রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ উপ-পরিদর্শকরা (এসআই) চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে বসেছেন।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল থেকে সচিবালয়ের সামনে তারা এ অনশন শুরু করেন। সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর গেটের বিপরীত পাশে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের দিকের সড়কে অনশনে বসেছেন তারা।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, চট বিছিয়ে বসে আছেন অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআইরা।   কেউ কেউ প্ল্যাকার্ড বিছিয়ে বসে আছেন।

অব্যাহতি পাওয়া এসআই মো.

মনির হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমরা গতকাল থেকে আমরণ অনশনে বসেছি। প্রচন্ড শীতের মধ্যে সারা রাত দাবি আদায়ে নির্ঘুম ছিলাম। আমাদের চাকরি ফেরত দেন না হলে মেরে ফেলেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।”

সবুজ ঘোষ নামে একজন রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি, আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশনে থাকব। আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে হবে। কষ্ট যতই হোক দাবি আদায় ছাড়া ঘরে যাব না।” 

অব্যাহতি পাওয়া আরেক এসআই সানিয়া বলেন, “আমরা কোনো অন্যায় করেনি। আজ দুদিন, এখন পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। আশা করি, আমাদের সঠিক দাবি সরকার মেনে নেবে।” 

আন্দোলনকারীরা জানান, ট্রেনিং থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদ ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে তারা ৩২১ জন  গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তাদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র সচিব দেখা করে দাবির বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।‌ কিন্তু ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ তারা দেখতে পাননি। সেজন্য  ১৩ জানুয়ারি থেকে  অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। 

৪০তম ক্যাডেট এসআই ব্যাচে প্রশিক্ষণের জন্য মোট ৮২৩ জন ছিলেন। তারা গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু করেন। তাদের মধ্যে চার ধাপে ৩১৩ জন এসআইকে মাঠে ও ক্লাসে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তুলে শোকজ করে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

ঢাকা/এএএম/ইভা

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভুয়া পুলিশ’ বলে এসআইকে মারধর, ওয়াকিটকি ছিনতাই

চট্টগ্রামে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে পরিকল্পিতভাবে মব তৈরি করে মারধর এবং মুঠোফোন ও ওয়াকিটকি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে তাফসীর ইমাম ও মো. সাইমন নামের দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের চরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ১১টার দিকে পতেঙ্গা থানার টহল টিমের দায়িত্বে থাকা এসআই ইউসুফ আলীর চোখে পড়ে চরপাড়াঘাট এলাকায় কিছু স্থানীয় যুবক মাদক (গাঁজা) সেবন করছেন। এসআই ইউসুফ আলী সেখানে গিয়ে যুবকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ওই যুবকেরা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান। এসআই ইউসুফ আলী তাঁদের সতর্ক করে ছেড়ে দেন।

আধা ঘণ্টা পর বেশ কিছু লোককে সঙ্গে নিয়ে পতেঙ্গা সৈকতে ফিরে আসেন ভুল স্বীকার করা দুই যুবক। এই সময় এসআই ইউসুফ আলী তাঁর সঙ্গে থাকা টহল গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। যুবকেরা এসে তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি তো ভুয়া পুলিশ। আপনার আইডি কার্ড কই?’ এরপর মুহূর্তের মধ্যেই এসআই ইউসুফ আলীর ওপর আক্রমণ শুরু করেন। এলোপাতাড়ি মারধর করা হয় তাঁকে। ইউসুফ আলীর কাছ থেকে ওয়াকিটকি সেট, মুঠোফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পতেঙ্গা থানার পুলিশ এসআই ইউসুফ আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাতে অভিযান চালিয়ে জড়িত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে পতেঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে।

পতেঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদুল আলম আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার দুজনের কাছ থেকে এসআই ইউসুফ আলীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ওয়াকিটকি, মুঠোফোন ও মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি চাকু ও মোটরসাইকেল পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার আসামিদের নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। তারা বখাটে প্রকৃতির।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
  • আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণঅবস্থানের ১৮ দিন
  • পুলিশ দেখে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
  • মব তৈরি করে এসআইকে হেনস্থা, গ্রেপ্তার আরও ১০
  • পতেঙ্গা সৈকতে পুলিশের এস আইয়ের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ১০ 
  • চট্টগ্রামে এসআইর ওপর হামলা, দুই ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার
  • ‘ভুয়া পুলিশ’ বলে এসআইকে মারধর, ওয়াকিটকি ছিনতাই