মোস্তাফিজ এখন পিএসএলেও দল পান না, দিন কি তবে শেষ
Published: 14th, January 2025 GMT
টি-টোয়েন্টিতে সেরা ডেথ বোলার কে?
আপনার হাতে অপশন দুটি—যশপ্রীত বুমরা নাকি মোস্তাফিজুর রহমান। ভোট না দিয়ে প্রশ্নকর্তার প্রতি রাগও হতে পারেন। ভাবতে পারেন, এ আবার কেমন তুলনা! বুমরার সঙ্গে মোস্তাফিজের নামটা যায় নাকি? বর্তমান বাস্তবতায় তুলনার কোনো সুযোগ নেই।
একজন নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য পর্যায়ে আর অন্যজনের ভালো করতে হলে দিনটা নিজের হতে হয়। তবে একটা সময় এই দুজনের তুলনা বেশ ঘটা করেই হতো। সেটা আবার আইপিএলেই।
২০১৬ সালের আইপিএলের কথা। মোস্তাফিজুর রহমান সানরাইজার্স হায়দরাবাদের। অন্যদিকে যশপ্রীত বুমরা খেলছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে। দুজনেই তখন উঠতি তারকা। টি-টোয়েন্টিতে কে ভালো, বিশেষ করে ডেথ ওভারে, তা ছিল আলোচনার বিষয়।
হায়দরাবাদ বনাম মুম্বাইয়ের ম্যাচে আইপিএল কর্তৃপক্ষই এই প্রশ্নের উত্তর দর্শকদের কাছেই জানতে চেয়েছিল। তাতে কে কত শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন, জানেন? না, মোস্তাফিজ জিততে পারেননি। তবে ভোট পেয়েছিলেন ৪৮ শতাংশ। এত শতাংশ ভোটের মধ্যে নিঃসন্দেহে অসংখ্য ভারতীয়ও তাঁকে ভোট দিয়েছেন। এখন কি একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে?
আরও পড়ুনযে ছক্কা মারতে লেগেছিল ২১ বছর১৪ জানুয়ারি ২০২৪ভারতীয়দের কথা বাদ দিন। এমন কোনো ক্রিকেট–সমর্থকও কি আছেন, যিনি বলতে পারবেন, বুমরার সঙ্গে মোস্তাফিজের তুলনা চলে। কী তুলনা দেবেন, মোস্তাফিজ যে এখন পাকিস্তান সুপার লিগেও দল পান না। গতকাল হওয়া ড্রাফটে তাকে নেয়নি কোনো দল। এর আগে তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আইপিএলের দলগুলোও। জাতীয় দলেও সেই আগের ঝাঁজটা নেই। মোস্তাফিজ ৪ ওভার বোলিং করে দেন, তাতে ভীতিকর কিছু থাকে না।
সর্বশেষ আইপিএল মৌসুমে মোট ছক্কাই হয়েছে ১২৬০টি, যেখানে বিপিএলে এখন পর্যন্ত ২০ ম্যাচে ছক্কা হয়েছে ৩৪২টি। বাকি আছে ২৬টি ম্যাচ, সেখানে ধরে নিন আরও ৪০০ ছক্কাই হবে। তাতেও আইপিএল থেকে বেশ দূরেই থাকবে।এবারের বিপিএলের কথা ধরুন। ৭ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৭টি। বোলিং দিয়ে ম্যাচ জিতিয়েছেন, এমন কোনো উদাহরণ নেই। ঢাকার বোলিং আক্রমণ এমনিতেই ভয়ংকর কিছু নয়, এরপর যদিও মোস্তাফিজও অসাধারণ কিছু না করতে পারেন, তাহলে ঢাকা জিতবে কী করে! বিপিএলের মতো মানের দিক থেকে পিছিয়ে থাকা টুর্নামেন্টেও মোস্তাফিজ চমক দিতে পারছেন না। অন্য লিগে কীভাবে পারবেন?
বলতে পারেন, এবারের বিপিএলে রান উৎসব হচ্ছে। বোলারদের জন্য উইকেটে কিছুই নেই। তাতে পাল্টা প্রশ্ন আসবে, কোন টি-টোয়েন্টি লিগে বোলারদের জন্য উইকেটে বাড়তি সহায়তা থাকে?
আরও পড়ুনভারত–পাকিস্তান দ্বৈরথ নিয়ে নেটফ্লিক্সের তথ্যচিত্র: ‘এর মতো কোনো কিছু হতেই পারে না’৩ ঘণ্টা আগেসর্বশেষ আইপিএল মৌসুমে মোট ছক্কাই হয়েছে ১২৬০টি, যেখানে বিপিএলে এখন পর্যন্ত ২০ ম্যাচে ছক্কা হয়েছে ৩৪২টি। বাকি আছে ২৬টি ম্যাচ, সেখানে ধরে নিন আরও ৪০০ ছক্কাই হবে। তাতেও আইপিএল থেকে বেশ দূরেই থাকবে। আইপিএলে ব্যাটসম্যানদের সমন্বিত স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫০.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এবার রিশাদের ২ উইকেট ও ২ রান, রান উৎসবের ম্যাচে হেরে গেল লাহোর
পিএসএলে নিজের প্রথম দুই ম্যাচে তিনটি–তিনটি করে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন রিশাদ হোসেন। তাঁর দারুণ বোলিং লাহোর কালান্দার্সকে জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছিল। আজও ২ উইকেট পেয়েছেন বাংলাদেশের লেগ স্পিন অলরাউন্ডার। তবে ছিলেন বেশ খরুচে; ৪ ওভারে দিয়েছেন ৪৫ রান।
অবশ্য শুধু রিশাদ কেন, রান উৎসবের ম্যাচে বেশিরভাগ বোলারই আজ কঠিন সময় পার করেছেন। তবে ম্যাচ শেষে হাসিমুখে মাঠ ছেড়েছে মুলতান সুলতানস। রিশাদের লাহোরকে তারা হারিয়েছে ৩৩ রানে।
এবারের পিএসএলে নিজেদের মাঠ মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এটিই মুলতানের প্রথম ম্যাচ। নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচ হারা দলটি এ রাতেই পেল প্রথম জয়।
ওপেনার ইয়াসির খানের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে (৬টি করে চার ও ছক্কায় ৪৪ বলে ৮৭) ২২৮ রানের পাহাড় গড়েছিল মুলতান। জবাবে লাহোর ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৫ রানে থামে। ৩৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে লাহোরকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছেন উবাইদ শাহ। মুলতানের পেসার উবাইদের আরেক পরিচয় পাকিস্তান জাতীয় দলের ফাস্ট বোলার নাসিম শাহর ছোট ভাই।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৭৯ রান তুলে ফেলেছিল মুলতান, যা এবারের পিএসএলে পাওয়ারপ্লেতে দলীয় সর্বোচ্চ। সপ্তম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে আসেন রিশাদ, দেন ১০ ওভার। ১২তম ওভারে আবার বোলিংয়ে ফিরে দেন ১২ রান।
তবে নিজের শেষ দুই ওভারে ২ উইকেট নেন রিশাদ। এই দুই ওভারে আরও ২৩ রান দিলেও আউট করেন উসমান খান আর অ্যাস্টন টার্নারকে। এরপরও মুলতানের রানের লাগাম টানা সম্ভব হয়নি। হারিস রউফ ও শাহিন আফ্রিদি আজ দেদারসে রান বিলিয়েছেন। শেষ দিকে ইফতিখার আহমেদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২২৮ রান করে ফেলে স্বাগতিকেরা।
কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লেতে দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও ফখর জামানের উইকেট হারায় লাহোর কালান্দার্স। দলীয় ৮৭ রানের মধ্যে হারায় প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে।
এরপরেই ব্যাটিংয়ে নামেন রিশাদ। আগের দুই ম্যাচে আটে ও সাতে নামা এই অলরাউন্ডার আজ আরও এক ধাপ ওপরে উঠে এসে ব্যাট করলেও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। ২ বলে ২ রান করে লেগ স্পিনার উসামা মিরের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন।
তবু লাহোরের জয়ের কিঞ্চিৎ আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন স্যাম বিলিংস ও সিকান্দার রাজা। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। দুজনের ঝোড়ো ব্যাটিং শুধু লাহোরের হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। রিশাদদের পরের ম্যাচ বৃহস্পতিবার বাবর আজমের পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরমুলতান সুলতানস: ২০ ওভারে ২২৮/৫ (ইয়াসির ৮৭, ইফতিখার ৪০*, উসমান ৩৯, রিজওয়ান ৩২; রিশাদ ২/৪৫, রাজা ১/১৫, আসিফ ১/২৬, আফ্রিদি ১/৪৩)।
লাহোর কালান্দার্স: ২০ ওভারে ১৯৫/৯ (রাজা ৫০*, বিলিংস ৪৩, ফখর ৩২; উবাইদ ৩/৩৭, ব্রেসওয়েল ২/২০, উসামা ২/২৬)।
ফল: মুলতান সুলতানস ৩৩ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইয়াসির খান।