়ার রয়েছে ১০ শতাংশ। এ ছাড়া পোশাক খাতের আরও সাত ব্যবসায়ীর রয়েছে ১০ শতাংশ করে শেয়ার। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৪ আগস্ট এক চিঠিতে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সিটিজেনস ব্যাংকের চেয়ারম্যান তৌফিকা আফতাবের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তৌফিকা আফতাব আনিসুল হকের আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও জড়িত।

সূত্র জানায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ব্যাংকের তৃতীয় বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএমে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন চৌধুরী মোহাম্মদ হানিফ শোয়েব। পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান সালমা গ্রুপের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী মোহাম্মদ হানিফ শোয়েব। নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকটিকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত মাসে ব্যাংক এশিয়ার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তাফিজুর রহমানকে ডিএমডি হিসেবে সিটিজেনস ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি দীর্ঘদিন ব্যাংক এশিয়ার বনানী শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন। এর বাইরে ব্যাংক এশিয়ার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল লতিফকেও সিটিজেনস ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ব্যাংক এশিয়ার প্রধান শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন।

জানা যায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সিটিজেনস ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ মাসুমের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাই নতুন এমডি হিসেবে ব্যাংক এশিয়ার ডিএমডি আলমগীর হোসেনকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয় ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায়। এখন এমডির এই নিয়োগ বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান চৌধুরী মোহাম্মদ হানিফ শোয়েবকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। ব্যাংকটির কোম্পানি সচিব ওয়াহেদ ইমাম প্রথম আলোকে বলেন, নতুন এমডি নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে ২০২০ সালে অনুমোদন পেলেও ব্যাংকটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০২২ সালের মাঝামাঝি। সারা দেশে ব্যাংকটির ১৫টি শাখা রয়েছে। ব্যাংকটির সর্বশেষ ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর শেষে ব্যাংকটির আমানত ছিল ১ হাজার ৫ কোটি টাকা। আর এ সময়ে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৩৮ কোটি টাকা।

বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটি ছিল লোকসানি ব্যাংক। ওই বছর ব্যাংকটি কর–পরবর্তী প্রায় দেড় কোটি টাকা লোকসান করেছে। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ৪০০ কোটি টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেকৃবিতে শাখা ছাত্রদল সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
  • হাসপাতালে ভর্তি মির্জা ফখরুল
  • অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি মির্জা ফখরুল
  • সাবেক আইনমন্ত্রীর সিটিজেনস ব্যাংককে ঢেলে সাজানো হচ্ছে
  • গণহত্যার দোসর ৬ মাস পর ‘বীর’