স্পেনে বাড়ি কিনতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাইরের বাসিন্দাদের দিতে হবে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত কর। স্পেন সরকার নতুন এই কর আরোপ করার পরিকল্পনা করছে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ নতুন এই পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে বলেছেন, দেশের আবাসনের জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য ‘অভূতপূর্ব’ পদক্ষেপটি প্রয়োজনীয়। পশ্চিমা দেশগুলো একটি চূড়ান্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি: ধনী জমিদার এবং দরিদ্র ভাড়াটে। এই দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত সমাজ। 

আরো পড়ুন:

চমক রেখে স্পেনের নেশন্স লিগের দল 

ডেনমার্ককে হারিয়ে শীর্ষে ফিরলো স্পেন

মাদ্রিদের একটি অর্থনৈতিক ফোরামে তিনি বলেন, “ইইউ বহির্ভূত বাসিন্দারা ২০২৩ সালে স্পেনে ২৭ হাজারটি সম্পত্তি কিনেছেন। তবে এতে বসবাস করার জন্য নয় বরং ভাড়া দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে।”

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “আমরা যে অভাবের মধ্যে আছি, তার প্রেক্ষাপটে, (আমরা) স্পষ্টতই অনুমোদন করতে পারি না।”

“অতএব, এই পদক্ষেপটি উপলব্দ বাড়িগুলোর বাসিন্দাদের প্রাধান্য দেওয়ার লক্ষ্যে নেওয়া হচ্ছে।”

সানচেজ এই কর কীভাবে কার্যকর হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি বা অনুমোদনের জন্য সংসদে এটি উপস্থাপনের সময়সীমাও জানাননি।

তবে তার সরকার বলেছে, সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনার পর প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করা হবে।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত এক ডজন পরিকল্পিত পদক্ষেপের মধ্যে এটি একটি, যা দেশে আবাসন ক্রয়ক্ষমতা উন্নত করার লক্ষ্যে ঘোষণা করা হয়েছে।

ঘোষিত অন্যান্য পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে- সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন সরবরাহকারী বাড়িওয়ালাদের জন্য কর ছাড়, ৩ হাজারেরও বেশি বাড়ি একটি নতুন পাবলিক হাউজিং সংস্থায় স্থানান্তর এবং কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও পর্যটন ফ্ল্যাটের ওপর উচ্চ কর।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যাদের স্বল্পমেয়াদি ভাড়া হিসেবে তিন, চার বা পাঁচটি অ্যাপার্টমেন্ট আছে তারা হোটেলের তুলনায় কম কর প্রদান করেন, যা ন্যায্য নয়।”

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

কীর্তনখোলার তীর থেকে উদ্ধার সেই শিশু ফিরল মায়ের কোলে

বরিশাল নগরীর উপকণ্ঠে কীর্তনখোলার তীর থেকে উদ্ধার পরিচয়হীন সেই নবজাতক ফিরেছে আপন ঠিকানায়। বাবার কোলে চড়ে গত রোববার রাতে ঢাকা থেকে বাগেরহাটে মায়ের কোলে পৌঁছে। তবে অনেকটা বিনা চিকিৎসায় শিশুটিকে বাড়ি ফিরতে হয়।

শিশুটির বাবা বাগেরহাট শহরে ফুটপাথের চা দোকানি গণেশ শ্যাম আজ বুধবার বিকেলে সমকালকে বলেন, গত রোববার দুপুরে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে রিলিজ দেওয়া হয়। রাতে তিনি ও তার শাশুড়ি সুমি দাস বাসে শিশুটিকে নিয়ে বাগেরহাটের ফেরেন। 

রিলিজ দেওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে গণেশ জানান, শিশুটির পিঠের টিউমার নিরসনে অস্ত্রোপচার করতে হবে। কিন্তু, একমাস বয়স হওয়ার আগে অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়। যেহেতু শিশুটির বয়স এক সপ্তাহ, তাই আরও তিন সপ্তাহ পর ঢামেকে ভর্তির জন্য পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।

শিশুটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বাবা গণেশ বলেন, পিঠের টিউমার থেকে পানি বের হচ্ছে। বাগেরহাটের চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কিন্তু, ঈদের ছুটি হওয়ায় চিকিৎসক পাচ্ছি না।

গত ২২ মার্চ রাত ১২টার দিকে বরিশাল নগরীর কীর্তণখোলার তীরে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় পরিত্যক্ত বাথরুমে অজ্ঞাত হিসেবে শিশুটি উদ্ধার হয়। স্থানীয় ফুচকা বিক্রেতা পারভীন বেগম শিশুটি উদ্ধার করে বরিশাল শের-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান। গত ২৮ মার্চ শিশুটির অভিভাবকের সন্ধান পাওয়া যায়। তার আগের দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর ও শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তত্বাবধানে শিশুটিকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

বাবা গণেশ দত্ত জানান, বরিশাল নগরীর সদর রোড মোখলেসুর রহমান ক্লিনিকে ২১ মার্চ তার স্ত্রী অন্তরা দাস শিশুটির জন্ম দেন। এটি তাদের প্রথম সন্তান। জন্মের পর শিশুটির পিঠে টিউমার ধরা পড়ে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওইদিনই নবজাতককে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলো। ব্যয়বহুল চিকিৎসা ও পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ার আশঙ্কায় ২২ মার্চ দুপুরে ওয়ার্ডে বসেই শিশুটিকে এক রিক্সাচালকের কাছে হস্তান্তর করেন। এরপর আর কিছু তাদের জানা নেই।

শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউর মুনীর জানান, শিশুটির পিঠে মেরদণ্ডের টিসু থেকে টিউমারের উৎপত্তি হয়েছে। এটি পুরোপুরি ভাল হওয়ার সম্ভাবনা কম। চিকিৎসাও অনেক ব্যয়বহুল। তিনি জানান, শিশুটি দত্তক নিতে অনেকে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তবে শারীরিক অবস্থা দেখে ফিরে যান। বরিশাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজও জানান, শিশুটির চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ