যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশায়ারের ডুয়ার্স ফার্ম কোয়ারিতে ডাইনোসরের প্রায় ২০০টি পায়ের ছাপ খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

ডাইনোসরের পায়ের এই ছাপগুলো ১৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগের (মধ্য জুরাসিক যুগ) বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২০২৩ সালে সড়ক নির্মাণের জন্য চুনাপাথর উত্তোলনের সময় গ্যারি জনসন নামের এক খননশ্রমিক মাটিতে ‘অস্বাভাবিক ধাক্কা’ অনুভব করেন। এরপর শুরু হয় গবেষণা।

গবেষণায় প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী ডাইনোসরের চলাচলের একাধিক পথ ও পায়ের ছাপ আবিষ্কৃত হয়। এই পথগুলোকে ‘ডাইনোসর হাইওয়ে’ নামে ডাকা হয়।

বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সময়ে ডাইনোসরের চলাচলের পথের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেগুলো নথিভুক্তও করা হয়েছে।

অক্সফোর্ডশায়ারে সম্প্রতি আবিষ্কৃত এই ‘ডাইনোসর হাইওয়ে’ যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া সবচেয়ে বড় ডাইনোসর চলাচলের পথ।

ডাইনোসর চলাচলের এই পথ নিয়ে গত বছরের জুন মাসে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবী যৌথভাবে এক সপ্তাহ কাজ করেন। তাঁরা বিস্তৃত জায়গায় খননকাজ করেন। এলাকাটি সম্পর্কে যা যা তথ্য পাওয়া গেছে, তা নথিভুক্ত করেন।

১৮২৪ সালে অক্সফোর্ডশায়ারে প্রথম মেগালোসরাস প্রজাতির ডাইনোসর সম্পর্কে তথ্য জানা গিয়েছিল। এর ২০০ বছরের মাথায় নতুন এই আবিষ্কারকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোপ্যালিওন্টোলজি বিভাগের অধ্যাপক কার্স্টি এডগার এই খননকাজ ও গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, আসলেই এই এলাকায় ডাইনোসরের রোমাঞ্চকর পথ ও দেহের জীবাশ্ম থাকার একটি দীর্ঘ ঐতিহ্যগত অনুক্রম রয়েছে।

১৯৯৭ সালে এই অক্সফোর্ডশায়ারেই ডাইনোসরের চলাচলের একটি পথের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু সেই পথটি এখন আর সুগম নয়।

নতুন আবিষ্কৃত ডাইনোসরের চলাচলের পথগুলো বিজ্ঞানীদের এই প্রাণী সম্পর্কে আরও বিশ্লেষণের সুযোগ করে দেবে।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় বিজ্ঞানীরা বহু আগে বিলুপ্ত এই প্রাণীর গতিবিধি, খাদ্যাভ্যাসসহ বিভিন্ন অজানা তথ্য উন্মোচন করতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খননকাজ চালানোর সময় বিজ্ঞানীরা ডাইনোসরের চলাচলের পাঁচটি পথ আবিষ্কার করেন। এর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ পথটির দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটারের বেশি।

অধ্যাপক এডগারের তথ্য অনুসারে, ডাইনোসর চলাচলের এই পথগুলোর মধ্যে চারটিতে লম্বা গলার ও চার পাওয়ালা বিশাল আকৃতির ডাইনোসর চলাচল করত। তৃণভোজী এই প্রজাতিটি সরোপডস নামে পরিচিত।

আর পঞ্চম পথটিতে মেগালোসরাস প্রজাতির মাংসখেকো ডাইনোসরের পদচিহ্ন পাওয়া গেছে। মেগালোসরাস ৯ মিটার (৩০ ফুট) পর্যন্ত লম্বা হতো বলে ধারণা করা হয়।
অক্সফোর্ডশায়ারের গবেষকেরা ৬৫ সেন্টিমিটার (২ দশমিক ১ ফুট) পর্যন্ত লম্বা পদচিহ্নের সন্ধান পেয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য অপরাধীদের উৎসাহিত করবে: চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র

দুজন নারীর সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে একটি চিহ্নিত উগ্রবাদী গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে মব তৈরি করে তাদের লাঞ্ছিত করেছে বলে অভিযোগ করেছে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এমন ঘটনা একটি ফৌজদারি অপরাধ। অথচ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনো কথা নেই। এতে অপরাধীরা উৎসাহিত হবে।

রাজধানীর লালমাটিয়ায় নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িত সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিখিল দাস ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ওপেন স্পেসে (উন্মুক্ত স্থানে) সিগারেট না খাওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু সিগারেট খাওয়া–সংক্রান্ত আইনে টংদোকান ওপেন স্পেসের (উন্মুক্ত স্থান) মধ্যে পড়ে না, তিনি হয়তো আইনটি পড়ে দেখেননি।’

চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, একটি চিহ্নিত উগ্র সাম্প্রদায়িক নারীবিদ্বেষী গোষ্ঠী ক্রমাগত নারীদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ আগস্টের পর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে নারীদের নির্যাতন করতে দেখা গেছে। শুধু তা–ই নয়, এই গোষ্ঠী নারীদের খেলা বন্ধ করা, সাংস্কৃতিক আয়োজন বন্ধ করা, মাজারে আক্রমণসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথা সরকার এসব বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণে চরম ব্যর্থ হয়েছে।

আরও পড়ুন‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কীভাবে ক্রিমিনাল অফেন্সকে জাস্টিফাই করেন’৫ ঘণ্টা আগে

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সরে যাওয়া উচিত বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নারী লাঞ্ছনাসহ সব মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে।

আরও পড়ুন‘পাবলিক প্লেসে’ ধূমপান নারী–পুরুষ সবার জন্য অপরাধ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা০২ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ