নেত্রকোনায় অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক দিলীপ কুমার সাহা রায় (৭১) হত্যাকাণ্ডের চার দিন পার হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ; কেউ গ্রেপ্তারও হয়নি। তাঁর পরিবারের সদস্যরা দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।

দিলীপ কুমার সাহা রায় নেত্রকোনার আবু আব্বাছ কলেজের কৃষিশিক্ষা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মাইজার এলাকায়। তিনি নেত্রকোনার শহরের বড়বাজার এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন।  

এ বিষয়ে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনা তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে থানা–পুলিশের পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনসহ (পিবিআই) একাধিক দল মাঠে কাজ করছে। আশা করা যাচ্ছে, হত্যার রহস্য উদ্‌ঘানসহ জড়িত ব্যক্তিদের আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিলীপ কুমার সাহা রায় ও বিভা সাহা দম্পতির এক ছেলে ও মেয়ে ঢাকায় থাকেন। কয়েক দিন আগে বিভা সাহা ছেলের কাছে বেড়াতে গিয়েছিলেন। দিলীপ কুমার বাসায় একাই ছিলেন। গত শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে বিভা সাহা ঢাকা থেকে বাসায় পৌঁছে ঘরের দরজায় তালা দেখতে পান। একপর্যায়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় দরজার তালা ভেঙে তিনি ভেতরে প্রবেশ করেন এবং খাটের নিচে স্বামীর রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। তাঁকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

এ ঘটনায় গত রোববার রাতে বিভা সাহা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত কাউকে শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

মামলার বাদী বিভা সাহা বলেন, ‘কীভাবে, কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা আমরা বুঝতে পারছি না। আমার স্বামীর সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতাও ছিল না। আমার স্বামীকে তো আর ফিরে পাব না, কিন্তু আমি চাই, ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনসহ জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বৃত্তি পেলেন ঢাবির ২ বিভাগের ১২ শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক নাজমা বেগম ট্রাস্ট ফান্ড ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান সতীর্থ ফোরাম ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে ১২ জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। 

সোমবার (৩ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান তার অফিস সংলগ্ন সভাকক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে এ বৃত্তির চেক তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে অর্থনীতি বিভাগে বিভিন্ন বর্ষের অধ্যয়নরত ছয়জন শিক্ষার্থীকে অধ্যাপক নাজমা বেগম ট্রাস্ট ফান্ড বৃত্তি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত ছয়জন শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান সতীর্থ ফোরাম ট্রাস্ট ফান্ড বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কোটা চালু করা হয়েছে: বিন ইয়ামিন

আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণঅবস্থানের ১৮ দিন

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক মাসুদা ইয়াসমীন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. নাছিমা খাতুন, অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. নাজমা বেগম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মো. ফেরদৌস হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান সতীর্থ ফোরামের অন্যতম দাতা মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।

ট্রাস্ট ফান্ডের দাতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি গভীর মমতা ধারণ করেন বলেই ট্রাস্ট ফান্ডগুলো গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। এ উদ্যোগগুলো আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে এবং সমাজকে নিয়ে চলতে শেখায়। এ আয়োজনগুলো করতে পেরে আমরা সম্মানিত বোধ করি।”

তিনি বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্ট ফান্ডগুলো গোছানোর চেষ্টা করছি। আকার ও পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করছি। যাতে আরো বহু সংখ্যাক শিক্ষার্থীকে এসব ফান্ডের আওতায় আনা যায়। আমরা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনকেও সক্রিয় করার চেষ্টা করছি।”

বৃত্তিপ্রাপ্তদের উদ্দেশ্য করে উপাচার্য বলেন, “এ বয়সে ফাঁদ ও প্রলোভন বেশি। এর থেকে বাঁচতে হলে তোমাদেরকে পরিশ্রম ও নৈতিক শক্তির ওপর বেশি নির্ভর করতে হবে।” কাজের মাধ্যমে ট্রাস্ট ফান্ড বৃত্তির প্রতিদান দিতে তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।

২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. নাজমা বেগম ৬ লাখ টাকা প্রদানের মাধ্যমে ‘অধ্যাপক নাজমা বেগম ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠা করেন। ট্রাস্ট ফান্ডটির বর্তমান মূলধন ১৫ লাখ টাকা। প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিষয়ে বিএসএস (সম্মান) শ্রেণিতে অধ্যয়নরত প্রথম বর্ষের দুইজন, দ্বিতীয় বর্ষের একজন, তৃতীয় বর্ষের একজন, চতুর্থ বর্ষের একজন ও এমএসএস শ্রেণির একজনসহ মোট ছয়জন মেধাবী ও অসচ্ছল ছাত্র-ছাত্রীকে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সুপারিশক্রমে এককালীন ১৫ হাজার ৮২১ টাকা করে বৃত্তি প্রদান করা হয়।

অপরদিকে, ১৯৭৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল ১৭ লাখ টাকা প্রদানের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিজ্ঞান সতীর্থ ফোরাম ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেন। ট্রাস্ট ফান্ডটির বর্তমান মূলধন ১৮ লাখ টাকা। প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত ছয়জন মেধাবী ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সুপারিশক্রমে এককালীন ১২ হাজার টাকা করে বৃত্তি প্রদান করা হয়।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জমি হারানোর ভয় অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার
  • বৃত্তি পেলেন ঢাবির ২ বিভাগের ১২ শিক্ষার্থী
  • মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হোসনে আরা বেগম, মহাসচিব ফারজানা ইয়াসমিন
  • শপথ নিলেন পিএসসির নতুন ৭ সদস্য
  • শপথ নিলেন পিএসসির নতুন ৭ সদস্য  
  • মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হোসনে আরা, মহাসচিব ফারজানা
  • সপ্তম ওয়ালটন কাপ গলফ টুর্নামেন্ট সমাপ্ত
  • পিএসসির নতুন সদস্যদের শপথ কাল
  • কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে জামায়াতের প্রার্থী সাবেক রাষ্ট্রপতির শ্যালক