আজও সচিবালয়ের সামনে আমরণ অনশনে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআইরা
Published: 14th, January 2025 GMT
রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ উপ-পরিদর্শকরা (এসআই) চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে বসেছেন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল থেকে সচিবালয়ের সামনে তারা এ অনশন শুরু করেন। সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর গেটের বিপরীত পাশে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের দিকের সড়কে অনশনে বসেছেন তারা।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, চট বিছিয়ে বসে আছেন অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআইরা। কেউ কেউ প্ল্যাকার্ড বিছিয়ে বসে আছেন।
অব্যাহতি পাওয়া এসআই মো.
সবুজ ঘোষ নামে একজন রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি, আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশনে থাকব। আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে হবে। কষ্ট যতই হোক দাবি আদায় ছাড়া ঘরে যাব না।”
অব্যাহতি পাওয়া আরেক এসআই সানিয়া বলেন, “আমরা কোনো অন্যায় করেনি। আজ দুদিন, এখন পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। আশা করি, আমাদের সঠিক দাবি সরকার মেনে নেবে।”
আন্দোলনকারীরা জানান, ট্রেনিং থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদ ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে তারা ৩২১ জন গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তাদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র সচিব দেখা করে দাবির বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ তারা দেখতে পাননি। সেজন্য ১৩ জানুয়ারি থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
৪০তম ক্যাডেট এসআই ব্যাচে প্রশিক্ষণের জন্য মোট ৮২৩ জন ছিলেন। তারা গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু করেন। তাদের মধ্যে চার ধাপে ৩১৩ জন এসআইকে মাঠে ও ক্লাসে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তুলে শোকজ করে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ঢাকা/এএএম/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েট শিক্ষার্থীদের সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন চলছে, একজন হাসপাতালে
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরণ অনশন করছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ১৭ নেতা-কর্মী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই অনশন কর্মসূচির ১৪ ঘণ্টা পেরিয়েছে। ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ায় অনশনরত একজন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন শুরু করেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের এই নেতা-কর্মীরা। এর আগে বিকেল থেকে প্রতীকী অনশন চলছিল।
আজ বুধবার বেলা ১টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ১৪ ঘণ্টা পরও অনশনকারীরা সেখানে অবস্থান করছেন। তাঁরা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আমরণ অনশন করছেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ১৭ নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে আছেন ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব মহির আলম। আরও আছেন লিমন মাহমুদ, রেজওয়ান আহমেদ, সাকিব আহমেদ, সাব্বির উদ্দিন, আহনাফ রহমান, আনিকা তাহসিনা, সায়লা আক্তার প্রমুখ।
অনশনরত অবস্থায় আজ সকালে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন সাদাত অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব রেজওয়ান আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কুয়েটের উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।’
এ বিষয়ে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আরেক যুগ্ম সদস্যসচিব সাকিব আহমেদ বলেন, ‘আমরা কুয়েটের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আমরণ অনশন শুরু করেছি। ইতিমধ্যে আমাদের একজন অসুস্থ হয়ে গেছেন।’
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক কর্মসূচি থেকে মঙ্গলবার রাত ১০টার মধ্যে কুয়েটের উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে কুয়েট উপাচার্যকে না সরানো হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ‘কুয়েট বাঁচাতে শাহবাগ ব্লকেডের’ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কুয়েটের উপাচার্য পদত্যাগ না করায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু শিক্ষার্থী রাত ১০টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে তাঁরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীদের অবরোধে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দুই ঘণ্টা পর অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন তাঁরা।
কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি ঘিরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন। পরদিন কুয়েটের প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। আগামী ২ মে থেকে আবাসিক হল খুলে দেওয়া এবং ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
আরও পড়ুনকুয়েটের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শাহবাগে ‘ব্লকেড’, যান চলাচল বন্ধ১৪ ঘণ্টা আগেকিন্তু গত ১৫ এপ্রিল কুয়েটের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
গত রোববার উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। পদত্যাগ না করায় গত সোমবার বিকেলে কুয়েট ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আজ কুয়েট ক্যাম্পাসে গেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে পৌঁছান।
আরও পড়ুনকুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনকুয়েটে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন শুরু, চলছে আলোচনা২১ এপ্রিল ২০২৫