কবে সব বই পাবে শিক্ষার্থীরা, জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা
Published: 14th, January 2025 GMT
শিক্ষার্থীরা সব পাঠ্যবই আগামী ফেব্রয়ারির মধ্যেই হাতে পাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছাতে বিলম্বের জন্য দায়িত্বগ্রহণের প্রথম দিকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য নিয়োগ নিয়ে ব্যস্ত থাকা ও পাঠ্যবই ছাপতে দেরি হওয়াকে দায়ী করেন তিনি। গতকাল সোমবার (১৩ জানুয়ারি) পরিকল্পনা কমিশনে শিক্ষাবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইরাব) নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় ইরাব সভাপতি আকতারুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মুছা মল্লিক, দপ্তর সম্পাদক রুম্মান তূর্য, কার্যনির্বাহী সদস্য আবদুল হাই তুহিনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনআইএসডিবি-বিআইএসইডব্লিউতে ২ লাখ সমমূল্যের কোর্স, বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ-কর্মসংস্থান, আবেদন করুন দ্রুত৪ ঘণ্টা আগেশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম দিকে আমি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। পাঠ্যবই নিয়ে কাজ করা কর্মকর্তারা বলেছিলেন, সব বই নির্ধারিত সময়েই পাবে। কিন্তু পরবর্তীতে শেষদিকে দেখলাম, পাঠ্যবই হাতে পৌঁছে দিতে এখনো অনেক কাজ বাকি। প্রথম দিকে আমরা আর্ট পেপার পাচ্ছিলাম না। কাগজের সংকটও ছিল। পরবর্তীতে ছাত্র প্রতিনিধি, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও অন্যদের সহায়তায় আর্ট পেপারের সমস্যাটা সমাধান হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘কিছু আর্ট পেপার ঘাটতি আছে। (আর্ট পেপার নিয়ে) বিদেশ থেকে জাহাজ রওনা হয়ে গেছে। আশা করছি জানুয়ারির শেষ দিকে জাহাজ এসে পৌঁছাবে।’
শিক্ষা সংস্কারে ইরাবের সহযোগিতা কামনা করেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
আরও পড়ুনস্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম স্কলারশিপ, স্নাতক-স্নাতকোত্তর-পিএইচডির জন্য করুন আবেদন২ ঘণ্টা আগেএর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা (বই ছাপা) কার্যক্রম শুরু করেছি দেরিতে। আমাদের বই পরিমার্জন করতে হয়েছে। বইয়ের সিলেবাস, কারিকুলাম নতুন করে করতে হয়েছে। বইয়ের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বিদেশে কোনো বই ছাপানো হচ্ছে না। দেশের সক্ষমতা কত, সেটা এবারই প্রথম দেখা যাচ্ছে। এতে করে তো দেরি হবেই।’
আগের সরকারের আমলে মার্চের আগে পুরোপুরি বই দেওয়া হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুনট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগ বন্ধ করতে চান, পারবেন কি ১২ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরায় আলোচিত শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলার বিচার শুরু, পরবর্তী শুনানি রোববার
মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে অভিযোগ গঠনের শুনানি হয়। এর মাধ্যমে আলোচিত এ ঘটনার বিচার শুরু হয়।
আজ শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন চার আসামি শিশুটির বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি, বোনের স্বামী ও ভাশুর। ২৭ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মুকুলসহ অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। মামলাটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় অ্যাটর্নি জেনারেলের সমমর্যাদাপ্রাপ্ত আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীকে। তিনি শুনানিতে অংশ নেন। শুনানি শেষে এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি ও অন্যান্য নথির ভিত্তিতে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির বোনের শ্বশুরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (২) ধারায় (ধর্ষণের ফলে মৃত্যু) অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে বোনের স্বামী ও ভাশুরের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার দ্বিতীয় অংশে (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এবং শাশুড়ির বিরুদ্ধে ২০১ ধারায় (অপরাধের আলামত নষ্ট) অভিযোগ গঠন করা হয়।
আরও পড়ুনমাগুরায় শিশু ধর্ষণ: মধ্যরাতে আদালতে শুনানি, চার আসামির রিমান্ড মঞ্জুর ১০ মার্চ ২০২৫শুনানি শেষে কৌঁসুলি এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের জানান, এই মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের স্বার্থে বিচারক আসামিদের বলেছেন, তাঁরা চাইলে নিজেদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন। আইনজীবী নিয়োগ করতে হলে কারাবিধি অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। ওই ঘটনার দায় স্বীকার করছেন কি না, বিচারক জানতে চাইলে আসামিরা অপরাধে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন।
১৩ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে ১৭ এপ্রিল মামলাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয় এবং ২০ এপ্রিল অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়। এর আগে ১৫ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায়ের আদালতে শিশুটির বোনের শ্বশুর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি বলেন, ৬ মার্চ সকালে বোনের স্বামীর কক্ষে শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুনমাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় চার আসামির রিমান্ডের আবেদন, আদালতের ফটকে বিক্ষোভ০৯ মার্চ ২০২৫তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আসামির জবানবন্দির সঙ্গে বাদীর এজাহারে কিছু অমিল রয়েছে। এজাহারে বলা হয়, ঘটনা ঘটেছিল রাতে এবং শিশুটির স্বামী ঘরের দরজা খুলে দেওয়ার পর তার বাবা শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। গত ১ মার্চ শিশুটি নিজ বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় হেলিকপ্টারে করে মরদেহ মাগুরায় আনা হয়। জানাজার পর উত্তেজিত জনতা শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এর আগে ৮ মার্চ শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়। বর্তমানে তাঁরা সবাই কারাগারে।
আরও পড়ুনমাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের মামলার তদন্ত দ্রুততম সময়ে শেষ করা হবে: আইজিপি১৩ মার্চ ২০২৫