স্পেনে বাড়ি কিনতে দিতে হবে ১০০ শতাংশ কর
Published: 14th, January 2025 GMT
স্পেনে বাড়ি কিনতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাইরের বাসিন্দাদের দিতে হবে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত কর। স্পেন সরকার নতুন এই কর আরোপ করার পরিকল্পনা করছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ নতুন এই পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে বলেছেন, দেশের আবাসনের জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য ‘অভূতপূর্ব’ পদক্ষেপটি প্রয়োজনীয়। পশ্চিমা দেশগুলো একটি চূড়ান্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি: ধনী জমিদার এবং দরিদ্র ভাড়াটে। এই দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত সমাজ।
আরো পড়ুন:
চমক রেখে স্পেনের নেশন্স লিগের দল
ডেনমার্ককে হারিয়ে শীর্ষে ফিরলো স্পেন
মাদ্রিদের একটি অর্থনৈতিক ফোরামে তিনি বলেন, “ইইউ বহির্ভূত বাসিন্দারা ২০২৩ সালে স্পেনে ২৭ হাজারটি সম্পত্তি কিনেছেন। তবে এতে বসবাস করার জন্য নয় বরং ভাড়া দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে।”
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “আমরা যে অভাবের মধ্যে আছি, তার প্রেক্ষাপটে, (আমরা) স্পষ্টতই অনুমোদন করতে পারি না।”
“অতএব, এই পদক্ষেপটি উপলব্দ বাড়িগুলোর বাসিন্দাদের প্রাধান্য দেওয়ার লক্ষ্যে নেওয়া হচ্ছে।”
সানচেজ এই কর কীভাবে কার্যকর হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি বা অনুমোদনের জন্য সংসদে এটি উপস্থাপনের সময়সীমাও জানাননি।
তবে তার সরকার বলেছে, সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনার পর প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করা হবে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত এক ডজন পরিকল্পিত পদক্ষেপের মধ্যে এটি একটি, যা দেশে আবাসন ক্রয়ক্ষমতা উন্নত করার লক্ষ্যে ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘোষিত অন্যান্য পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে- সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন সরবরাহকারী বাড়িওয়ালাদের জন্য কর ছাড়, ৩ হাজারেরও বেশি বাড়ি একটি নতুন পাবলিক হাউজিং সংস্থায় স্থানান্তর এবং কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও পর্যটন ফ্ল্যাটের ওপর উচ্চ কর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যাদের স্বল্পমেয়াদি ভাড়া হিসেবে তিন, চার বা পাঁচটি অ্যাপার্টমেন্ট আছে তারা হোটেলের তুলনায় কম কর প্রদান করেন, যা ন্যায্য নয়।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।
পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।
এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা
এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও।
রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।
প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”
অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”
অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”
গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”
কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”
স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ