ভেঙে গেল গার্দিওলার ৩০ বছরের সংসার
Published: 14th, January 2025 GMT
ফুটবল বিশ্বের অন্যতম সফল কোচ পেপ গার্দিওলা তার কোচিং ক্যারিয়ারে বার্সেলোনা, বায়ার্ন মিউনিখ ও ম্যানচেস্টার সিটিকে অসংখ্য সাফল্য এনে দিয়েছেন। তবে ব্যক্তিগত জীবনে সংসার টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হলেন তিনি। ৩০ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনেছেন গার্দিওলা ও তার স্ত্রী ক্রিস্টিনা সেরা।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম স্পোর্ত-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের সমাপ্তি ঘটেছে তাদের। পারস্পরিক সম্মতিতে এবং সম্পূর্ণ সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে এই বিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত পাঁচ বছর ধরে গার্দিওলা ও ক্রিস্টিনা আলাদা দেশে বসবাস করছিলেন। গার্দিওলা ছিলেন ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে এবং ক্রিস্টিনা স্পেনের বার্সেলোনায়। ডিসেম্বর মাসে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্কের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে শুধু ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যরা জানতেন।
গার্দিওলা তার স্ত্রীকে নিয়ে একবার বলেছিলেন, ‘আমার স্ত্রী অনেক কিছুর ক্ষেত্রে সেরা, বিশেষ করে ফ্যাশনের ক্ষেত্রে। তিনি আমাকে পরামর্শ দেন কী পরা উচিত আর কী নয়। আমি যথেষ্ট স্মার্ট যে বুঝতে পারি, তার পরামর্শগুলো আমার জন্য ভালো।’
ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত সাংবাদিক ও লেখক ক্রিস্টিনার সঙ্গে ১৯৯৪ সাল থেকে যৌথযাত্রা শুরু হয় গার্দিওলার। এরপর বার্সেলোনায় তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ২০১৪ সালে। কিন্তু বিয়ের ১০ বছরের মাথায় নিজেদের পথ আলাদা করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই দুজন। এই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে- ২৪ বছর বয়সী মারিয়া, ২২ বছর বয়সী মারিয়াস এবং ১৭ বছর বয়সী ভ্যালেন্তিনা।
ক্রিস্টিনা সেরা পেপ গার্দিওলার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলিতে সবসময় পাশে ছিলেন। ২০২৩ সালের জুনে ইস্তানবুলে গার্দিওলা যখন ম্যানচেস্টার সিটিকে ইন্টার মিলানের বিরুদ্ধে জয় এনে দিয়ে ট্রেবল জিতিয়েছিলেন, তখন ক্রিস্টিনাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। একই বছর জুলাইয়ে উইম্বলডনে এই দম্পতিকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল।
২০১৯ সালে সেরা তার পরিবারের ফ্যাশন কোম্পানি সেরা ক্লারেট পরিচালনার জন্য ম্যানচেস্টার ছেড়ে বার্সেলোনায় ফিরে যান। বিচ্ছেদের খবরের মাঝে গার্দিওলার দল ম্যানচেস্টার সিটি মাঠেও কিছুটা চাপে রয়েছে, কারণ চলতি মৌসুমে তারা শীর্ষ চারে নেই। গার্দিওলার অধীনে এমন বাজে পারফরম্যান্স কখনো দেয়নি ম্যানসিটি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাজউক চেয়ারম্যানসহ চারজনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল
আদালতের আদেশ অনুসরণ না করে ‘মিলেনিয়াম সিটি’ প্রকল্পের মাটি ভরাট অব্যাহত রাখায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানসহ চারজনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার অভিযোগে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল দেন। অপর তিনজন হলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা জেলা প্রশাসক ও মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আদালত অবমাননার অভিযোগে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেওয়া হয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী। তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না।
আদেশের বিষয়ে পরে আইনজীবী এস হাসানুল বান্না প্রথম আলোকে বলেন, মাটি ভরাটসহ মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার দায়িত্ব রাজউক চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকার জেলা প্রশাসকের। আদেশ অনুসারে তা প্রতিপালন না হওয়ায় চারজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনটি করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত রাজউক চেয়ারম্যানসহ চারজনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন।
এর আগে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত টোটাইল মৌজায় বিদ্যমান টোটাইল খাল, খাল–সংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ে মাটি ভরাটের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জনস্বার্থে গত বছর একটি রিট করে। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ জানুয়ারি হাইকোর্ট টোটাইল খাল, খাল–সংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ে মাটি ভরাট কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেন। একই সঙ্গে টোটাইল খাল ভরাট করে গড়ে ওঠা মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেডের অননুমোদিত মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের সব কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
বেলা জানায়, হাইকোর্টের আদেশে টোটাইল খাল, খাল–সংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ের বর্তমান অবস্থা তদন্ত, মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড কর্তৃক মাটি ভরাটের ফলে টোটাইল খালের যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে, তা নিরূপণ এবং হাউজিং কোম্পানি কর্তৃক টোটাইল মৌজায় অবস্থিত জলাশয়, বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল ও নিচু কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন প্রতিরোধ বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকার জেলা প্রশাসককে আদালতের আদেশ পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন ওই আদেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড আপিল বিভাগে আবেদন করে। বেলা জানায়, আপিল বিভাগ শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৯ এপ্রিল পক্ষগুলো মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মাটি ভরাটের সব কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। এর ফলে মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড অননুমোদিত মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পে নতুন করে মাটি ভরাটসহ কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করার সুযোগ নেই। আদালতের সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তা লঙ্ঘন করে সম্প্রতি মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড কর্তৃক অননুমোদিত মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পে মাটি ভরাটসহ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চলমান রেখেছে এবং প্লট তৈরি করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে চটকদার বিজ্ঞাপন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পোস্টার আকারে প্রচার করছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদনটি করে।
আরও পড়ুনখাল ভরাট ও মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা২২ জানুয়ারি ২০২৪