গত বছরের সেপ্টেম্বরে আইফোন ১৬, আইফোন ১৬ প্লাস, আইফোন ১৬ প্রো ও আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স মডেলের নতুন আইফোন আনার পর থেকে বেশ ভালোই ঝামেলায় পড়েছে অ্যাপল। বাজারে আসার পরপরই নতুন আইফোনের স্পর্শনির্ভর পর্দা কাজ না করার পাশাপাশি ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন অনেক ব্যবহারকারী। এরপর আইফোনগুলোর বিরুদ্ধে বারবার রিস্টার্ট ও হ্যাং হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এবার আইফোন ১৬ সিরিজের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন ব্যবহারকারীরা। অ্যাপলের গ্রাহক ফোরামে বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন, চার্জ করা অবস্থায় ১৬ সিরিজের আইফোনের অ্যাকশন এবং ক্যামেরা কন্ট্রোল বাটন স্পর্শ করলেই ইলেকট্রিক শক করছে।

অ্যাপলের গ্রাহক ফোরামে একজন ভুক্তভোগী লিখেছেন, ‘আমি মাত্র এক সপ্তাহ আগে আইফোন ১৬ কিনেছি। কিন্তু চার্জ দেওয়ার সময় ক্যামেরা বাটন ধরলেই ইলেকট্রিক শক করছে। এটি খুবই অস্বস্তিকর।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘আমার আইফোন ১৬ প্রো চার্জ দেওয়ার সময় ইলেকট্রিক শক খেয়েছি। আঙুল এখনো ঝনঝন করছে। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক।’

অ্যাপলের অফিশিয়াল সুরক্ষা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অফিশিয়াল চার্জিং এক্সেসরিজ ব্যবহার করলে আগুন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, আঘাত বা ডিভাইসের ক্ষতির ঝুঁকি কমে যায়। কিন্তু অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন, অ্যাপলের অফিশিয়াল চার্জার ও কেব্‌ল ব্যবহার করার পরও একই সমস্যা দেখা গেছে। এ বিষয়ে একজন ভুক্তভোগী মন্তব্য করেছেন, অফিশিয়াল চার্জিং ক্যাবলও ব্যবহার করেছি। কিন্তু সমস্যা থেকে মুক্তি পাইনি। অ্যাপলের উচিত বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা।

আরও পড়ুননতুন আইফোনের ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে কেন১৯ অক্টোবর ২০২৪

আইফোন চার্জ করার সময় ইলেকট্রিক শক করার বিষয়ে এখন পর্যন্ত অ্যাপলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আইফোনের এই সমস্যা বড় ধরনের ঝুঁকির কারণ হতে পারে। আর তাই ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অ্যাপলকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে উড়োজাহাজ-হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় বেঁচে নেই কেউ

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির মাঝ আকাশে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ও সামরিক হেলিকপ্টারের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর পর উড়োজাহাজ ও  হেলিকপ্টার নদীতে বিধ্বস্ত হয়। 

বুধবার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় রিগ্যান ওয়াশিংটন ন্যাশনাল এয়ারপোর্টের রানওয়ে ৩৩-এর কাছাকাছি ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটিতে মোট ৬০ জন যাত্রী এবং চার ক্রু সদস্য ছিলেন। আর হেলিকপ্টারে তিনজন মার্কিন সেনা ছিলেন। এ ঘটনায় আর কেউ বেঁচে নেই বলে জানিয়েছেন একজন দমকলকর্মী। এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় পড়া বিমানটি কানসাস থেকে রওনা হয়েছিল বলে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বুধবার রাতে রোনাল্ড রিগ্যান ওয়াশিংটন ন্যাশনাল এয়ারপোর্টের কাছে মাঝ আকাশে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের সঙ্গে মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ হয়। এর পর উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টারটি হিমশীতল পটোম্যাক নদীতে বিধ্বস্ত হয়।

দমকল বাহিনীর প্রধান জন ডনেলি জানান, মাঝ আকাশে মার্কিন সেনা হেলিকপ্টারের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ওয়াশিংটন ডিসির পটোম্যাক নদীতে আছড়ে পড়া আমেরিকান এয়ারলাইন্সের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটির ‘আরোহীরা সম্ভবত কেউই বেঁচে নেই’। তিনি এ পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছেন। 

দুর্ঘটনায় সম্ভাব্য ৬০ জনেরও বেশি মানুষকে একসঙ্গে হারানো সত্যিই খুব কঠিন। যখন একজনের মৃত্যু হয়, তখন তা কষ্টদায়ক, কিন্তু যখন অনেক অনেক মানুষ মারা যান, তখন সেই দুঃখ সওয়া যায় না। এটা অনেক বেশি হৃদয়বিদারক। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীর রিগ্যান বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই বলেন কানসাসের সিনেটর রজার মার্শাল।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর জয়েন্ট টাস্কফোর্স-ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওনের গণমাধ্যমবিষয়ক প্রধান হেদার চাইরেজ সিবিএস নিউজকে বলেন, সামরিক হেলিকপ্টারটির প্রশিক্ষণ ফ্লাইট ছিল।

যাত্রীবাহী বিমানটিতে একাধিক আইস স্কেটার, তাদের পরিবারের সদস্য ও কোচরা উইচিটার এক ক্যাম্প থেকে ফিরছিলেন। তাদের মধ্যে রাশিয়ায় জন্ম নেওয়া সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইয়েভগেনিয়া শিশকোভা ও ভাদিম নৌমভও ছিলেন।

এক পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, ডুবুরি দল উড়োজাহাজটির দুটি ডেটা রেকর্ডারের একটি উদ্ধার করেছে।

এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে দুর্ঘটনায় জড়ানো ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারের বেতার বার্তা থেকে জানা গেছে, হেলিকপ্টারটির পথে যে উড়োজাহাজটি ছিল, তা হেলিকপ্টারের ক্রুরা জানতেন। পরে ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও হেলিকপ্টার ক্রু এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি লিখেছেন, দেখে মনে হচ্ছে, এটা ঠেকানো যেত। ভালো হলো না।

ইতোমধ্যে বিমানবন্দরে স্বজনের ভিড় জমেছে। তারা বলেছেন, ঘটনাটির বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাননি। বরং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকেই বেশি তথ্য পাচ্ছেন তারা।

গত প্রায় ১৬ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এটিই প্রথম সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। নিউজউইক জানায়, এর আগে সর্বশেষ সবচেয়ে বড়  উড়োজাহাজ দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। আর এই নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

১৯৮২ সালে পটোম্যাক নদীর ওপর ফোরটিন্থ স্ট্রিট ব্রিজে এয়ার ফ্লোরিডা ফ্লাইট ৯০ বিধ্বস্ত হয়েছিল। এই ঘটনায় ৭০ যাত্রী এবং ৪ ক্রু নিহত হন। শুধু চার যাত্রী এবং একজন ক্রু বেঁচে গিয়েছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানসিক দক্ষতা বাড়ানোর কৌশল নিয়ে মেলায় আসিফ ইকবালের বই
  • শুধু নারী নয়, পুরুষরাও যৌন হয়রানির শিকার হয়: প্রিয়াঙ্কা
  • বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লির মৃত্যু 
  • গায়িকা-অভিনেত্রী মারিয়ান ফেইথফুল আর নেই
  • সাইফুল-সাজ্জাদে তটস্থ চট্টগ্রামের ৫ থানার পুলিশ
  • কামরুল হাসানের কাছে শিল্প ধরা দিয়েছিল
  • ‘আমার চিত্রকর সত্তার মৃত্যু ঘটিয়েছি’
  • ‘রেখাচিত্রকে অবহেলা করা উচিত নয়’
  • অনুষ্ঠানে প্রবেশে নারী সাংবাদিককে ‘বাধা’, যা হয়েছিল সেদিন
  • যুক্তরাষ্ট্রে উড়োজাহাজ-হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় বেঁচে নেই কেউ