হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ঐতিহ্যবাহী মুড়ারবন্দ ১২০ আউলিয়া দরবার শরীফে বার্ষিক ওরস শুরু হয়েছে। ১৪, ১৫ ও ১৬ জানুয়ারি তিন দিনব্যাপী ৭০৪তম বার্ষিক পবিত্র ওরস উপলক্ষে দরবার শরীফে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কড়া নজরদারী রয়েছে দরবার শরীফের কর্তৃপক্ষ, র‌্যাব, থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের। 

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে দরগা কমিটি মোতাওয়াল্লী শাহ সূফী সৈয়দ সফিক আহমদ চিশতী সফি প্রথমে মাজার শরীফে গিলাপ ছড়ানোর মধ্য দিয়ে ওরসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। 

আগামী বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) মাজার গোসল শেষে রাতে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ওরসের সমাপ্তি ঘটবে। 

প্রসঙ্গত, সিলেটে চিরনিদ্রায় শায়িত হযরত শাহজালাল (রহঃ) এর সফর সঙ্গী প্রধান সেনাপতি তরফ বিজয়ী হযরত সৈয়দ শাহ নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রহঃ) মদিনা শরীফে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাগদাদ থেকে দিল্লীতে এসে সুলতান আলাউদ্দিন খিলজীর অধীনে ফৌজি বিভাগে যোগদান করেন।

দিল্লীর সম্রাট তার কামালিয়াতের পরিচয় পেয়ে শাহী সৈন্য বাহিনীর নেতৃত্ব গ্রহণ করে সিলেট অঞ্চল বিজয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পথিমধ্যে সিলেট অঞ্চলে হযরত শাহজালাল ইয়ামনী (রহঃ) সঙ্গে মোলাকাত হয় হযরত সৈয়দ শাহ নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (রহঃ)। এ সময় মুসলমানদের উপর রাজা গৌরগবিন্দের অত্যাচারের সংবাদ পেয়ে শাহী সৈন্যদের সঙ্গে যোগদান করতে সম্মতি প্রকাশ করেন তিনি। ৭০৩ হিজরী ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে সিলেট অঞ্চলকে বিজয় করে হবিগঞ্জ জেলার লস্করপুর, দাউদনগর, সুলতানশী, চুনারুঘাট উপজেলার মুড়ারবন্দ নামক স্থানে তরফ রাজ্যের শাসনকর্তা হিসেবে নিযুক্ত হয়ে তিনি বসতি স্থাপন করেন।

ঢাকা/মামুন/ইমন

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ঠিকাদার বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ২ প্রকৌশলীকে হুমকির অভিযোগ

খুলনা নগরীর খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগের বিরুদ্ধে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দুই প্রকৌশলীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কুয়েটের একটি ভবনের ছাদের ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে লাভ আরও বেশি নির্ধারণের কথা বলেছিলেন ওই ঠিকাদার। এ নিয়ে প্রকৌশলীদের তিনি হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

এ প্রেক্ষাপটে কুয়েটের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) শেখ আবু হায়াত ও নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. গোলাম কিবরিয়া সোমবার কুয়েট উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করে নিরাপত্তা চেয়েছেন। 

সূত্র জানায়, কুয়েটের ১৩ নম্বর ভবনের ছাদের ওপর ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজ নিয়েছেন মোল্লা সোহাগ। কাজটি কয়েকদিন আগে শুরু হয়। গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে ঠিকাদার সোহাগ প্রথমে নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী এ বি এম মামুনুর রশিদ এবং অন্য নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন। গালাগাল করতে নিষেধ করলে তিনি গোলাম কিবরিয়াকেও গালাগাল ও হুমকি দেন। পরে তিনি একই পরিচয় দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে ফোনে গালাগাল ও হুমকি দেন।

উপাচার্যের কাছে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী লিখিত অভিযোগে বলেন, ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজের দর প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ের প্রকৌশলীরা বাজারদরের সঙ্গে সরকারি নিয়মে ভ্যাট, আইটি ও ১০ শতাংশ প্রফিট বা লাভ (পূর্বনির্ধারিত) যুক্ত করে নির্ধারণ করেন। ঠিকাদার সোহাগ ১০ শতাংশ লাভ কেন যুক্ত করে দর নির্ধারণ করা হয়েছে, তাঁকে আরও বেশি লাভ দিতে হবে বলে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়াকে জানান। এ কথা বলার পর প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ও শেখ আবু হায়াতকে গালাগাল ও মারধরের হুমকি দেন সোহাগ। এ অবস্থায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াত বলেন, রোববার বিকেল ৩টার কিছু আগে খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বলে– ‘তুই চেয়ারের পরে বসে সবাইরে ১০ লাখ ২০ লাখ টাকার কাজ দিস। আমাকে দিছিস টেন পারসেন্ট লাভে।’ এই বলে আমাকে যাচ্ছেতাই বলে গালাগাল করেন। পাঁচ মিনিট পর ফোন দিয়ে আমাকে দেখে ছাড়বেন, আমার বাড়ি আক্রমণ করবেন, ফুলবাড়িগেটে গেলে আমাকে দেখে নেবেন– এসব বলে হিুমকি দেন। 

নিজের সাংগঠনিক পরিচয় ও প্রকৌশলীকে ফোন দেওয়ার কথা স্বীকার করেন মোল্লা সোহাগ। তবে কোনো ধরনের ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন। মোল্লা সোহাগ বলেন, আমার নেতার অর্ডার আছে– আমি কোনো জায়গায় কোনো টেন্ডারেও যাই না, কোনো ঠিকাদারিতেও নেই। আমার কোনো কাজ কুয়েটে চলে না। আমার ট্রেড লাইসেন্সই নেই, কাজ পরের কথা। আমি তাদের (প্রকৌশলী) ফোন দিয়েছিলাম, কথা হয়েছে, তবে কোনো হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়নি।

কোনো কাজ চলছে না, তাহলে প্রকৌশলীদের কার হয়ে ফোন দিয়েছিলেন– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আবু হায়াত ও গোলাম কিবরিয়াকে ফোন দিলে ভালোভাবে জানতে পারবেন।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ