অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, “আপনি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তারিখ ঘোষণা করুন। আপনি বলুন যে এত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। আমরা আশা করি, সরকার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং সত্যিকার অর্থে একটা গণতন্ত্র আসবে, মানুষ স্বাধীন থাকবে।”

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে রাজশাহী নগরের শহীদ জিয়া শিশুপার্ক এলাকায় রাজশাহী মহানগর যুবদল আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “ড.

মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবের সরকারকে সমস্ত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছেন। উনি একজন গুণী মানুষ। তিনি বাংলাদেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন। কিন্তু তাকে কোনো ধরনের বিভ্রান্তির মধ্যে যদি কেউ ফেলে তাহলে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জাগে।” 

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “মিথ্যাকে ঢেকে রাখা যায় না। এটা প্রকাশিত হয়। শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘সবাইকে কেনা যায়, কিন্তু শেখ হাসিনাকে কেনা যায় না।’ তিনি বলেছিলেন, ‘মানুষকে গণতন্ত্র দিয়েছি।’ কিন্তু আপনি যে কত নিয়েছেন তা মানুষকে বলেননি। আপনি আপনার গণতন্ত্র মানে ভোটাররা ভোট দিতে যাবে না।” 

তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার গণতন্ত্র মানে নির্বাচনের সময় বিরোধীদলের সবাইকে জেলের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখা। উনি যে গণতন্ত্র দিয়েছিলেন তাতে দেখেছি ভোটকেন্দ্রে চতুষ্পদ জন্তু বিচরণ করত। ভোটাররা যেত না। তিনি শুধু একটি দেশকে সমীহ করতেন। মুরুব্বি মানতেন। সেই জন্যই বলতেন, ‘আমি ভারতকে যা দিয়েছি তা তারা সারাজীবন মনে রাখবে।’ আপনি কী দিয়েছেন যা বাংলাদেশের মানুষ জানে না। তারা আপনাকে সাপোর্ট করে।” 

তিনি আরো বলেন, “পার্শ্ববর্তী দেশ আমাদের গণঅভ্যুত্থানের পর খুবই অসন্তুষ্ট। সমস্ত বিশ্ব খুশি হলেও তারা এখনো মেনে নিতে পারেনি।” 

রিজভী বলেন, “জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা চক্রান্তের মধ্যে দিয়ে আমরা গণতন্ত্রের পথে হাঁটছি। গণতন্ত্রের যে আরো শর্ত আছে অর্থাৎ, সুষ্ঠু নির্বাচন-সেদিকে হাঁটতে হবে। প্রয়োজনীয় যে সংস্কার, আমাদের জাতীয় সংসদ, সংবিধান, জনপ্রশাসন, পুলিশ-প্রশাসন-সবকিছুতে সংস্কার দরকার। কিন্তু সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করে এটা নিয়ে তর্কবিতর্ক করলে হবে না। বাংলাদেশের মানুষ ১৭ বছর ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনকে আকাশের তারা করে দিয়েছে। এখন দ্রুত নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।”

অনুষ্ঠানে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন, রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/কেয়া/ইমন

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনে যত দেরি, ক্ষতি তত বেশি: আমীর খসরু

নির্বাচনে যত দেরি হবে, দেশ তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, নির্বাচন যত দেরি করবে, দেশ তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশের দ্রব্যমূল্যের বিষয়টি দিন দিন খারাপ হচ্ছে, সেটা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।

আজ সোমবার জাতীয়তাবাদী কর আইনজীবী ফোরামের নবনির্বাচিত কমিটিকে নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশের মানুষের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে দ্রুততম সময়ে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে হবে। একেকটা দিন যাচ্ছে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যতীত, একেকটা সমস্যা বাড়ছে। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো গণতান্ত্রিক অর্ডারের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে জবাবদিহি নিশ্চিত করা।’ তিনি বলেন, দায়বদ্ধ সরকার, যাদের পলিটিক্যাল ওয়েট থাকবে, যাদের পলিটিক্যাল মোবিলাইজেশন ক্যাপাসিটি থাকবে, যাদের পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে, তারাই এ সমস্যার সমাধান করতে পারে।

বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, পুলিশ, র‌্যাব ও সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো কিছুর সমাধান করতে পারবেন না।

নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভব কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, নির্বাচন জুন মাসের মধ্যে সম্ভব। নির্বাচন কমিশন যেটা বলছে, তাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে কোনো সন্দেহ প্রকাশ করছে না। নির্বাচনের বিষয়টা সরকারকে বলতে হবে। সরকারের পলিটিক্যাল উইল (রাজনৈতিক ইচ্ছা) থাকতে হবে, ইচ্ছা থাকতে হবে এবং সেটার অপেক্ষায় জনগণ আছে।

এর আগে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ কর আইনজীবী ফোরামের নবনির্বাচিত নেতারা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, কর আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মাহবুবুস সালেকীন, সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের মেসবাহ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজনৈতিক দল, কর্তৃত্বপরায়ণতা ও নতুন বন্দোবস্ত
  • নির্বাচনে যত দেরি, ক্ষতি তত বেশি: আমীর খসরু
  • ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের জন্য বৈশ্বিক সহায়তা চান ইমরান
  • ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এবি পার্টির নেতাদের মতবিনিময়
  • স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে
  • ‘এ’ ক্ষমতা থেকে চলে গেছে, মনে হয় ‘বি’ ক্ষমতায় বসেছে: মাহমুদুর রহমান মান্না
  • নেতারা দেশে গণতন্ত্র চান, দলে চান না