রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়াও হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ধমনি সংক্রান্ত নানা ধরনের রোগের ঝুঁকির মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা ভীষণ জরুরি। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে থেকেই ডিম, তেল ও মাটন খাওয়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু কোলেস্টেরল বাড়লে কি সত্যিই ডিম খাওয়া বন্ধ করতে হবে? ডিম খেলে কি সত্যিই কোলেস্টেরল বাড়ে? 

ডিম পুষ্টিতে ভরপুর। তবে ডিমেও কোলেস্টেরল রয়েছে। একটি মাঝারি সাইজের ডিমে ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল রয়েছে। অন্যদিকে, ডায়েটরি গাইডলাইন্স ফর আমেরিকানের মতে, একজন সুস্থ পূর্ণবয়স্ক মানুষ দৈনিক ৩০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল গ্রহণ করতে পারেন। সুতরাং, একটি ডিম খেলে কোনো ক্ষতি নেই। ভারতীয় পুষ্টিবিদ মঞ্জিরা স্যানাল বলেন, ‘মানুষের ধারণা ডিম খেলে কোলেস্টেরল বেড়ে যাবে। কিন্তু ডিমে ভালো কোলেস্টেরল রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। তা ছাড়া ডিমে পুষ্টিও অনেক।’
ডিমে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে। সুতরাং, প্রতিদিন একটি করে ডিম সেদ্ধ খেলে শরীর ভালো থাকবে। কিন্তু আপনি যদি হাই কোলেস্টেরলের রোগী হন, সেক্ষেত্রে আপনার এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রার উপর নির্ভর করছে আপনি ডিম খাবেন কি না। যদি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কম বা স্বাভাবিক থাকে, সে ক্ষেত্রে ডিম সেদ্ধ খেতে পারবেন। আবার চাইলে ডিমের সাদা অংশটুকুও খেতে পারেন। ডিমের কুসুম এড়িয়ে চলতে পারেন। কিন্তু কারণ ছাড়াই ডিম খাওয়া বন্ধ করা উচিত নয়। 

ডিমে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি। কিন্তু প্রতিদিন ডিম খেলে যে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাবে কিংবা হার্টের সমস্যা দেখা দেবে, এই ধারণা ঠিক নয়। বরং, ডিম খেলে দেহে প্রোটিন, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি১২-এর মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি মিটবে। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোলেস্টেরলের ঝুঁকি এড়াতে ডিম নয়, বাইরের খাবার খাওয়া ছাড়ুন। অতিরিক্ত তেল-মশলা যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট যুক্ত খাবারে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে নিহত ২, গুলিবিদ্ধ ৪ বাসিন্দা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এর আগে ওই যুবকদের গুলিতে স্থানীয় চার বাসিন্দা আহত হন। সোমবার রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবকদের পরিচয় তাৎক্ষণিক নিশ্চিত করতে পারেননি পুলিশ। গুলিবিদ্দ স্থানীয় চার বাসিন্দা হলেন ওবায়দুল হক (২২), মামুনুর রশিদ (৪৫), নাসির উদ্দিন (৩৮) ও আব্বাস উদ্দিন (৩৮)। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, আটটি গুলির খোসা এবং একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে নয়টা থেকে দশটার মধ্যে চারটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে একদল যুবক ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় গিয়ে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় মসজিদে ডাকাত পড়েছে এমন প্রচারের পর লোকজন জড়ো হয়ে অটোরিকশায় করে আসা দুই যুবককে আটক করে পিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই যুবক নিহত হন।

এক যুবকের লাশের পাশ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুই যুবককে আটকের আগে গুলির ঘটনায় আহত চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দলসহ সাতকানিয়া থানা পুলিশের সদস্যরা।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাত সন্দেহে মসজিদের মাইকে প্রচারের পর স্থানীয় বাসিন্দাদের পিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এখনো ওই দুই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ